কালী পূজা। পর্ব:- ১৮
1 comment
কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
আমরা বারাসাতে কালী মায়ের প্যান্ডেল দেখতে দেখতে এবার প্রায় হাঁপিয়ে ওঠার মত অবস্থা হয়ে গেছে। কিন্তু বারাসাতে এত সুন্দর কালী মায়ের প্যান্ডেল করেছে যে না দেখে বাড়ি ফিরে যাব সেটাও ইচ্ছা করছে না। কারণ পরে যখন ফোনে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখব সুন্দর সুন্দর কালী মায়ের প্যান্ডেল। তখন মনে হবে যে একটু ধৈর্য ধরে এই প্যান্ডেল কটা দেখে আসলে ভালো হতো। তাই ধৈর্য না হারিয়ে যতক্ষণ শরীর পুরোপুরি ক্লান্ত না হয়ে ওঠে ততক্ষণ ভাবছি কালী মায়ের প্যান্ডেল দেখতে থাকব। তাই সুন্দর এই আলোময় রাস্তা ধরে আমরা সামনের দিকে হেটে চলেছি। একটু হাঁটাহাঁটি করতে আমি দেখতে পেলাম সুন্দর কতগুলি গলার কানের সেট একটা দোকানে সুন্দর করে সাজিয়ে রেখেছে। আসলে এটি দোকান নয় রাস্তার পাশে একটি জায়গায় রাস্তার ওপরেই বড় পলিথিন পাতিয়ে তার উপরে সুন্দর করে সাজিয়ে রেখেছে। অনেক সুন্দর সুন্দর কানের গলার সেট রয়েছে এখানে। দেখে যদিও পছন্দ হচ্ছিল কিন্তু নিতে ইচ্ছা করছিল না সেই জন্য আমরা সামনের দিকে এগিয়ে গেলাম প্যান্ডেল দেখার উদ্দেশ্যে।
সামনে একটু এগিয়ে দেখি সুন্দর একটি প্যান্ডেল করেছে। এই প্যান্ডেলটি করা হয় বড় একটি পুকুরের পাড় ঘেঁষে। তাই যখন তখন এই প্যান্ডেলটি ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। আগের বছর যখন এই প্যান্ডেলটি দেখতে আসবো বলে ভেবেছিলাম, তখন জানতে পারলাম যে আগের বছর এখানকার প্যান্ডেলটি পুকুরের মধ্যেই ভেঙে পড়ে গেছিল। তবে শুনেছি আগের বছরও এখানকার প্যান্ডেলটি অনেক সুন্দর করে করেছিল। যদিও সেটা দেখার সৌভাগ্য আমার হয়নি তাই এ বছর এই প্যান্ডেলটি দেখতে পারছি সেই জন্য মনে মনে খুবই আনন্দ হচ্ছিল। পুকুরের এপার থেকেই দেখতে অনেক সুন্দর লাগছিল এই প্যান্ডেলটি। আস্তে আস্তে আমরা লাইন ধরে সামনের দিকে এগিয়ে গেলাম। যে রাস্তা ধরে আমরা প্যান্ডেলে ঢোকার জন্য এগোচ্ছিলাম সেই রাস্তাটির মাথার ওপরে সুন্দর লাইটিং করে চারিদিকটা আলোকিত করা রয়েছে। খানিকটা হাঁটতে হাঁটতে এগোতেই লাইটিং টাও শেষ হয়ে গেল এবার আমরা কিছুটা অন্ধকার রাস্তায় প্রবেশ করলাম। তবে এই অন্ধকার রাস্তায় প্রবেশ করা মাত্রই দেখতে পেলাম প্যান্ডেলের সূচনা হয়েছে।
প্রবেশ পথের বাঁদিকেই দেখা যাচ্ছে একটি হাঙ্গর কতগুলি ছোট ছোট মাছ খেয়ে নিচ্ছে। মাথার উপরে একটি লাল রঙের কাপড় কুচি করে ঝুলানো রয়েছে। আরো একটু সামনে এগিয়ে দেখলাম ওপরে দুটি চেয়ার রাখা রয়েছে। এত উপরে দুটো চেয়ারে কে বসবে সেটাই চিন্তা করতে করতে সামনের দিকে এগিয়ে দেখলাম, মাথার উপরে অনেকগুলি ঘন্টা ঝুলছে। এবং তার নিচে রাস্তার দু'পাশে অনেকগুলি কাঠের টুকরো বাধা আছে। কাঠের টুকরো বাঁধায় দেখতে খুব ভালো লাগছে কিন্তু বুঝতে পারলাম না এটা কিসের ইঙ্গিত করা হলো। বেশি বোঝার চেষ্টা না করে সামনের দিকে এগিয়ে গেলাম। এখানে দেখতে পাচ্ছি অনেকগুলি মই রয়েছে। কিছু মানুষ সেই মই দিয়ে ওপরে ওঠার চেষ্টা করছে এবং তার চারপাশে অনেকগুলি লুডুর ছক এবং চেয়ার বাধা আছে। অপরদিকে আবার দেখতে পাচ্ছি সাপ লুডুর ছক করা রয়েছে। আর সেই ছকের ওপর আবার একটি মানুষের পুতুল। আসলে এখানে মানুষগুলো সুন্দর করে করেছে ঠিক টেডি বিয়ার এর মত পুতুল করে।
সামনে দেখতে পাচ্ছি একটি মস্ত বড় চেয়ার যেটি আমাদের মাথা একদম উঁচু করে দেখতে হচ্ছে। আর তার নিচে ফুল দিয়ে সাজানো। আর এখানেও চারিপাশে দেখা যাচ্ছে লুডু, সাপলুডু, আর দাবার ছক রয়েছে। এছাড়াও অনেকগুলি মই আর চেয়ারও আছে। এই বড় চেয়ারের নিচ দিয়ে ঢুকেই দেখতে পেলাম কালী মায়ের প্রতিমা। এখানে কালী মায়ের প্রতিমাটি অনেক সুন্দর করে মিষ্টি মুখমন্ডল করেছে। আর মাথার ওপর থেকে দুপাশে গোল করে ফুল দিয়ে কারুকার্য করা হয়েছে। এবং তার ওপরে ছাদের দিকে কালী মায়ের ঠিক মাথার উপরে মায়ের অসংখ্য মুখমণ্ডল দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। এখানে মায়ের পাশে আরো অনেক দেবদেবীকে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। কালী মাকে প্রণাম জানিয়ে আমরা প্যান্ডেল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য এগিয়ে গেলাম। বেরোনোর রাস্তাতেও দেখতে পাওয়া যাচ্ছে মায়ের একটি বড় মুখমণ্ডল রয়েছে। এবং তার নিচেও অনেকগুলি মই ঝুলছে। আর এই মইতে বেঁধে রয়েছে কয়েকটি চেয়ার। এই প্যান্ডেলটা দেখে মনে হচ্ছে এটি লুডো দাবা খেলাধুলার থিম নিয়ে করা হয়েছে। তবে বেশ ভালই লাগছে প্যান্ডেলটি দেখতে।
ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।
Comments