স্বরচিত কবিতা "প্রশান্তি"||~~
11 comments
স্বরচিত কবিতা
সকলকে শুভেচ্ছা। আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি। আর আপনারা সবাই সব সময় ভালো থাকবেন,এটাই প্রত্যাশা করি।
কবিতাটির মূলভাব
প্রশান্তি গদ্য কবিতার মূল ভাবের পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, প্রশান্তি শুধুমাত্র একটুকু নিস্তব্ধতা বা বিরতি নয়, এটি একটি গভীর মানসিক ও আত্মিক অবস্থান যেখানে সব কিছু সুরলয় হয়ে যায়। এটি একটি অভ্যন্তরীণ শান্তির অনুভূতি যা শুধুমাত্র বাহ্যিক পরিবেশের নিরবতার উপর নির্ভর করে না, বরং মানুষের মনের গভীরে একটি বিশেষ স্থিতি বা পূর্ণতার অনুভূতি তৈরি করে। প্রশান্তি তখন আসে যখন মনে কোনো অশান্তি বা উদ্বেগ আর থাকে না, যখন ব্যক্তি নিজেকে পূর্ণতা ও শান্তির মধ্যে দেখতে পায়।
এই কবিতায়, প্রশান্তিকে এমনভাবে চিত্রিত করা হয়েছে, যা সমুদ্রের শান্ত প্রবাহের মতো অতি ধীর গতিতে, কিন্তু নিঃশব্দে মনকে স্পর্শ করে। এটি আকাশের মতো অসীম এবং পাথরের মতো দৃঢ়—যেমন কোনো ঝড় বা চরম অবস্থাও তাকে নড়া-চড়া করতে পারে না। প্রশান্তির অনুভূতি গভীর এবং অমোঘ, এটি এমন এক শক্তি যা শব্দের অতীত এবং ভাষার সীমা অতিক্রম করে যায়।
কবিতায়, প্রশান্তির যে অভ্যন্তরীণ ক্ষমতা তা এমন, যা মানুষের অন্তর্গত কষ্ট এবং অস্থিরতাকে নিমিষে দূর করে। প্রশান্তি তখন এক ধরনের অস্বীকার করা শক্তি হয়ে ওঠে—যেখানে কিছু চাওয়ার প্রয়োজনীয়তা দূর হয়ে যায়, এবং মানুষ তার বর্তমান অবস্থায় পরিপূর্ণ থাকে। এই প্রশান্তি মনের প্রতিটি কোণকে স্পর্শ করে, যেমন এক শান্তিপূর্ণ নদী যা ধীরে ধীরে প্রবাহিত হয়, এক বিরামহীন প্রক্রিয়ায়।
প্রশান্তির এই অনুভূতি মানুষকে একটি গভীর আত্মীক শান্তি দেয়, যা শুধু অনুভূত হয় এবং তাকে পুনরায় তার জীবনের গভীরে ফিরে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়। এটি এমন একটি অবস্থান, যেখানে সমস্ত পৃথিবী থেমে যায়, মানুষ তার নিজস্ব অস্তিত্বকে বুঝতে পারে এবং জীবনকে নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে পায়।
কবিতা -"প্রশান্তি"
প্রশান্তি
প্রশান্তি কী?
এ কি শুধু নিস্তব্ধতা?
এ কি শুধু একটুকু বিরতি, যেখানে সময় থেমে থাকে?
না, প্রশান্তি কিছুই নয়, শুধু এক মুহূর্তের বিশ্রাম,
বরং এটি এক গভীর শান্তির অনুভূতি,
যা অন্তরের গহীনে গেথে যায়,
যেমন সূর্যের প্রথম রশ্মি মাটি ছোঁয়।
প্রশান্তি আসে,
যেমন সমুদ্রের কূলে ঠাণ্ডা হাওয়ার প্রবাহ—
মৃদু, অথচ প্রতিটি কোণে একটি অদৃশ্য শক্তি।
এতে কোনো শব্দ থাকে না,
কিন্তু অনুভূতির অগণিত জলোচ্ছ্বাস মনের মধ্যে ঘুরে ফিরে যায়।
এটি এক টুকরো সময়, যেখানে কিছুই প্রয়োজন নেই,
কিছুই নেই যা চাইতে হবে,
কারণ যা আছে তা যেন সবটুকুই পূর্ণতা পেয়েছে,
এবং আরও কিছু চাওয়ার দরকার নেই।
প্রশান্তি আসে ঠিক সেভাবেই,
যেমন রাত্রি শেষে পৃথিবী নিঃশব্দে বিশ্রাম নেয়,
যেমন এক শান্তিপূর্ণ নদী ধীরে ধীরে বয়ে চলে,
কোনো বাধা ছাড়াই, নিরবিলম্বে,
এটি প্রতিটি হৃদয়ের গহীনে এক অদৃশ্য সুর বাজায়।
প্রশান্তি কখনো মনের প্রতিটি কোণকে ছুঁয়ে যায়,
এটি মেঘের মতো ভেসে আসে,
প্রকৃতির বুক থেকে বেরিয়ে,
ধীরে ধীরে শান্তির ভাষা বলে,
যা শব্দের চেয়ে গভীর,
আর কোনো বাক্য ছুঁতে পারে না তার মাধুরী।
এটি পাথরের মতো দৃঢ়,
যেমন সমুদ্রের তীরের পাথর,
যা বহু ঝড় বয়ে গেলেও তার অস্তিত্ব অটুট থাকে।
এটি আকাশের মতো অসীম,
যেমন রাত্রি শেষে চাঁদের আলো,
যা অন্ধকারে প্রতিটি পথকে আলোকিত করে দেয়।
এটি এমন এক শান্তি, যা কখনো ভেঙে যায় না,
এটি এমন এক প্রশান্তি,
যা এক মুহূর্তের জন্য হলেও
মনের সমস্ত কষ্ট দূর করে,
এবং আমাদের শান্তিতে ফিরিয়ে নিয়ে আসে।
বন্ধুরা আমার আজকের কবিতটি, নিশ্চয়ই আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। আর আপনাদের ভালোলাগাই আমার সার্থকতা ও পরম পাওয়া। সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। পরবর্তীতে আবারো সুন্দর সুন্দর কবিতা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব, আমি সেলিনা সাথী...
আমি সেলিনা সাথী। ছন্দের রাজ্যে, ছন্দরাণী কাব্যময়ী-কাব্যকন্যা বর্তমান প্রজন্মের নান্দনিক ও দুই বাংলার জনপ্রিয় কবি সেলিনা সাথী। একধারে লেখক, কবি, বাচিক শিল্পী, সংগঠক, প্রেজেন্টার, ট্রেইনার, মোটিভেটর ও সফল নারী উদ্যোক্তা তার পুরো নাম সেলিনা আক্তার সাথী। আর কাব্যিক নাম সেলিনা সাথী। আমি নীলফামারী সদর উপজেলায় ১৮ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। আমার বাবা পিতা মরহুম শহিদুল ইসলাম ও মাতা রওশনারা বেগম। ছড়া কবিতা, ছোট গল্প, গান, প্রবন্ধ, ব্লগ ও উপন্যাস ইত্যাদি আমার লেখার মূল উপজীব্য। আমার লেখনীর সমৃদ্ধ একক এবং যৌথ কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ১৫ টি। আমার প্রথম প্রকাশিত কবিতার বই অশ্রু ভেজা রাত, উপন্যাস মিষ্টি প্রেম, যৌথ কাব্যগ্রন্থ একুশের বুকে প্রেম। জীবন যখন যেমন। সম্পাদিত বই 'ত্রিধারার মাঝি' 'নারীকণ্ঠ' 'কাব্যকলি'সহ আরো বেশ কয়েকটি বই পাঠকহমলে বেশ সমাদৃত। আমি তৃণমূল নারী নেতৃত্ব সংঘ বাংলাদেশ-এর নির্বাচিত সভাপতি। সাথী পাঠাগার, নারী সংসদ, সাথী প্রকাশন ও নীলফামারী সাহিত্য ও সংস্কৃতি একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। এছাড়াও আমি জেলা শাখার সভাপতি উত্তোরন পাবনা ও বাংলাদেশ বেসরকারি গ্রন্থাগার পরিষদ নীলফামারী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছি। তিনি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১৪ সালে নীলফামারী জেলা ও রংপুর বিভাগীয় পর্যায়ে সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য শ্রেষ্ঠ জয়িতা অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছি। এছাড়াও সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় ও সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বিশেষ অবদান রাখায় আমি বহু সম্মামনা পদক অর্জন করেছি। যেমন সাহিত্যে খান মইনুদ্দিন পদক ২০১২। কবি আব্দুল হাকিম পদক ২০১৩। শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্র কর্তৃক সম্ভাবনা স্মারক ২০১৩। সিনসা কাব্য সম্ভাবনা ২০১৩। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষে সম্মামনা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৩৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সম্মাননা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ১১৫ তম জন্ম জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ২০১৪। দৈনিক মানববার্তার সম্মামনার স্মারক ২০২৩। চাতক পুরস্কার চাতক অনন্যা নারী সম্মাননা ২০২৩ ওপার বাংলা মুর্শিদাবাদ থেকে মনোনীত হয়েছি।
বিষয়: ক্রিয়েটিভ রাইটিং
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
Comments