চাটমোহর ফায়ার স্টেশনে শীতের প্রথম মহড়া।
5 comments
🌿আমি মোঃ আশিকুর রহমান। আমি বাংলাদেশ 🇧🇩 থেকে বলছি। আমার স্টিমিট আইডির নাম @ayaan001।
কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি। শীতের আমেজ পুরোদমে চলে এসেছে। শীত কাল মানেই অন্য রকম একটা ভালো লাগা। কারন শীতের সময় নানা রকম পিঠা পুলি আর ঘোরাঘুরির উত্তম সময়। এই সময় মানুষ আনন্দ এর মধ্যে মানুষ সময় পার করে। কিন্তু সবার জন্যই আবার সুখকর নয়। অনেক মানুষ আছে যারা অনেক কষ্টে দিন পার করে।
যাই হোক এবার কাজের কথায় আসা যাক আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি জেনারেল রাইটিং পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। কম বেশি সবাই হয়তো জানেন যে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেবা মূলক কাজ করে থাকে। তাই আমাদের অগ্নি নির্বাপন ও উদ্ধার কাজ ছড়াও আরও কিছু কাজ আছে। যেমন টপোগ্রাফি, গন সংযোগ ও মহড়া। মাসে ৩ থেকে ৪ টা আমাদেরকে টপোগ্রাফি, গণসংযোগ ও মহড়া করতে হয়। গতকাল শনিবার গিয়েছিলাম একটি মহড়া করতে। আমারা আমাদের রুটিনের সময় অর্থাৎ ১০টা ১০ মিনিটের সময় আমাদের কন্টোলে ১ম কল গাড়ি আউট করে বের হয়ে পারলাম মহড়ার উদ্দেশ্যে। আমারা বের হলাম গুয়াখরা নামক একটি স্থানের উদ্দেশ্য। আমারা একেক দিন একেক জায়গায় গিয়ে মহড়া, গনসংযোগ ও টপোগ্রাফি করি। যাতে করে আমারা একটি নির্দিষ্ট থানার সকল জায়গার সম্পর্কে অবগত থাকতে পারি।
আমাদের মহড়ার প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র গাড়িতে উঠে আমরা বের হয়ে গেলাম মহড়ার উদ্দেশ্যে আমাদের স্টেশন থেকে আমাদের কাঙ্খিত জায়গাটা যেতে সর্বোচ্চ ১০ মিনিট সময় লাগে। সেখানে গিয়ে আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গাড়ি থেকে দ্রুত নামিয়ে রাখি এবং গুয়াখরা বাজারের সকল মানুষকে আমরা ডেকে নিয়ে এসে এক জায়গায় জড়ো করি। সবথেকে বেশি খারাপ লাগে যখন আমরা সচেতন করার জন্য ডাক দেই তখন মানুষের সাড়া না পাওয়াটা। অনেকে মনে করে আমরা শুধু শুধু এই ধরনের কাজগুলা করে বেড়ায়। আসলে এর তো তখনই বুঝতে পারে যখন তারা অগ্নিসংযোগ /দুর্ঘটনায় পতিত হয়।
যাইহোক বেশ কিছুক্ষণ ধরে ডাকাডাকি করার পর সেখানেও কিছু মানুষ একসাথে জড়ো হল। এরপর আমরা আমাদের কার্যক্রম শুরু করে দেই। পাশে একটি টিউবওয়েল থেকে আমরা ড্রামে পানি ভর্তি করি। এরপর পানির ভেতরে পেট্রোল এবং অকটেন তেল মিশিয়ে পানির উপরে আগুন ধরায় এবং যেভাবে সেটাকে নির্বাপন করতে হয় সেটা সবার মাঝে উপস্থাপন করি। এবং কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যা আমরা মুখে বলে দেয়। এরপর আমরা স্থানীয় কিছু লোক নিয়ে তাদেরকেও এই প্রশিক্ষণটা হাতে-কলমে করানোর চেষ্টা করি। যদিও স্থানীয় লোকরা আগুনকে অনেক ভয় পায় তার আগুনে কাছে যেতে চাইনা।
কিন্তু তারা একটা বুঝতে চায় না যে যখন তাদের বসতবাড়ি বা অন্য কোন জায়গায় আগুন ধরবে তখন কি করবে। তখন তো আগুনকে ভয় পেলে চলবে না। মাথা ঠান্ডা রেখে আমাদেরকে সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা যদি বেশি তাড়াহুড়া না করে ঠান্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ করতে পারি তাহলে খুব সহজে আমরা অগ্নি নির্বাপন করতে পারি। আগুন নিভানোর বিষয় কিভাবে আগুন নেভানো সম্ভব সেই বিষয়গুলো যদি আমরা ভালোভাবে আয়ত্ত করতে পারি তাহলে আমরা বড় বড় বিপদ থেকে বেঁচে যেতে পারবো।
গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা.....
১/ আমাদের প্রথমে মনে রাখতে হবে অগ্নিকান্ড এর মূল কারণ হলো অসচেতনতা। তাই আমাদের সবসময় সচেতন থাকতে হবে।
২/ রান্নার পরে চুলার আগুন, গ্যাসে রান্না করার পর রান্না ঘরের জানালা আটকে না দেওয়া, ৬ মাস অন্তর অন্তর ঘরে বৈদ্যুতিক লাইন পরীক্ষা করা সহ বাচ্চারা যাতে আগুন নিয়ে খেলাধুলা করতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক থাকা। তাছাড়া বিড়ি সিগারেট আগুন যেখানে সেখানে না ফেলা, সিগারেটের বাড়তি অংশ একটি নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে পা দিয়ে আগুন দিয়ে দেয়া।
৩/ যদি বিদ্যুতের আগুন হয় তাহলে পানি ব্যবহার করার পূর্বে অবশ্যই বৈদ্যুতিক লাইন বন্ধ করে দেওয়া।
৪/ যদি রান্না ঘরের গ্যাসের আগুন হয়ে থাকে তাহলে সিলিন্ডারের আগুন নির্বাপন করতে হলে ভেজা কাঁথা, কম্বল অথবা পাটের বস্তা ভিজিয়ে সিলিন্ডার উপরে ছুঁড়ে দিয়ে আগুন নির্বাপন করার চেষ্টা করতে হবে।
৫/ সর্বশেষ যে কথাটা মাথায় রাখতে হবে সেটা হল এখনই তাড়াহুড়া করা যাবে না যদি আগুন ছোট হয় তাহলে নিজেই নির্বাচন করার চেষ্টা করতে হবে আর যদি মনে হয় না নিজেদের দ্বারা আগুন নেভানো সম্ভব না সে ক্ষেত্রে দ্রুত স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসকে কল করা।
সমাপ্ত
পোস্টের বিষয় | জেনারেল রাইটিং। |
---|---|
পোস্টকারী | মোঃ আশিকুর রহমান |
ডিভাইস | গ্যালাক্সি এ ১৫ |
লোকেশন | পাবনা |
Comments