নাটক রিভিউঃ " চাওয়া থেকে পাওয়া "
16 comments
13-04-2024
৩০ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
🌼আসসালামুআলাইকুম সবাইকে🌼
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন। তো সকলের ঈদ আশা করি ভালোই কেটেছে। দেখতে দেখতে ঈদও চলে গেল! তবে এবার ঈদ উদযাপন একটু ব্যতিক্রম ছিল। যাইহোক, ঈদ উপলক্ষে বেশ কিছু নাটক ইউটিউব এ রিলিজ হয়েছে। আমি কয়েকটি নাটক অবশ্য দেখেছি। আজকে যে নাটকটি শেয়ার করবো তার নাম হচ্ছে চাওয়া থেকে পাওয়া। নাটকের গল্পটি ব্যতিক্রম। আমার কাছে ভালো লেগেছে। আশা করছি আপনাদের কাছেও ভা্ো লাগবে।
নাম | চাওয়া থেকে পাওয়া। |
---|---|
গল্প ও পরিচালনা | কে এম সোহাগ রানা। |
প্রযোজক | সোহাগ তালুকদার। |
অভিনয়ে | তৌসিফ মাহবুব, তাসনিয়া ফারিন, সৌমু চৌধুরী, এবি রুকন, রেশমি আহমেদ সহ আরও অনেকে |
আবহ সংগীত | এমএনইউ রাজু। |
দৈর্ঘ্য | ৪৪ মিনিট ৩০ সেকেন্ড। |
মুক্তির তারিখ | ১০ই এপ্রিল, ২০২৪ ইং |
ধরন | সামাজিক। |
ভাষা | বাংলা |
চরিত্রেঃ
মোবারকঃ
তৌসিফ মাহবুব।সালেহাঃ
তাসনিয়া ফারিন।কাহিনী সারসংক্ষেপ
নাটকের শুরুতে দেখা যায়, সালেহা বসে বসে কান্না করছে। কারণ সে আবার ভার্সিটির এডমিশন দিতে চাই। প্রথমবার এডমিশনে সে ফেইল করেছে। এজন্য তার বাবা তাকে দ্বিতীয়বারের মতো এডমিশনের ফর্ম কেনার টাকা দিতে চাই না। কারণ দরিদ্র পরিবারের মেয়েদের আবার কিসের পড়াশোনা? যেটুকু হয়েছে সেটুকুই যথেষ্ট। সালেহা তার বাবাকে রিকোয়েস্ট করে শেষবারের মতো একটা সুযোগ দেয়ার জন্য। কিন্তু তার বাবা সালেহার জন্য পাত্র দেখেছে। যে পাত্র গার্মেন্টস ওয়ার্কার। ছেলেটা দেখতে শুনতে অনেক ভালো। খুবই নম্র-ভদ্র। সালেহা ভেবে ছিল তার স্নপ্নগুলো আর পূরণ হবে না কখনো! তারপর বিয়ে হয়ে যায় মোবারকের সাথে। বিয়ের প্রথম রাতেই সালেহার কান্না দেখে বুঝতে পারে যে সে তাকে বিয়ে করতে হয়তো রাজি ছিল না। কিন্তু তার ধারণা ভুল ছিল।
সালেহার স্বপ্ন ছিল সে ভার্সিটিতে পড়াশোনা করবে। তার স্বপ্নগুলো বিয়েটা দেয়ার মাধ্যমে শেষ হয়ে গেল! কিন্তু মোবারক তার সদ্য বিবাহিত স্ত্রীকে আবার পড়াশোনা করানোর জন্য রাজি হয়। সে পড়াশোনা করাবে ভালো একটা ভার্সটিতে। তারপর সালেহাকে ভর্তি করায় ভালো একটা ভার্সিটিতে। পড়াশোনার সব খরচ মোবারক বহন করে। ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার পর মোবারক সালেহাকে কোনো কাজই করতে দেয় না। সে কাজ শেষ করে এসে বাসায় রান্না করে। তার কাজ শুধু পড়াশোনা করার। সালেহা খুব খুশি মোবারকের মতো এতো ভালো একজন স্বামী পেয়ে। যদিও সে পড়াশোনা করেনি। এদিকে সালেহাকে ভার্সিটির একজন ইমপ্রেস করার চেষ্টা করে। কিন্তু সালেহা ছেলেটাকে কোনোভাবেই পাত্তা দেয় না।
কিছুদিন পর সালেহা মোবারককে নিয়ে যায় ভার্সিটিতে। ভার্সিটিতে নিয়ে যেতেই সালেহার সব ফ্রেন্ডরা এসে হাজির! মোবারক সালেহাকে বলেছিল, সে যেন তার আসল পরিচয় না দেয়। যদি ফ্রেন্ডরা কিছু মনে করে। কিন্তু সালেহা ফ্রেন্ডদের কাছে তার আসল পরিচয়ই দেয়। তার স্বামী মোবারক, সে একজন গার্মেন্টস ওয়ার্কার! আসলে সালেহা এমন স্বামীকে পেয়ে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করে। সালেহার ফ্রেন্ডরা সবাই খুব খুশি হয় সালেহার মতো একজন ফ্রেন্ড পেয়ে। এদিকে মোবারক যেখানে কাজ করে তার সহকর্মী তাকে পরামর্শ দেয় শুধু শুধু কেন তার বউকে টাকা খরচ করে পড়াশোনা করাচ্ছে? কিন্তু মোবারক তার বউকে শিক্ষিত বানিয়ে ছাড়বে। কারণ সে জানে শিক্ষিত একজন মা হলে তার সন্তানও শিক্ষিতও হবে। এ নিয়ে অবশ্য মোবারকের সহকর্নী হাসাহাসি করে।
কিছুদিন পর সালেহার সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা। কিন্তু সেমিস্টার ফি এখনও বাকি। সেমিস্টার ফি বিরাশি হাজার টাকা। কিন্তু এতো টাকা মোবারক কোথা থেকে পাবে? তখন মোবারক তার দেহের একটা কিডনি বিক্রি করে দেয়! আর সে টাকা দিয়ে সালেহার সেমিস্টার ফি এর টাকা পরিশোধ করে। কিন্তু সালেহা জানতে পেরে যায় যে, সে কিডনী বিক্রি করে তার জন্য টাকা জোগাড় করেছে। মোবারক শুধু চেয়েছিল সালেহা পাশ করেছে কি না! আর সালেহা ভার্সিটিতে টপার হয়ে সিজিপিএ-৪.০০ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। আর সেটা শুনে মোবারক ভীষণ খুশি হয়। তারপর কি হয়েছিল জানতে হলে নাটকটি দেখতে হবে।
ব্যক্তিগত মতামত
নাটকটি আমাদের বর্তমান সমাজের জন্য একটা মেসেজ হতে পারে। কারণ সমাজে বেশ কিছু বাস্তব চিত্র এখানে স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে। প্রথমত, নারীদের শিক্ষাটাকে এখনও অনেকেই শুরুত্বের চোখে দেখে না। নারীদের শখ, স্বপ্ন থাকতে নেই! শুধু স্বামীর সংসার করবে! বিশেষ করে গ্রামের দিকে এ দিকগুলো বেশি লক্ষ্য করা যায়। সমাজে মোবারক সাহেবের মতো সাপোর্টিভ স্বামীর বড্ড অভাব। কারণ নিজের টাকা খরচ করে বউকে পড়াশোনা করানো এমন ঘটনা সমাজে কম দেখা যায়। সবচেয়ে ভালো লাগার বিষয় হলো, স্বামী পড়াশোনা না করুক, গার্মেন্টস শ্রমিক হোক এটা কোনো ব্যাপার না। বড় কথা হলো তার স্বামী। সবদিক মিলিয়ে নাটকটি আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে।
ব্যক্তিগত রেটিং
৯.৮/১০
নাটকটির লিংক
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। সম্প্রতি আমি ইলেকট্রিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। এখন বিএসসি এর জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত দু বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। যাক,
নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Comments