বাংলা সিনেমা: একাল ও সেকাল
4 comments
নমস্কার বন্ধুরা,
আশা করি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন।আজ আমি বাংলা সিনেমার একাল আর সেকাল নিয়ে আলোচনা করবো।সিনেমা কে একটা সমাজের আয়না বললে খুব একটা ভুল বলা হবে না।কারণ সমাজের নানা ঘটনা আর পারিপার্শ্বিক দিক গুলো সিনেমায় স্থান পায়।
বাংলা সিনেমার যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯১৯ সালে হীরালাল সেনের হাত ধরে।এরপর ১৯৩১ সালে নির্মিত হয় প্রথম সবাক বাংলা সিনেমা "জামাই ষষ্ঠী" যা বাংলা চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য এক নতুন যুগের সূচনা করে।সেই সেকালের সিনেমা ছিল সাহিত্যের গভীরতা, বাস্তববাদ এবং সমাজের চিত্রকে তুলে ধরার জন্য পরিচিত।আর্ট ফিল্ম ও মেইনস্ট্রিম ফিল্মের সমন্বয়ে বাংলা সিনেমা ধীরে ধীরে ভারতীয় চলচ্চিত্রের একটি শক্তিশালী শাখায় পরিণত হয়।
সেকালের বাংলা সিনেমা
সেকালের বাংলা সিনেমা অনেকাংশে সাহিত্যের উপর ভিত্তি করে নির্মিত হত।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এবং বঙ্কিমচন্দ্রের সাহিত্যকে চলচ্চিত্রে রূপ দেওয়া হত।সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটক এবং মৃণাল সেনের মতো কিংবদন্তি পরিচালকেরা বাংলা সিনেমাকে আন্তর্জাতিক মানচিত্রে নিয়ে যান।
উল্লেখযোগ্য সেকালের চলচ্চিত্র:
- "পথের পাঁচালী" (১৯৫৫): সত্যজিৎ রায় পরিচালিত মাস্টারপিস।
- "মেঘে ঢাকা তারা" (১৯৬০): ঋত্বিক ঘটকের অন্যতম সেরা কাজ।
- "ভুবন সোম" (১৯৬৯): সামাজিক বাস্তববাদকে কেন্দ্র করে নির্মিত।
সেকালের সিনেমাগুলি সাধারণত পরিবারের বন্ধন, সামাজিক সংকট এবং নৈতিক শিক্ষাকে গুরুত্ব দিত। প্রযুক্তি সীমিত হলেও গল্প বলার ক্ষমতা ছিল অসাধারণ।
একালের বাংলা সিনেমা
একালের বাংলা সিনেমা প্রযুক্তির প্রভাব, আধুনিক গল্পের বৈচিত্র্য এবং আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটকে মাথায় রেখে তৈরি হচ্ছে।
বৈশিষ্ট্য:
- আধুনিক সিনেমার গল্পে শহুরে জীবন, রোমান্স, থ্রিলার এবং সামাজিক চ্যালেঞ্জ উঠে আসছে।
- ভিজ্যুয়াল এফেক্ট, উন্নত ক্যামেরার ব্যবহার এবং ডিজিটাল ফরম্যাট সিনেমাকে নতুন রূপ দিয়েছে।
- একালের পরিচালকেরা সাহসী বিষয়বস্তু নিয়ে কাজ করছেন যেমন "জীবনধারা", "প্রান্তিক জনগোষ্ঠী", এবং "নারী ক্ষমতায়ন"।
উল্লেখযোগ্য একালের সিনেমা:
- "জাতিস্মর" (২০১৪): অতীত ও বর্তমানের সংযোগ।
- "বাইশে শ্রাবণ" (২০১১): থ্রিলার ও রহস্যের যুগান্তকারী কাজ।
- "অপরাজিতা তুমি" (২০১২): আধুনিক প্রেমের গল্প।
সেকালের সিনেমা বেশি সাহিত্যিক এবং বাস্তববাদী হলেও একালের সিনেমা আধুনিক প্রযুক্তি এবং গ্লোবালাইজেশনের প্রভাব বেশি। তবে, গল্প বলার গভীরতা এবং আবেগ প্রকাশের দিক থেকে সেকালের সিনেমাগুলি অনেক বেশি স্মরণীয়।বাংলা সিনেমা একাল এবং সেকালের মধ্যে পরিবর্তন এসেছে কিন্তু এর মূল উদ্দেশ্য গল্প বলা এবং সমাজকে প্রভাবিত করা এখনো একই। সেকালের সিনেমা আমাদের সংস্কৃতির ভিত্তি তৈরি করেছে আর একালের সিনেমা সেই ভিত্তিকে আধুনিক যুগে নিয়ে যাচ্ছে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Comments