New to Nutbox?

এয়ারপোর্টে ভোগান্তির গল্প।

5 comments

rupok
79
2 years agoSteemit5 min read

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


বিগত পোস্টগুলোতে আপনাদের সাথে এবার ঢাকায় আসার কারণ আমি শেয়ার করেছি। ঢাকায় এসেছিলাম মূলত আমার আম্মাকে রিসিভ করার জন্য। প্রতিবারই সে যখন দেশের বাইরে যায় তখন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করি আবার কবে ফিরে আসবে সেই সময়টার জন্য। স্বভাবতই যখন তার দেখে আসার সময় হয় তখন আমি খুবই আনন্দিত থাকি। এটা একটা অন্যরকম অনুভূতি। যাদের পরিবারে লোকজন বাইরে থাকে তারা অবশ্য এই অনুভূতিটার সাথে পরিচিত।

IMG_20220625_183955.jpg

যাই হোক কয়েকদিন আগে তিনি যেদিন দেশে ফিরেন সেদিন কার কিছু অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে আজ ভাগ করে নেবো। আমার আমার বিদেশে আসা-যাওয়া যখন থেকে শুরু হয়। তখন একজনের পরামর্শে আমি ফ্লাইট এওয়ার নামে একটি অ্যাপসের ব্যবহার শিখি। সেই অ্যাপসের মাধ্যমে আপনি ফ্লাইট নাম্বারটা দিয়ে বিমানের লোকেশন মনিটর করতে পারবেন। তো এবারও যথারীতি আম্মা যখন নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওনা দিলো তখন আমি সেই অ্যাপসের মাধ্যমে তার ফ্লাইট এর খোঁজ খবর রাখছিলাম।

IMG_20220625_184440.jpg

সেই হিসেবেই আমরা জানতে পারি তিনি এসে পৌঁছাবেন বাংলাদেশ সময় বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে। আমরা পরিবারের লোকজন আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিলাম তিনি বাংলাদেশের পৌছানোর করার কিছুক্ষণ আগেই আমরা এয়ারপোর্টে উপস্থিত হবো। যদিও আমরা জানি বাংলাদেশ এয়ারপোর্টে লাগেজ নিয়ে বের হতে দীর্ঘ সময় লেগে যায় মানুষের। তারপরেও সাবধানতার কারণে আমরা কিছুটা সময় হাতে নিয়েই বাসা থেকে বের হলাম। এর পরের ঘটনা আপনাদের ইতিমধ্যে হয়তো জানা আছে। আমরা সরাসরি এয়ারপোর্টে না গিয়ে দিয়াবাড়ি নামক একটি স্থানে গিয়েছিলাম ঘুরতে।

IMG_20220625_191900.jpg

সেখান থেকে আম্মা যে প্লেনে দেশে এসেছে সেই প্লেনের ল্যান্ড করা দেখার পরে আমরা আবার এয়ারপোর্টের দিকে আসলাম। সেই জায়গা থেকে এয়ারপোর্টে ফিরতে আমাদের ২০ মিনিট মতো সময় লাগলো। কিন্তু এয়ারপোর্টে পৌঁছেই আমরা সমস্যার সম্মুখীন হলাম। কারণ আমরা তখনো নিশ্চিত নই যে আম্মা কোন টার্মিনাল দিয়ে বাইরে আসবে। এদিকে আমি ফোন করে আম্মার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করছিলেন না। আমরা বাইরে দাঁড়িয়ে থেকে তার সাথে যোগাযোগ করতে না পেরে বেশ অস্থির হয়ে উঠেছিলাম।

IMG_20220625_191704.jpg

যখন আবার তার সাথে যোগাযোগ হলো তখন তাকে বললাম তিনি যেন এক নম্বর টার্মিনাল দিয়ে বাইরে আসেন। কারণ আমাদের গাড়ি পার্ক করা এক নম্বর টার্মিনালের সামনে। যখনই আমি এই এয়ারপোর্টে আসি তখনই প্রচন্ড হতাশ হই। কি কারনে সেটা আপনারা বুঝতেই পারছেন। যাদের আত্মীয়-স্বজন বাইরে থাকে তারা সবাই এই এয়ারপোর্টের তিক্ত অভিজ্ঞতার ব্যাপারে ওয়াকিবহাল। বাংলাদেশের এই এয়ারপোর্টটাতে সহযোগিতা পূর্ণ মনোভাব সম্পন্ন মানুষের খুবই অভাব। প্রত্যেকটা মানুষ শুধু অবৈধ উপায়ে ইনকামের কথা চিন্তা করছে। মানুষকে সাহায্য করার নূন্যতম মানসিকতা তাদের নেই। কিন্তু আত্মীয়-স্বজন যারা বাইরে থেকে তাদের কাছে জিজ্ঞেস করলেই জানতে পারি বাইরের দেশ গুলিতে এই চিত্রটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। তবুও আশা করি হয়তো একদিন বাংলাদেশের এয়ারপোর্টের চিত্রও পাল্টে যাবে।

IMG_20220625_191708.jpg

যাইহোক আমরা বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে থাকি কিন্তু যার জন্য অপেক্ষা করছি তার কোন দেখা নেই। বেশ কিছুক্ষণ পরে আম্মার সাথে ফোনে যোগাযোগ হলে জানতে পারলাম তিনি সাথে করে যে লাগেজ এনেছিলেন। সেখান থেকে একটি লাগেজ পাচ্ছেন না। যার ফলে তিনি লাগেজ বেল্ট এর কাছে অপেক্ষা করছেন লাগেজের জন্য। এটা অবশ্য নতুন কিছুই নয়। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এই ঘটনা হর হামেশাই ঘটে থাকে। আমরা বাইরে অপেক্ষারত অবস্থায় চিন্তা করছিলাম তিনি কতক্ষণে বের হতে পারবেন। কারণ দীর্ঘ সময় ভ্রমণজনিত কারণে তিনি নিশ্চিত অনেক ক্লান্ত হয়ে রয়েছেন। এই অবস্থায় লাগেজের জন্য অপেক্ষা করা আসলেই বেশ কঠিন একটি কাজ। তারপরেও কিছুই করার নেই।

IMG_20220625_191708.jpg

একটা সময় ছিল যখন এয়ারপোর্টে একটি নির্দিষ্ট এলাকায় গেলে সেখান থেকে বহিরাগতরা যেখান দিয়ে বের হচ্ছে সেই জায়গাটা দেখা যেতো। এখন সেই জায়গাটাও আটকে দিয়েছে। এদিকে আম্মার প্লেন ল্যান্ড করেছে প্রায় দেড় ঘন্টা হয়ে যায়। কিন্তু তবুও তার দেখা নেই। আমরা বাইরে যার অপেক্ষা করছিলাম তারা বেশ অস্থির হয়ে উঠেছিলাম। তারপরে আমি একটু চেষ্টা করে টার্মিনাল একের যে গেট দিয়ে বিদেশ থেকে আগতরা বের হচ্ছে সেই গেটের কাছাকাছি পৌঁছানোর চেষ্টা করি। সেখানে বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর আমি দেখতে পাই আম্মা বের হচ্ছে। তাকে দেখতে পেয়ে অনেকটা স্বস্তিবোধ করি। কিন্তু ভোগান্তির এখানেই শেষ নয়।

IMG_20220625_184559.jpg

আমরা তাকে নিয়ে বাইরে আসার পর যখন গাড়িতে উঠে রওনা দিলাম। তখন চিন্তা করেছিলাম হয়তো অল্প সময়ে বাসায় পৌঁছে যাব। কিন্তু পথের মধ্যেখানে তিনি কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়েন। বেশ কয়েকবার বমিও করেন। তার এই অবস্থা দেখে আমরা দু'ভাইবোন বেশ চিন্তিত হয়ে পড়ি। যদিও কিছুক্ষণ পর সবকিছুই মোটামুটি স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। তারপর আমরা রাত প্রায় সাড়ে নটার দিকে বাসায় পৌঁছায়। সাড়ে পাঁচটায় যে ফ্লাইট ল্যান্ড করেছে সেই ফ্লাইটের মানুষকে নিয়ে আসতে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা সময় লেগেছে। আমাদের এ থেকে আপনারা ধারণা করতে পারেন যে আমাদের বিমানবন্দরের কি রকম একটা অবস্থা।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানশাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Comments

Sort byBest