পুজো পরিক্রমা ২০২৩ : ত্রিধারা ক্লাব
7 comments
নমস্কার বন্ধুরা,
শিবতলী ক্লাব থেকে এরপর এগিয়ে গেলাম আমার পরের গন্তব্যে, যেটা ছিলো ত্রিধারা ক্লাবে। ঐতিহ্যবাহী এই পুজো কমিটি প্রতিবছরই প্রাকৃতিক উপাদানের মাধ্যমে তাদের পুজো সাজিয়ে তোলার চেষ্টা করে। এবছরেও তার ভিন্নতা হয়নি, প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করেই পুরো পুজো মন্ডপ গড়ে তুলেছেন তারা। মূলত ক্লাবের নিজস্ব মঞ্চটিকে ঘিরেই প্রতিবছর দুর্গা মণ্ডপ বানানো হয় এবারেও তাদের মন্ডপটি সেখানে বানানো হয়েছে। শহরের অন্য প্রান্তে হওয়ার জন্য এখানে তুলনামূলক লোকের ভিড় একটু কমই হয়। তবে যেহেতু পুজোর থিম প্রতি বছরই খুব ভালো হয়ে থাকে সেজন্য কিছুটা শীতের উপেক্ষা করেই ক্লাবের সামনে উপস্থিত হলাম।
কয়েক বছর আগে সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষ পালন করে এবছর ৫৮ তম বর্ষে পদার্পণ করা এই পুজো কমিটির থিম "মাটির সুতা"। তারা প্রতিবছর নানান প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে পুজোর ভাবনা ফুটিয়ে তোলেন। এবারে সেই উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে মাটি ও পাটের সুতো। যা দিয়েই করা হয়েছে মন্ডপ বাইরের সজ্জা এবং অন্দরের সজ্জা। হাঁটতে হাটতে যখন ত্রিধারা ক্লাবে পৌঁছে গেলাম তখন পুজো মন্ডপের বাইরের দিকটা একটু যেন ফাঁকা লাগলো। মণ্ডপের ভেতরে গিয়ে ভুলটা ভাঙলো। আসলে মানুষজন ঠান্ডার কারণে মণ্ডপের ভেতরেই ভীড় জমিয়ে রেখেছেন। যেটা বাইরে থেকে একটুও বোঝার উপায় নেই।
মন্ডপের বাইরে মূলত চটের উপরে মাটির প্রলেপ দিয়ে করা হয়েছে। তার উপরেই রঙের ব্যবহার পুরো জিনিস সুন্দর রূপে ফুটিয়ে তুলতে সাহায্য করেছে। মন্ডপের ভেতরে ঢুকতেই পেলাম এক বিশাল আকৃতির চট এবং মাটির দিয়ে তৈরী ধ্যান রত মুখাকৃতি। ভালোভাবে লক্ষ্য করে বুঝলাম ভগবান শিবের ধ্যানমগ্ন মুখাকৃতি মন্ডপের ঠিক মাঝামাঝি জায়গায় প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। মন্ডপের অন্দরের সজ্জা পুরোপুরি হয়েছে পাটের সুতো এবং চটের মাটির অল্প আস্তরণ ব্যবহার করে। তার উপরে আলো আঁধারিতে এমন ভাবে মন্ডপের ভেতরের পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছিলো যেটা মন্ডপের ভেতরে আবহ এক প্রাচীন গুহার মতোই করে দিয়েছিল।
ধ্যানমগ্ন শিবের মুখাকৃতির পেছনেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন স্বয়ং জগৎ জননী মা দুর্গা। প্রতিবারের মতোই এবারেও ত্রিধারা ক্লাবের দেবী প্রতিমা বনেদিয়ানা ধাঁচের উপরেই তৈরি করা হয়েছে। প্রতিমাতে ডাকের কাজের পরিবর্তে সোনালী জরি ব্যবহার হয়েছে।
Comments