নাটক রিভিউ || হাড় কিপটে || ৬৩ তম পর্ব
14 comments
আজ - সোমবার
হাই! বন্ধুরা
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি অনেক অনেক ভাল আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হলাম হাড় কিপটি নাটকের ১০৫ পর্বের মধ্য থেকে ৬৩ তম পর্ব রিভিউ করে শেয়ার করার জন্য। আশা করি আমার এই রিভিউ পোস্ট আপনাদের অনেক অনেক ভালো লাগবে।
নাম | হাড় কিপটে |
---|---|
রচনা | বৃন্দাবন দাস |
পরিচালক | সালাউদ্দিন লাভলু |
অভিনয়ে | আমিরুল হক চৌধুরী, চঞ্চল চৌধুরী, বৃন্দাবন দাস, মোশাররফ করিম, আ খ ম হাসান, শামীম জামান, শাহনাজ খুশি সহ আরো অনেকে। |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | আঞ্চলিক বাংলা |
ধরণ | কমেডি,ড্রামা |
পর্বের সংখ্যা | ১০৫ |
রিভিউ | ৬৩ তম পর্ব |
দৈর্ঘ্য | ১৮ মিনিট |
প্ল্যাটফর্ম | ইউটিউব @cdchoicedrama চ্যানেল |
চরিত্রেঃ
- মোশাররফ করিম (গোল্লা)
- আমিরুল হক চৌধুরীর (নজর আলী)
- চঞ্চল চৌধুরী (বহর আলী)
- বৃন্দাবন দাস (ভূপেন) সহ আরো অনেকে
অনেক প্রচেষ্টার পর নজর আলী কৃপণের বড় ছেলের বিয়ের একটা পর্যায়ে এসেছে। গোল্লার সহযোগিতায় বিয়ে হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ গোল্লা মায়ের জমি জায়গার ভাগ নেওয়ার জন্য মামার সাথে উঠে পড়ে লেগেছে। তাই খুবই অসন্তুষ্ট হয়েছে মামাতো বড় ভাই। বাবা তো বিয়ে দিবেই না। পরের বাড়ির মেয়ে, তাদের বাড়িতে এনে খাওয়ানোর ইচ্ছা নেই। যদিও কোনভাবে সুযোগ তৈরি করে নিয়েছে গোল্লার মাধ্যমে। কিন্তু এখন সেই গোল্লায় যেন বাড়িতে ভেজাল সৃষ্টি করে তাদের বিয়েটা থামিয়ে দেওয়ার পর্যায় এনে দিয়েছে। কিন্তু ফজরের এমন বক্তব্য চুমকির কাছে মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। সে ফুফাতো ভাই হয়ে তাকে সহযোগিতা করতে পারছে। ফজর নিজে কেন নিজের বিয়ের পর্যায়ে তৈরি করতে পারছে না।
এদিকে নজর আলী কৃপণ আর তার মেজো ছেলে বহর কৃপণ গোল্লার সাথে ঝগড়াঝাঁটি করে বেশ ঝামেলায় পড়ে গেছে। অলরেডি গোল্লা একটি ঘর দখল করে ফেলেছে। সে সেই ঘরটাতে তালার বদ্ধ করা শুরু করেছে। গোল্লা আরো হুমকি দিয়েছে, তার দখল করা ঘরে যদি কেউ তালা ভাঙ্গে তাহলে সারা বাড়িতে তালা লাগিয়ে দিবে। নজর আলী গোল্লার এমন শাসন দেখে এক প্রকার অসুস্থ হয়ে পড়েছে। বাবার অসুস্থতা আর কষ্ট দেখে মেজো ছেলে বহর কৃপণ তার মাকে মিশ্রির শরবত এনে দিতে বলে। কিন্তু কমলা বানু মেজো ছেলেকে এটাই বোঝায় তার বাবা কখনো মিশ্রি কিনে এনেছে। আর এই নিয়ে একটি পর্যায়ে মায়ের সাথে কথা ও তর্ক হয়। অবশেষে এক গ্লাস জল এনে দেওয়া হয়। কৃপণ মনে করেছিল তার টিপ কলটাও না জানিয়ে দখল করে নাই গোল্লা। একটি পর্যায়ে তাদের এই দুর্ভোগের জন্য বাপ ছেলে কান্না শুরু করে।
এদিকে বন্ধুর বিপদে হারাধন দত্ত এগিয়ে না গিয়ে বাড়িতে এসে বসে রয়েছে। বিষয়টা মিলনের কাছে ভালো লাগেনি। তাই মিলন তার খালুকে বারবার বলছিল সে বন্ধুর বাড়িতে গেলে পারতো। এদিকে শিবানীও খোঁজ নিতে বলেছে। ঠিক এমন একটা মুহূর্তে নজর আলী কৃপণের ছোট ছেলে তাদের বাড়িতে এসে উপস্থিত। হারাধন দত্ত নজর আলী ছোট ছেলেকে প্রশ্ন করে। কিন্তু প্রশ্নের উত্তরে নহর কিছুই বলতে পারেনা। সে বরঞ্চ বলেছিল, যা আছে সব নিয়ে যাক তাতে তার কি আসে যায়। গোল্লার ভাগ সে তো নেবেই। এদিকে হারাধন দত্তের দুই কুটুম গণ্যমান্য ব্যক্তি হয়ে গোল্লার মিটিংয়ে উপস্থিত ছিল। এ বিষয়টা মোটেও হারাধন দত্ত ভালো দৃষ্টিতে দেখে নাই। কারণ একটা মুহূর্তে নজর আলী কৃপণ হারাধন দত্তকে এই নিয়ে কথা শোনাতে পারে।
এদিকে মিলন রেশমার সাথে নহরের ভালোবাসার ফাটল দূর করবে আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু সুযোগের সদ্ব্যবহার আর মিথ্যা কথা বলেছে মিলন। রেশমার জন্য গোপনে একটি ছেলে ঠিক করেছে এবং রেশমার বাবার কাছে প্রস্তাব রেখেছে। কিন্তু উপর উপর নহরের সাথে মিথ্যা কথা বলে গোপনে রেশমাকে বিয়ে দিয়ে দেওয়ার চিন্তা ভাবনা নিয়েছে। বিষয়টা এখন পর্যন্ত চুমকি ক্লিয়ার জানেনা। তাই চুমকি ভবিষ্যৎ বড় ভাবি হিসেবে দায়িত্ব নিল দেওরার দুঃখ দূর করার জন্য। সঠিকটা যাচাই করতে চায় রেশমার সাথে কথা বলে। তাই নিজের ছোট হবু দেবরকে সান্ত্বনা দিয়া যায়।
মিলন ম্যাজিস্ট্রেট সেজে ফরহাদের দোকান থেকে ১০০০ টাকা এনেছিল। কিন্তু সেই টাকা ফরহাদকে ফিরিয়ে দেয়া হয়নি আবার পিকনিক করা হয়নি। মিলন তার পকেটে রেখে দিয়েছে। কাউকে ভাগ দিতে চায় না। ফরহাদ মনে করে তার বউ যদি সহযোগিতা করে তাহলে অবশ্যই সে টাকা উদ্ধার করা সম্ভব। ফরহাদ ও তার ভাই মজনুর মধ্যে ঝগড়া হওয়ার পর থেকে ফরহাদের বউ ফরহাদের সাথে কথা বলে না। কিন্তু ফরহাদ বউয়ের সাথে কথা না বলে থাকতে পারেন। সে বউকে অনেক ভালবাস। বউ যখন উঠানে ধান শুকাচ্ছিল। ফরহাদ তার পিছু পিছু অনেক কথা বলে এবং বউয়ের হাসিমুখে কথা শুনতে চাই। কিন্তু তার বউ হাসিমুখে কথা না বলে অভিমানী মন নিয়ে কথা বলতে থাকে। এরপর যখনই একটু নিজের অনুকূল হওয়ার অনুভূতি খুঁজে পায় তখনই সে 1000 টাকা কিভাবে উদ্ধার করতে হয় এই নিয়ে কথা বলার চেষ্টা।
আমরা এই নাটকে বেশ কিছু বিষয়কে কেন্দ্র করে অভিনয় লক্ষ্য করেছি। একটা পর্যায়ে গোল্লার জমি দখলের কিছুটা সাফল্যতা খুঁজে পেয়েছি। আর এ সাফল্যতার মাঝে তার বুদ্ধি ও পেশি শক্তি, অস্ত্র শক্তির আবির্ভাব লক্ষ্য করা গেছে। আরেকদিকে নিজের সম্পত্তি বের হয়ে যাচ্ছে এমন করুন পরিণতিকে কেন্দ্র করে নজর আলী কৃপণের অসুস্থ অভিনয়ের সৌন্দর্য খুঁজে পেয়েছি। শুরু থেকে আমরা তার নিখুঁত অভিনয় লক্ষ্য করে আসি। এই পর্বেও তার অভিনয়ের কমতি ছিল না। দর্শকের কাছে বেশি ভালো লাগবে এই পর্বে মেজো ছেলের সাথে বাবার কথা বলার অভিনয়গুলো। কারণ এখানে খুবই আনন্দের কথাবার্তা রয়েছে। এছাড়াও আমরা ট্রাজেডিময় জীবন লক্ষ্য করেছি নজর আলী কৃপণের ছোট ছেলের মধ্যে। তার প্রেমিকা রেশমা তার সাথে কথা বলে না। প্রেমিকার বাবা তার মেয়ের সাথে কথা বলতে মানা করে দিয়েছিল। কিন্তু এই সুযোগে ফাটল সৃষ্টি করে দিয়েছে আরো মিলন এসে। এছাড়াও ফরহাদের বউ এর প্রতি বেশি ভালোবাসা যেন সবাইকে মুগ্ধ করে। সব মিলে আমরা অভিনয়টা পর্যালোচনা করে সুন্দর একটা রেজাল্ট পাই,তা হচ্ছে নাটকটা দর্শকের অনেক অনেক আনন্দ দান করে থাকেন। এখানে কৃপণদের কৃপণতা সবচেয়ে বেশি আলোড়ন সৃষ্টি করে। তাই বলতে পারি রুচি সম্মত এবং দর্শক নন্দিত বাংলার শ্রেষ্ঠ নাটকের মধ্যে একটি নাটক হাড় কিপটে। যেখানে অসুস্থ ব্যক্তিরাও কিছুটা সময়ের জন্য স্বস্তি খুঁজে পাবে এ নাটক দেখার মধ্য দিয়ে। তাই আমার দৃষ্টিতে এই নাটকের এই পর্বটা অনেক আনন্দদায়ক এবং রুস্তিসম্মত।
সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন নাটক রিভিউতে, ততক্ষণ ভালো থাকুন। আল্লাহ হাফেজ। |
---|
Comments