২০ বছর পর পদ্মরাগ ট্রেনে..শেষ-পর্ব
4 comments
সবাইকে আমার নমস্কার,আদাব।আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও ভালো আছি,সুস্থ আছি।
আমি @bristychaki,আমি একজন বাংলাদেশী। আমার বাংলা ব্লগ এর আমি একজন ভেরিফাইড ও নিয়মিত ইউজার।আমি বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি।আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি পোস্টের ভিন্নতা আনার আজ তারই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি।আশাকরি আমার আজকের ব্লগ টি আপনাদের ভালো লাগবে।
আমাদের দেশে ট্রেন একটি প্রচলিত যানবাহন, তাই অনেকে ট্রেনে চলতে পছন্দ করেন কারণ ট্রেনে ছড়ে কোথাও যেতে অনেক প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করা যায় রাস্তার মতো যানজট এর ঝুটঝামেলা তাই ট্রেনের জার্নিতে ক্লান্তি অনুভব কম হয়ে থাকে।আমার ট্রেন জার্নি খুবই ভালো লাগে আমার মেয়েদের জন্যও ট্রেন জার্নিটা অনেক স্বস্তির। আমি বগুড়ার স্টেশনে কখনো যাইনি আর অনেক বছর ট্রেনে যাতায়াত করা হয় না বলে একটু ভয় লাগছিলো তাই একা সাহস করে উঠতে পারছিলাম না।আমার আত্মীয় কাকাকে তো আগেই বলে রেখেছিলাম ট্রেনে তুলে দেওয়ার জন্য।
আগের দিন ব্যাগপত্র সবকিছু গুছিয়ে রেখে ছিলাম যাতে কোনোকিছু ছাড়া না পড়ে।তাড়াতাড়ি খাওয়াদাওয়া শেষ করে থালাবাসন ধুয়ে রান্নাঘর পরিস্কার করে রেখে দিয়েছিলাম।তার কারণ হলো আমরা বাড়িতে বেশকিছুদিন থাকবো তাই সবকিছুই পরিস্কার করে রাখাটা দরকার।আমরা যারা বাহিরে থাকি তাদের কোথাও ঘুরতে যাওয়াটাও একটা বিড়ম্বনার ব্যাপার,কারণ আমাদের সবকিছুই ধুয়েমুছে পরিস্কার করে রেখে যেতে হয় আবার ঘুরে আসার পর পুনরায় আবার সবকিছুই আগের মতোই ধোয়ামোছা করতে হয়।মাঝে মাঝে এই বিড়ম্বনার জন্য কোথাও যেতে মন চায় না।তখন মনে হয় এরচেয়ে বাসায় থাকাটাই অনেক ভালো।
সবকিছু সেরে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে গেলাম।কিন্তু কিছুতেই যেনো ঘুম আসছিলো না।তার কারণ হলো দীর্ঘদিন ট্রেনে যাতায়াত করি না তাই একটু টেনশন হচ্ছিলো।আর টেনশন মানেই আমার ঘুম হারাম।দেখতে দেখতে রাত তিনটা বেজে গেলো তারপরও ঘুম আসছিলো না,চার টার দিকে একটু চোখ লেগেছিলো।ঘন্টাখানেক মতো ঘুমিয়েছিলাম মনে হয়।খুব সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে মেয়েদের ডেকে তুললাম।৭.৪০ টায় ট্রেনের সময় তাই আমাদের সময়ের আগেই পৌঁছাতে হবে স্টেশনে।সবাই রেডি হয়ে একটা অটোরিকশা ডেকে এনে আমরা স্টেশনের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম।মাঝ রাস্তায় আমার আত্মীয় সেই কাকাকে তুলে নিয়ে আমরা যথাসময়ে পৌঁছে গেলাম।কাকাকে টিকিট কাটতে দিলাম।তারপর ১২০ টাকা দিয়ে আমাদের তিনজনের টিকিট কেটে আনলেন।ট্রেন ঠিক ৭.৫০ টার মধ্যেই গন্তব্যে এসে পৌঁছালো।আমি তো খুবই চিন্তিত ছিলাম যে ঠিকঠাক মতো ট্রেনে উঠতে পারবো কি-না!যাইহোক ঈশ্বরের কৃপায় আমরা খুব ভালোভাবেই ট্রেনে উঠে পড়ি।তারপর আমার কাকা আমাদেরকে সিটে বসিয়ে দিয়ে উনি নেমে পড়লেন।কিছুক্ষণের মধ্যেই ট্রেন ছেড়ে দিলো।আমরা ট্রেনে ঝালমুড়ি বাদাম কিনে খেলাম আর তিনজন মিলে অনেক গল্প করতে লাগলাম,সেই সাথে ট্রেনের জানালা দিয়ে বাহিরের প্রকৃতির ভিডিও করলাম এবং প্রতিটি মুহূর্ত খুবই উপভোগ করলাম।
মেয়েরা তো বার বার জিজ্ঞেস করছিলো কখন আমরা গন্তব্যে পৌঁছাবো!সকাল ১১ টার মধ্যে আমরা আমাদের গন্তব্যে পৌঁছালাম।আমার বড় দাদা আর তাঁর ছেলে আমাদের কে নিতে আগে থেকেই স্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিলো তাই আমাদের নামতে খুব একটা সমস্যা হয়নি।ট্রেন থেকে নেমে একটা অটোরিকশা ৫০ টাকা ঠিক করে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম।অটোরিকশায় উঠার পর থেকে খুবই ভালো লাগছিলো মনের মধ্যে একটা অন্যরকমের শান্তি অনুভব হচ্ছিলো।নিজের বাড়ি নিজের জায়গার শান্তি আর কোথাও পাওয়া যায় না।আমার বিয়ের পর থেকে এই পর্যন্ত যতোবার বাবার বাড়িতে এসেছি প্রতিবার অনেক গুলো টাকা খরচ করে আসতে হয়েছিলো।কিন্তু এবার মাত্র ২২০ টাকা দিয়ে বাড়ি পর্যন্ত নিরাপদে এবং খুবই আরাম করে এসেছি।এটা আরও বেশি ভালো লাগার মতো বিষয় ছিলো।আমরা কোথাও গেলে সবার আগে টাকা খরচের চিন্তা করি। আর এই কারণে অনেক সময় আমরা ইচ্ছে থাকলেও কোথাও যেতে পারি না শুধুমাত্র অনেক টাকা খরচ হবে বলে।সবমিলিয়ে এবারের বাড়ি আসাটা সত্যিই অনেক ভালো লাগার ছিলো সেইসাথে ২০ বছর পর পদ্মরাগ ট্রেন জার্নি।
সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন এই প্রার্থনা করে এখানেই শেষ করছি।
Comments