ভ্রমণ: জাফরপুর।
16 comments
শুভেচ্ছা সবাইকে ।
প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা,এই গরমে কেমন আছেন? আশাকরি সবাই ভালো আছেন!আমিও ভালো আছি । প্রত্যাশা করি সব সময় ভালো থাকুন।
নতুন করে ৭২ ঘন্টার রেড এলার্ট জারি করেছে আবহাওয়া দপ্তর। এই মাঝেই আজ আবহাওয়া দপ্তর আশার বাণী শুনিয়েছেন, আগামীকাল সন্ধ্যার পর থেকে তাপমাত্রা কমতে পারে। আবহাওয়া দপ্তরের এই বাণী যেন সত্যি হয়। ঈদে গ্রামের বাড়িতে এসেছি অনেকেই জানেন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামীকাল ঢাকায় পৌঁছাবো। তবে আজ সকালেই গ্রামের বাড়ি থেকে বিদায় নিয়ে এসেছি। এখন জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার জাফরপুরে বসে এই ব্লগ লিখছি।হ্যাঁ বন্ধুরা, পার্বতীপুর থেকে জাফরপুরে আসা নিয়েই আমার আজকের ব্লগ।
তীব্র গরমের কারণে বেশ কয়েকটি জায়গায় যাওয়ার প্রোগ্রাম ক্যানসেল করেছি। কিন্তু জাফরপুরে আসার প্রোগ্রামটা হুট করে নেওয়া। সেটা আমার দেবর-জায়ের জেদাজেদিতে। আমার দেবর জাফরপুর শাখা ব্র্যাকের ব্যবস্থাপক।ওর কারণেই এখানে আসা।সকাল থেকেই প্রচন্ড রোদ। রোদের মধ্যেই গ্রামের বাড়ি থেকে পার্বতীপুরে এসে পৌঁছি সকাল ১০.৩০টায়। ট্রেনের সময় ছিল ১০.৪৫ মিনিট।পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসা ঢাকা অভিমুখী দূতযান ট্রেন যথাসময়ে আসলেও ১৫ মিনিট লেটে ছাড়ে। পার্বতীপুর থেকে আমাদের গন্তব্য আক্কেলপুর। হুট করে সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এসি টিকেট ম্যানেজ সম্ভব হয়নি। যাত্রা ননএসিতে। প্রচুর ভীড় ছিল ট্রেনে।আমার মত ঈদ করতে আসা লেট-ফেরত মানুষ যে আরো আছে তা ষ্টেশনে এসে ও ট্রেনে উঠে বুঝতে পারলাম।ট্রেনে প্রচুর স্টান্ডিং মানুষ ছিল। ট্রেনের টিকেট কালেক্টর জানালেন, গতকালের তুলনায় আজ ভীড় অনেক কম।আর দু-এক দিনের মধ্যেই স্বাভাবিক হয়ে যাবে ট্রেনে যাত্রী চাপ।নন-এসি যাত্রাতে একটি সমস্যা হকার,ভিক্ষক আর স্টান্ডিং যাত্রি পাশের সহ যাত্রির মন্তব্য। তিনি আরো বললেন, শীতে গাদাগাদি করে জার্নি করা যায় কিন্তু গরমে অসহ্য। কথা আসলে ঠিক। ট্রেনে একটি বিষয় লক্ষ্য করলাম, আগে স্ট্যান্ডিং যাত্রিদের অধিকাংশই বিনা টিকেটের যাত্রি ছিল।এখন চিত্র ভিন্ন। বরং অধিকাংশ স্ট্যান্ডিং যাত্রির হাতেই দেখলাম টিকেট। দেখে খুব ভালো লাগলো। আমরা যে দিন দিন সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি এটা একটা ইন্ডিকেটর। তবে আশাহত বিষয় হচ্ছে যাত্রিসেবার মান নিম্নমুখী। ট্রেনের বগিতে ভাঙ্গা সিট,অপরিচ্ছন্ন ওয়াশরুম ইত্যাদি। তার উপর, মরার উপর খাড়ার ঘাঁ, আমাদের বাহাদুর রেল কর্তৃপক্ষ আগামীকাল ৪ মে থেকে রেলের অতিরিক্ত ভাড়া নির্ধারণ করেছেন!!
বন্ধুরা, শো শো আওয়াজ করে ট্রেন ছুটে চলছে আমার গন্তব্যের দিক। জানালা দিয়ে চোখ জুড়িয়ে দেখছি বাংলার প্রাণ -প্রকৃতি। চোখ যতদুর যায় ধান গাছের দোল।সবুজ আর সবুজ। আমার সোনা ফলা দেশ। দেখতে দেখতেই গন্তব্যের কাছাকাছি চলে আসি।দূরত্ব বেশি না হওয়ায় দুপুর ১২.৪৫ মিনিটে জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর রেল ষ্টেশনে নেমে পড়ি। ষ্টেশনে নেমে কথা বলে ভালোভাবে লোকেশন জেনে নিয়ে অটো রিজার্ভ নিয়ে গন্তব্যের দিকে জাফরপুর।
আক্কেলপুর রেল ষ্টেশন থেকে জাফরপুরের দূরত্ব ১০ কিলোমিটারের মত। আর হ্যাঁ জাফরপুরও কিন্তু একটি রেল ষ্টেশন, সেখানে মেইল বা লোকাল দু-তিনটে ট্রেন থামে শুললাম, অটো ড্রাইভার মারফত। অটো চলছে জাফরপুরের উদ্দেশ্যে।রাস্তা চিকন কিন্ত পাকা।ড্রাইভার বলল জাফরপুরে যাওয়ার আর একটা রুট আছে সে রাস্তাটা বড়। কিন্তু একটু দূরত্ব বেশি। তাই শর্টকাট আসা। তবে শর্টকাট রাস্তায় এসে একটা নদীর দেখা পাই।নদী পারাপারের ব্রিজে উঠে অটো থামিয়ে নদীর ছবি তুলি! তুলশীগঙ্গা নদী। দেখলাম নদীর পানিতে ছেলেরা গোসল করছে। নদীটি অনেক গভীর হওয়ায় তলানিতে পানি আছে।আমাদের দেশের নদী গুলোও বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। মরা নদী হয়ে যাচ্ছে। অথচ আমাদের দেশ নদীমাতৃক বাংলাদেশ। দুপুর ১.৩০ মিনিটে অটো এসে পৌঁছে জাফরপুর স্টান্ডে। স্টান্ডের সাথেই দেবরের বাসা। বাসার গেটে আমাদের জন্য অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছে।
পোস্ট বিবরণ
পোস্ট | ভ্রমণ |
---|---|
পোস্ট তৈরি | selina 75 |
ডিভাইস | Redmi Note 5A |
তারিখ | ২৩ শে এপ্রিল ,২০২৪ইং |
আমার পরিচয়
আমি সেলিনা আখতার শেলী। বর্তমানে গৃহিনী। জন্মসূত্রে বাংলাদেশী। জন্ম,বেড়ে ওঠা চট্রগ্রাম শহরে। চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স-মাস্টার্স। দীর্ঘ দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার রক্ষায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি।স্বামীর বাড়ী দিনাজপুরে,বর্তমানে ঢাকায় থাকি।ঘুরে বেড়ানো,বই পড়া,অজানাকে জানা,নিত্য নতুন রান্না ও বিভিন্ন ধরণের হাতের কাজ করা আমার শখ।দেশাত্ববোধ,দেশীয় শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতি আমার অন্যতম ভালো লাগা।এদেশে জন্মগ্রহণ করে আমি গর্বিত।
Comments