New to Nutbox?

প্রচন্ড তাপদাহে শরীরকে সুস্থ রাখবেন যেভাবে - আমার একডজন টিপস

44 comments

rme
89
12 days agoSteemit5 min read

ai-generated-8672958_1280.jpg

copyright free image source : PixaBay


এ বছর বাংলা শুভ নববর্ষের পর পরই যে গরম পড়েছে তাতে আত্মারাম খাঁচাছাড়া হওয়ার অবস্থা । ১৪ ই এপ্রিল ছিল বাংলা নববর্ষ, আর তার ঠিক চার দিন পরেই ১৮ ই এপ্রিল কোলকাতায় দিনের বেলা সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৪০.২ ডিগ্ৰী । ঠিক ওই সময়টাতেই রাজস্থানে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ২৯ ডিগ্রী । ভাবুন কী অবস্থা ! আমাদের কলকাতা হলো নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু এলাকার, আর রাজস্থান হলো গিয়ে মরুভূমির দেশ ।

আসলে কি জানেন আমাদের দেশ এখন আর নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ুর অন্তর্গত কোনোক্রমেই বলা চলে না, এখন শুধুই গ্রীষ্মপ্রধান দেশ বলা যেতে পারে । বিশ্বব্যাপী উষ্ণায়নের জেরে জলবায়ু পরিবর্তনের মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে আমাদের দেশে ।

একটু পর্যবেক্ষণ করলেই আমরা দেখতে পাবো যে বিগত বছরগুলির তুলনায় বর্তমান বছরগুলিতে এখন আরো বেশি করে গরম পড়ছে । এই ভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে গরম আরো বৃদ্ধি পাবে । হয়তোবা মরুকরণের ইফেক্ট শুরু হয়ে যাবে খুব শীঘ্র । এর পেছনের মূল কারণ কিন্তু একটাই - ক্রমাগত বনভূমি উজাড় করে ফেলা, যথেচ্ছ হারে গাছপালা কেটে সাফ করে দেওয়া, কিন্তু, সে অনুপাতে গাছপালা না লাগানো । যত দ্রুত হারে পৃথিবী থেকে বনভূমি হ্রাস পাবে তত দ্রুত গতিতে বিশ্বব্যাপী উষ্ণতা বৃদ্ধি পাবে ।

এ বছর তো চৈত্র মাসেই অসম্ভব গরম পড়েছিল । বৈশাখের আগমনের পূর্বেই গরমের চোটে চারিদিকে ত্রাহি ত্রাহি রব উঠে গিয়েছিলো । আর বৈশাখের একদম শুরুর দিকে ৪৪ ডিগ্রী অব্দি টেম্পেরেচার ছাড়িয়েছিলো। কোলকাতার কাছে কোথায় লাগে মরুশহর জয়পুর । মরুশহর জয়পুরের চাইতেও রোদের তেজ আরো বেশি খর ছিল । এই প্রচন্ড গরমে চারিদিকে বেশ কয়েকদিন ধরে লু বইছে। ফলশ্রুতিতে পশ্চিমবঙ্গে হিট স্ট্রোকে বেশ কয়েকজন মানুষের মৃত্যু হয়েছে ইতিমধ্যে ।

এই প্রচন্ড গ্রীষ্মের দাবদাহে জলশূন্যতা একটা খুবই কমন ইস্যু, আর এই জলশূন্যতা আমাদের শরীরের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। এই গরমে সুস্থ থাকাটাই সব চাইতে বড় চ্যালেঞ্জ । যদিও আমরা সবাই কম বেশি গ্রীষ্মকালীন সময়ে শরীর সুস্থ রাখার টিপস জানি, তবুও আজ আমি আমার কিছু নিজস্ব মতামত ও টিপস শেয়ার করলাম আজ । আশা করি আপনাদের কাজে লাগতে পারবে ।


০১ এই গরমে শরীর হাইড্রেট রাখা ভালো থাকার একমাত্র সঠিক কারণ । তাই বেশি বেশি করে বিশুদ্ধ জল পান করুন । একবারে সর্বোচ্চ ২ গ্লাস জল পান করুন । সারা দিনে মিনিমাম ৩ লিটার জল পান করুন । কিন্তু, দিনের বেলায় ঘন্টায় একবার অন্তত জল পান করবেন মাস্ট ।

০২ ফ্রিজের বরফ ঠান্ডা জল পান করা সীমিত করুন । নরমাল টেম্পেরেচারের জল পান করা শরীরের পক্ষে ভালো । বারে বাড়ে ফ্রিজের ঠান্ডা জলে তৃষ্ণা নিবারণ করলে তা শরীরে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে । ফ্রিজের বরফ শীতল জল হার্টের রক্ত নালীগুলোকে সংকুচিত করে, হজমের গন্ডগোল করে এবং দ্রুত গলা শুকিয়ে যাওয়ার অনুভূতি সৃষ্টি করে ।

০৩ দিনে অন্তত দুই গ্লাস লেবু, নুনের শরবত করে খান । আমরা গরমে প্রচুর ঘামি । এই ঘামের সাথে শরীর থেকে নুনও বেরিয়ে যায় প্রচুর । ফলে নুন সংকট দেখা দিতে পারে পেশীতে । ফলশ্রুতিতে পেশী ক্র্যাম্প হয়ে যেতে পারে ।

০৪ গরমের দিনে শরীরে ইলেক্ট্রোলাইটের ব্যালান্স ঠিক রাখতে ডেইলি অন্তত একটি করে ডাবের জল পান করার চেষ্টা করুন । ডাবের জল হলো প্রাকৃতিক ইলেক্ট্রোলাইটের উৎস । এতে শরীর সব চাইতে বেশি সতেজ থাকে ।

০৫ প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি খান গরমের দিনগুলিতে । গরমকালে প্রচুর পরিমাণে পাতি ও গন্ধরাজ লেবু ওঠে বাজারে । এক গ্লাস জলে একটি পাতি লেবুর রস চিপে বের করে তার সাথে এক চামচ চিনি ও এক চিমটি নুন মিশিয়ে ওপরে গন্ধরাজ লেবুর রস হালকা করে দিয়ে শরবত বানিয়ে খাবেন । দিনে অন্তত দুই গ্লাস ।

০৬ গরমে বেশি করে তরল জাতীয় খাবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন বাড়িতে । শরবত, স্যুপ, স্ট্যু এসবের পাশাপাশি ডাল, ভাত, মাছের ঝোল খাবেন । খাবার পাতে অবশ্যই লেবু রাখবেন । এই সময়টাতে মাংস ও গুরুপাক রান্না যথাসাধ্য কম খাবেন । খুব ভোরে ব্রেকফাস্ট করবেন । দুপুরে প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজি সহযোগে ভাত, ডাল ও মাছের ঝোল খাবেন । ভাজাভুজি একদম কম খাবেন । রাতে একদম হালকা খাবার খাবেন । রাতে ভাত না খেলেই ভালো, তারপরেও যদি খান তো একদমই কম ভাত খাবেন ।

০৭ গ্রীষ্মকালীন ফলগুলি প্রচুর পরিমাণে খাওয়ার চেষ্টা করবেন । বিশেষ করে ডাব, তরমুজ, বাঙ্গি, ফুটি, বিভিন্ন মেলন জাতীয় ফ্রুট, লিচু, কলা, পেঁপে, আম (কাঁচা ও পাকা উভয়ই), কাঁঠাল, বেল, শসা, জাম এবং জামরুল এসব ফল খাবেন ডেইলি ।

০৮ গরম কালে রাস্তার ধারের কোনো ফাস্ট ফুড ভুলেও ছোঁবেন না । একই সাথে লোকাল চায়ের দোকানের চা, রাস্তার ধারের কাটা ফল এবং খোলা রাস্তার ওপরে বিক্রি করা কোনো শরবত খাবেন না । গরমকালে নানান জীবাণু আক্রমণের সব চাইতে সহজ মাধ্যমগুলো হলো ওগুলোই । টাইফয়েড ও কলেরার জীবাণুতে এই সময় বেশি সংক্রমণ হয় ।

০৯ যাঁদের প্রতিদিন সকালে হাঁটাহাঁটির অভ্যাস আছে তাঁরা এই কাজটি গরমের দিনে সূর্য ওঠার অন্তত ১৫-২০ মিনিট আগের থেকে স্টার্ট করে সূর্য ওঠার ১৫-২০ মিনিট পর অব্দি কন্টিনিউ করুন । তারপরে আর ভুলেও কোনো জগিং বা মর্নি ওয়াক অথবা কোনো এক্সারসাইজ করতে যাবেন না ।

১০ তীব্র গরমে খুব কষ্ট হলেও মর্নিং ওয়াক, জগিং বা এক্সারসাইজ একেবারে ছেড়ে দেবেন না । বরং সূর্য ওঠার একটু আগে এবং সন্ধ্যার প্রাক্কালে করুন । তবে, অবশ্যই সাথে করে ওয়াটার বটল নিতে ভুলবেন না ।

১১ সকাল দশটার পর যদি পায়ে হেঁটে বা পাবলিক যানে বাড়ির বাইরে কোথাও যান তবে সঙ্গে করে ছাতা নেবেন মাস্ট । ভুল যেন না হয় । প্রয়োজনে একটু সানস্ক্রিনও মেখে নিতে পারেন ।

১২ খুব ভোরে স্নান করার অভ্যাস করুন এ দুটি মাস । প্রতিদিন বিকেলে গা ধুয়ে ফেলবেন তবে মাথা ভেজাবেন না । গায়ে ঘাম থাকলে আগে ফ্যান চালিয়ে ঘাম শুকিয়ে নেবেন । এরপরে স্নান করবেন ।


------- ধন্যবাদ -------


পরিশিষ্ট


এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তো যে কোনো এমাউন্ট এর টিপস আনন্দের সহিত গ্রহণীয়

Account QR Code

TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx (1).png


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png


steempro....gif

»»——⍟——««

Comments

Sort byBest