শৈশবের স্মৃতিচারণ " অংক দৌড় "!!
4 comments
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
গতকাল হঠাৎ একটা স্মৃতি মনে পড়ে গেল। তখনই সিদ্ধান্ত নিলাম এটা লিখে এখানে পোস্ট করব যেন ব্লকচেইনে থেকে যায়। ভবিষ্যতে ভুলে গেলেও যেন আবার মনে পড়ার কোন একটা উপায় থাকে। আমি তখন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ি। মার্চ মাস চলছে প্রায় ১০ দিন মতো স্কুলে যেতে পারিনি কারণ আমার চিকেন পক্স হয়েছিল। সুস্থ্য হয়ে যেদিন স্কুলে গেলাম ঐদিন ক্লাসে নাম স্যার ঘোষণা করে দিল আগামীকাল কে কে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা ক্রিয়া অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবে। যেহেতু আমি অসুস্থ ছিলাম স্কুলে ট্রায়াল দিতে পারিনি। এবং শারীরিক ভাবে পুরোপুরি সুস্থ্য না থাকায় কোন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার যোগ্য হলাম না। তবে আমি ঠিক করেছিলাম আমার বন্ধুদের উৎসাহ দিতে আমি খেলা দেখতে যাব। পরবর্তী দিন চলে গেলাম উপজেলা মাঠে।
আমাদের স্কুল সহ আমাদের উপজেলার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীরা এসেছে। প্রথমে শুরু হলো ছেলেদের ৪০০ মিটার রিলে দৌড় । তবে সেখানে আমাদের স্কুল কোন স্থান করতে পারেনি। একে একে মেয়েদের দৌড়, সাঁতার, দীর্ঘ লাফ, উচ্চ লাফ সব প্রতিযোগিতা হয়ে গেল। কিন্তু আমাদের স্কুলের শিক্ষার্থীরা কোন ক্যাটাগরিতেই সেরা ৩ এ থাকতে পারেনি। তখনও বাকি রয়েছে অংক দৌড়। তবে অংক দৌড় যার দেওয়ার কথা আমারই এক বন্ধু। তবে ও নাকি আসেনি। এটা নিয়ে স্যার ম্যাম রা একটু বিরক্ত। কারণ প্রতিযোগিতার আগেরদিন নাম পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। ঐসময় হঠাৎ আমার ক্লাস ম্যাম আমাকে বলে ইমন তুমি অংক দৌড়ে অংশগ্রহণ করবা। প্রাথমিক অবস্থায় আমি একটু ইতস্তত বোধ করি।
পরবর্তীতে গিয়ে আমি বলি হ্যা ম্যাম আমি অংশগ্রহণ করব। বিষয়টা প্রধান শিক্ষক কে জানাতেই উনি বলল ঠিক আছে আমি ব্যবস্থা করছি। পরবর্তীতে আমাদের প্রধান শিক্ষক কতৃপক্ষের সাথে কথা বলে আমাকে নামায়। যথারীতি শুরু হয় অংক দৌড়। আমি বেশ নার্ভাস ছিলাম। একটা গুণ অংক দেওয়া ছিল ( ৫২৮×২৪) এ টাইপের। তবে সঠিকভাবে অংকটা যখন শেষ করলাম দেখলাম আমার আগে চারজন শেষ করে ইতিমধ্যে ফিনিশিং লাইনের দিকে দৌড় শুরু করে দিয়েছে। আমি আর দেরি করলাম না। কোনরকম একজনকে টপকে তিনজনের পরে গিয়ে চতুর্থ হয়ে ফিনিশ করলাম। আমার ধারণা আমার আগের তিনজনের অংক হয়তো ঠিক। এবং আমি হেরে গিয়েছি। এবারেও কোন স্থান পেল না আমার স্কুল।
এরপর বিচারক রা প্রথম জনের অংক চেক করে দেখল উওর ভুল অর্থাৎ সে ডিসক্লোয়ালিফাই। কাকতলীয় ভাবে আমার আগে থাকা তিনজের অংকের উওর ভুল। যখন আমার কাছে এসে চেক দিচ্ছিল আমার বুকের মাঝে কেমন জানি একটা কম্পনের সৃষ্টি হয়েছিল। আমার এখনও মনে আছে। তবে বিচারক রা আমার অংক চেক করে বলে হ্যা আমার অংক সঠিক। এবং আমি প্রথম স্থান অধিকার করেছি। ঐটা শোনার পর আমার অনূভুতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো ছিল না। তবে আমার থেকেও বেশি খুশি হয়েছিল আমাদের প্রধান শিক্ষক এবং অন্য স্যার ম্যাম রা। পরবর্তীতে তাদের থেকে অনেক প্রশংসা পেয়েছিলাম। পাশাপাশি অর্জন করে নিয়েছিলাম উপজেলা প্রাথমিক পর্যায়ের সেরা অংক দৌড়বিদ এর সনদপএ।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Comments