New to Nutbox?

SBD recovery case #1 : beneficiary rme [round 37]

4 comments

sbd-recovery
73
13 days agoSteemit3 min read

This post is made for recovering lost SBD : 1470

Recovered so far : 1301.429 SBD


গল্প (রক্ত তৃষা) - পর্ব ৩৫


vampire-2115396_1280.jpg
Copyright Free Image Source : PixaBay


বজ্র কঠিন স্বরে একটা আদেশ বাতাসে ভর দিয়ে কমলাদেবীর কর্ণকুহরে প্রবেশ করলো । তাঁকে কেউ উত্তর দিকে মুখ করে অর্থাৎ, মন্দিরের দিকে যেদিকে হাঁড়িকাঠ পোতা সেদিকে মুখ করে বসতে বলছে । একটুক্ষণ পরে কমলাদেবী হৃদয়ঙ্গম করলেন যে এই আদেশ তাঁকে করেছেন তাঁর প্রভু চন্ড । এই আদেশ অমান্য করার মতো মনের জোর বা সাহস কোনোটাই তাঁর নেই ।

ধীরে ধীরে হাঁটু মুড়ে সেই মাটির তৈরী বেদীর উপরে বসে পড়লেন কমলাদেবী । গর্ভের শিশুটি বড্ড বেশি নড়াচড়া করছে । টের পাচ্ছেন তিনি । হাঁটু মুড়ে বসতে তাঁর বেশ কষ্ট হচ্ছে । কিন্তু, কিছুই করার নেই, প্রভুর আদেশ তাঁকে মানতেই হবে ।

কমলাদেবী বসার কিছুক্ষণ পরে সহসা মন্দির থেকে সেই কাপালিক বের হয়ে এলো । তার দক্ষিণ হস্তে ধরা রয়েছে একটা বড় মাটির সরা । সেই সরায় একটা কলাপাতায় রয়েছে বেশ খানিকটা সিঁদুর মাখানো । কাপালিক বেদীর কাছে এসে দাঁড়ালো । তারপর চন্ডের সাথে কিছুক্ষণ কীসব ফিসফাস করলো কিছুক্ষণ ধরে । এরপরে কাপালিক চোখের ইশারা করা মাত্রই যমদূতের মতো সেই অনুচরদের মধ্যে একজন এসে বিশাল সেই জলভরা কলসীটি তুলে ঢেলে দিলো কমলাদেবীর মস্তকে ।

বরফ শীতল সেই জলে স্নান করা মাত্রই দারুন শীতে ঠক ঠক করতে কাঁপতে লাগলেন কমলাদেবী । ইশ ! কী শীত ! এখন তো শীতকাল নয় তবুও নদীর জল ভয়ানক ঠান্ডা । মনে হয় অসময়ের ঝড় বৃষ্টির জন্য এমন ঠান্ডা হয়েছে জল ।

হু হু করে পুব দিক থেকে হাওয়া উঠেছে । বড় ঠান্ডা , বড় তীব্র সেই ভেজা পূবালী হাওয়া । সিক্ত বসনে দারুন কনকনে ঠান্ডায় কেঁপেই চলেছেন কমলাদেবী । এমন সময় কমলাদেবীর সামনে এসে কাপালিক একটু সামনে ঝুঁকে তাঁর কপালে সেই গোলা সিঁদুরের মস্ত একটা টিপ পরিয়ে দিলো । এরপরে পাশের ভাঙা সেই মস্ত সরা থেকে রক্ত জবার মালাটা নিয়ে পরিয়ে দিলো কমলাদেবীর কণ্ঠে ।

তারপরে জোরে জোরে কিছু দুর্বোধ্য সংস্কৃত মন্ত্র আওড়াতে লাগলো কাপালিক । হাওয়ার বেগ যেনো আরো কিছুটা বেড়েছে, কালিগোলা আকাশের বুক চিরে মাঝে মাঝে বিদ্যুতের ফলা আকাশের এ মুড়ো থেকে ও মুড়ো অব্দি যেনো চিরে ফেলছে, সেই সাথে গুড়গুড় করে মেঘের গর্জন । ঝড়ের পূর্বাভাস ।

শ্মশানের এই ঝোড়ো পরিবেশে একটা গা ছমছমে আবেশ তৈরী হয়েছে । চন্ডের মতো দুর্ধর্ষ দয়ামায়াহীন মানুষের বুকেও যেন রক্ত ছলাৎ করে উঠলো । একটু কাঁপা গলায় সে জিজ্ঞেস করলো কাপালিককে, "সময় হয়েছে ?" কাপালিক ঘাড় নাড়লো । চোখের কোন দিয়ে নীরব ইশারা করলো সে তার দুই দুর্ধর্ষ অনুচরকে । মশালের অস্পষ্ট আলোতেও সেই ইশারা পড়তে পারলো যমদূতদ্বয় ।

গা ঝাড়া দিয়ে এগিয়ে গেলো তারা কমলাদেবীর কাছে । চন্ড এগোলো মন্দিরের পেছন পানে যেখানে বলির বিশাল খড়গটি রাখা আছে । কাপালিক আবার দুর্বোধ্য স্বরে সংস্কৃত মন্ত্রোচ্চারণ করতে লাগলো । তবে এবার কিন্তু তার কণ্ঠে কিছুটা জড়তা, কিছুটা ভয় আর কিছুটা কম্পন লক্ষ্য করা গেলো । দুর্ধর্ষ কাপালিকের হৃদয়ে এ কিসের ত্রাসের সঞ্চার হলো ?

শ্মশান থেকে অল্প একটু দূরে নদীর পাড় ধরে বিশাল একটা কালো অবয়ব হনহন করে দ্রুত পায়ে এগিয়ে আসছে মন্দিরের দিকে । তার চোখ আঁধারেও দারুন ক্রোধে ধিকি ধিকি জ্বলছে । মাথার চুল শনের মতো হাওয়ায় উড়ছে । দ্রুত, আরও দ্রুত তাকে যেতে হবে ওই মন্দিরে । মহা পাপ ঘটতে যাচ্ছে আজ কালীমায়ের সামনে । যে করেই হোক রুখে দিতে হবে সেটাকে ।

[চলবে]

Comments

Sort byBest