নাটক রিভিউঃ " কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি "
21 comments
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন। তো শীতের সময় ভালো থাকাটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আজকে চলে এলাম আপনাদের সাথে একটি নাটক শেয়ার করার জন্য। নাটকটি আজকেই ইউটিউব এ রিলিজ হয়েছে। নাটকটির নাম হচ্ছে কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি। আশা করছি নাটকটি ভালো লাগবে আপনাদের কাছে।
নাম | কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি |
---|---|
চিত্রনাট্য, পরিচালনা ও গল্প | মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ। |
এসোসিয়েট প্রযোজক | এবি রোকন। |
অভিনয়ে | ইয়াশ রোহান, তানজিন সায়েরা তটিনী, শহীদুজ্জামান সেলিম, শিল্পী সরকার, মাহমুদুল ইসলান মিঠু, সমু চৌধুরী, দিশা, রিমু রাজা খন্দকার, মিজু ইনজাম, রিপন সহ আরও অনেকে। |
আবহ সংগীত | আরফিন রুমি। |
দৈর্ঘ্য | ৫৪ মিনিট ৪৪ সেকেন্ড। |
মুক্তির তারিখ | ১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং |
ধরন | রোমান্টিক, সামাজিক । |
ভাষা | বাংলা |
চরিত্রেঃ
অয়নঃ
ইয়াশ রোহান।তমাঃ
তানজিম সায়েরা তটিনী।কাহিনী সারসংক্ষেপ
নাটকের শুরুতে দেখা যায়, অয়ন তার বন্ধুকে নিয়ে বাইক নিয়ে যাচ্ছিল। ঠিক তখন এক রমণীকে দেখে অয়নের বুকে ব্যথা শুরু হয়ে যায়। পাশে বসা অয়নের বন্ধু ভেবে নেই হয়তো সত্যি সত্যি বুকে ব্যাথা হয়েছে। এজন্য সে অয়নকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে বলে। কিন্তু অয়ন বলে এটা সে ব্যাথা নয়। এটা হচ্ছে মনের ব্যথা। আর এ ব্যথার ঔষধ একজনই দিতে পারবে আর সে হলো সেই সুন্দরী রমণী। অয়ন বাইক থেকে নেমে দ্রুত সে মেয়ের কাছে চলে যায়। মেয়েকে দেখেই অয়ন বলতে থাকে তার বুকের ব্যাথার ঔষধ দেয়ার জন্য। অয়ন তখন মেয়ের হাতের ফোনটি নিয়ে তার নাম্বারটি তার ফোনে সেভ করে রাখে। তারপর অয়ন বলে যে যদি কখনো মনে হয় বুকের ব্যাথার ঔষধ দেয়ার জন্য তাহলে একটা মিসডকল দেয়ার জন্য! তারপর অয়ন সেখান থেকে চলে যায়।
অয়ন পরিবারের ছোট ছেলে। পরিবারের সাথেই থাকে। তার বড় ভাই একটা ভালো জব করে। পরিবারের দায়দায়িত্ব তার বড় ভাই করে। এজন্য অয়নের ভাবী নানারকম কথা শোনায় অয়নকে। উঠতে বসতে অয়নকে চাকরি করার কোঠা দেয়! অয়ন এজন্য তার বন্ধুর বাসায় চলে যায়। এদিকে তমার সৎ মা বলাবলি করতে থাকে বিয়ে দেয়ার জন্য। একটা ছেলে তার পছন্দ হয়েছিল। ছেলেটার বউ মারা গেছে কিছুদিন হলো। কিন্তু অনেক টাকা পয়সার মালিক ছেলে। তমার সৎ মা সেই ছেলের সাথে বিয়ে দিতে চাই তমাকে। তমা সেটা শুনে ফেলে। তমা সেটা শোনার পর বাসায় আর এক মুহূর্ত থাকতে চাইনা। তারপর অয়নকে ফোন দেয়। অয়ন প্রথমে বুঝতে পারেনি তমা ফোন দিয়েছে। তারপর ফোনে বুকের ব্যাথা কমার কথা বলতেই অয়ন বুঝে যায় যে তমা ফোন দিয়েছে।
তমার ফোন পেয়ে অয়ন ভীষণ খুশি। তমা অয়নের সাথে দেখা করতে চাই। তারপর অয়ন তমার সাথে দেখা করতে চলে যায়। কিন্তু তমা একেবারে বাড়ি থেকে পালিয়ে চলে আসে। এখন তমাকে কোথায় রাখবে কি করবে বুঝতে পারছে না। তারপর অয়ন তার বন্ধুকে ফোন দেয়। তার বন্ধু ব্যাচেলর বাসায় থাকে। আর অয়নের পরিবার সবাই থাকে তার ভাইয়ের বাসায়। সেখানেও নিয়ে যাওয়া ঝামেলা হবে। তারপর অয়ন কিছু না বলে তমাকে নিয়ে যায় তাদের বাসায়ই! কিন্তু তমার বাবা অয়নকে দেখে রেগে যায়। কারণ অয়ন একদিন মারামারি করছিল সেটা দেখে অয়নকে বখাটে ছেলে ভাবে! তখন অয়ন তমাকে নিয়ে সেখান থেকেও বের হয়ে যায়। তারপর অয়নের বাসায় নিয়ে যায়। বাসায় সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় তমাকে। তারপর অয়নের ভাবীর সাথে পরিচয় করায় তমাকে। অয়নের ভাবী রেগে আগুন। অয়ন নিজেই থাকতে পায় না আবার আরেকজনকে নিয়ে এসেছে অথিতি হিসেবে।
তারপর অয়ন অপমান সহ্য করতে না পেরে তমাকে নিয়ে চলে যায় তার বন্ধুর বাসায়। তার বন্ধু তমাকে দেখে টেনশনে পরে যায়। কারণ বাসার মালিক যদি জানতে পারে একটা মেয়ে তার রুমে তাহলে পরদিনই বাসা থেকে বের করে দিবে। তমা বুঝতে পারে যে তারজন্য অনেক সমস্যা হচ্ছে অয়নের। পরদিন সকালে বাসার মালিক এসে দেখতে পায়ন তমা রুমে। আর কেউ নেই। বাসার মালিক আবার তমার বাবার বন্ধু । তমাকে দেখেই চিনতে পেরে যায়। তারপর তমা বলে যে সে অয়নকে বিয়ে করে এখানে কয়েকদিন থাকবে, ভালো রুম পাচ্ছিল না তাই। তমার বাবার বন্ধু সেটা বিশ্বাস করে! তারপর তমার বাবার বন্ধু তার বাবাকে ফোন দেয়। ফোন দিয়ে অয়নের ব্যাপারে ভালো কিছু বলে যা শুনে তমার বাবার ভুল ভাঙে।
এদিকে অয়নের মা বাবাকে তার বড় ভাইয়ের বউ চুরি করার অপবাদ দিয়ে বাসা থেকে বের করে দেয়। ভাগ্যক্রমে তমা তাদেরকে নিয়ে আসে বাসায়। আর অয়নকে তার বড় ভাইয়ের অফিসেই ভালো একটা চাকরির ব্যাবস্থা করে দেয়। তারপর অয়ন ও তার মা বাবাকে নিয়ে ভালোই দিনযাপন করতে থাকে। তারপর অয়ন ও তমার আনুষ্ঠানিক বিয়ের কাজ সম্পন্ন হওয়ার মাধ্যমে নাটকটির সমাপ্তি ঘটে।
ব্যক্তিগত মতামত
অনেকদিন পর পারিবারিক একটি নাটক দেখলাম। যেখানে পরিবারের বাস্তবতা তুলে ধরা হয়েছে। জীবনে টাকায় সব না! টাকার চেয়েও মূল্যবান সম্পদ বাবা মা! অয়নের বড় সেই মূল্যবান সম্পদ হারিয়েছে! কিন্তু অয়ন তার মূল্যবান সম্পদকে সবসময় যত্ন করেছে । সমাজে এমন চিত্র অনেক দেখা যায়। ছেলে ভালো পজিশনে গেলে মা বাবাকে চিনে না। কিন্তু প্রকৃত সন্তান সবসময় বাবা মাকে মাথার উপর তুলে রাখা। আরেকটা বিষয় ফুটে উঠেছে, সেটা হচ্ছে বিয়ের পরে একটা মেয়েকে নিজের মেয়ের মতো দেখা। সবমিলিয়ে নাটকটি উপভোগ করার মতো ছিল।
ব্যক্তিগত রেটিং
৯.৬/১০
নাটকটির লিংক
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। বর্তমানে ডুয়েটে অধ্যয়নরত আছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত তিন বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,কবিতা লেখা,গল্প লেখা ,রিভিউ,ডাই এবং আর্ট করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Comments