New to Nutbox?

স্মৃতির পাতা থেকে বন্ধুদের সাথে ঘটে যাওয়া একটি গল্পের কথা👫//🌹[10%shy-fox]

6 comments

rayhan111
74
2 years agoSteemit6 min read
আসসালামু-আলাইকুম/আদাব🤝

হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।


আসলে বন্ধুদের সাথে কাটানো মুহূর্তগুলো কখনোই ভোলা যায় না। বন্ধুদের ছাড়া যেন লাইফ ইম্পসিবল। লাইভে আনন্দ-উল্লাস মাতানো দিনগুলো পার করে এসেছি। আর সেই দিনগুলোর কথা খুবই মনে পড়ছে। বিশেষ করে বন্ধুরা মিলে যখন আনন্দ-উল্লাস স্কুল ফাঁকি দিয়ে খেলাধুলা কত রকম মজার দিন ছিল।এই দিনগুলো সত্যিই খুব মনে পড়ছে। আমার বন্ধুদের সাথে হাজারো স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। তাই আজকে আমি আপনাদের মাঝে বন্ধুদের সাথে কাটানো স্মৃতিময় একটি দিনের গল্পের কথা শেয়ার করতে এসেছি। আশা করছি বন্ধুদের সাথে কাটানো মুহূর্তের এই গল্পটি আপনাদের ভালো লাগবে। এটি গল্প হলেও আমাদের জীবনের সত্যি ঘটনা। আজ সেই দিনটা খুব মনে পড়ছে। বন্ধুদের সাথে সেই দিনের স্মৃতিটা জীবনেও ভুলব না। এটি হৃদয়ের স্মৃতিতে লেখা হয়ে গেছে। আশা করছি এই গল্পটি আপনাদের ভালো লাগবে।


friendship-gc56dd62c9_1920.jpg

source

সময়টা ছিল ২০১৪ সাল। ২০১৪ সালে আমি তখন নবম শ্রেণীতে পড়ি। আর এই নবম শ্রেণীতে আমার অনেক বন্ধু হয়। আমাদের বন্ধুদের মধ্যে সুজন, রফিক সোহান, আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু ছিল। এই বন্ধুদের সাথে আমার হাজার স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। স্কুল ফাঁকি দিয়ে খেলাধুলা করতাম। বন্ধুদের সাথে নিয়ে ঘুরতে যেতাম। স্মৃতিময় দিন অনেক রয়েছে। তবে আজকে আমি যে স্মৃতিময় গল্পটি বলতে চাচ্ছি, এটি হলো নবম শ্রেণীর প্রথম দিকে জানুয়ারি মাসেই আমাদের বনভোজনের আয়োজন করা হয়েছিল। আমাদের স্কুল থেকে বনভোজনের আয়োজন করেছিল বগুড়া মহাস্থানগড় দেখার জন্য। তো আমরা অনেক আনন্দ উল্লাস এর সাথে এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করতেছিলাম।বনভোজনকে কেন্দ্র করে আমাদের মধ্যে ছিল আনন্দ-উল্লাস। বনভোজনে যাওয়ার তিন দিন আগে থেকে যেন আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কত মজা করব কত কিছু নতুন নতুন, শার্ট, প্যান্ট আরো কতকিছু এবং আমরা গাড়ির মধ্যে সাউন্ড বক্স বাজানোর ব্যবস্থা করলাম। তারপরে শনিবার সকাল সাতটার দিকে বগুড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। আমরা বাসের ভিতর অনেক আনন্দ উল্লাসের সাথে যাচ্ছিলাম।গানের তারে নাচানাচি করতে করতে বগুড়া মহাস্থানগড় এর উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।


students-gce39bb890_1920.jpg

source

শহর থেকে মহাস্থানগড় আসতে আমাদের তিন ঘন্টা সময় লেগেছে। এই ভ্রমণ যেন আমাদের কাছে অনেক ছোট মনে হয়েছে। কারণ বাসের ভিতর অনেক আনন্দ উল্লাস করতে ছিলাম। তো আমরা মহাস্থানগড়ে আসলাম। মহাস্থানগড়ের সৌন্দর্য দৃশ্য দেখতে লাগলাম। সত্যিই এত সুন্দর প্রকৃতি আমার খুবই ভালো লেগেছে। সবুজের সমাহার ছিল বন্ধুদের সাথে নিয়ে অনেক আনন্দ উল্লাস করেছি।মহাস্থানগড়ের সৌন্দর্যময় দৃশ্য উপভোগ করতেছিলাম। অনেক আনন্দ অনেক মাস্তি করতেছিলাম। স্যারদের সাথে নিয়েও অনেক আনন্দ উল্লাস করতে ছিলাম। তারপরে আমরা দুপুরের খাবার খেলাম। খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা অনেক ভালো ছিলো। স্যারদের নিয়ে আনন্দের সাথে সবাই খাওয়া দাওয়া করলাম। তো খাওয়া-দাওয়া শেষ করলাম। তারপর লটারিতে আমার বন্ধু সোহান প্রাইজ পেয়েছে। বন্ধুকে নিয়ে অনেক আনন্দ উল্লাস করলাম। তখন আমরা বললাম বন্ধু তুই যত প্রাইজ পেয়েছিস। আমাদের কিছু খাওয়াতে হবে। বন্ধু বলল ঠিক আছে সন্ধ্যার সময় তোদের কিছু খাওয়াবো।


people-g2e7a46b29_1920.jpg

source

তো সন্ধ্যা নেমে আসলো। আমরা বন্ধুরা চারজন, আমি, রফিক, সোহান এবং সুজন চারজনে মিলে বাইরে আসলাম। সোহান আমাদের খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করবে এি জন্য। তো আমরা যাচ্ছিলাম যাওয়ার পথেই একটা ছেলের সাথে সোহানের ধাক্কা লাগল এবং সেই ছেলেটাকে বলল তুই আমাকে ধাক্কা মারলি কেন। এই নিয়ে নানা রকমের ঝগড়া শুরু হয়ে গেল। তখন আমি বললাম দুঃখিত ভাই আমাদের মাফ করে দেন ভুল হয়া গেছে, কিন্তু ছেলেটা খুবই খারাপ ছিল, সে সোহানকে বললো তোকে আমি দেখে নেব। এই বলে সে কাকে যেন ফোন দিল এবং আমার অনেক ভয় হচ্ছিল।সোহান বললো কিছুই হবে না। তারপরে আরো চারজন ছেলে আসলো। ঐ ছেলে গুলা এসে আমাদের ডাক দিলো। যে আপনার সাথে কথা আছে। আমি যেতে মানা করলাম কিন্তু সোহান এবং সজন বললো দেখি কি বলে। যাওয়া মাত্রই বলল তুই ওকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছিলি কেন। আমি বললাম ধাক্কা মেরে ছিল কিন্তু পরে যায়নি। সে কথায় বিশ্বাস করল না। বললো জরিমানা দেহ ১৫০০ টাকা।আমি বললাম ভাই এটা আমাদের ইচ্ছাকৃতভাবে হয়নি। হঠাৎ ধাক্কা লেগেছে এবং যে ভাইয়ের সাথে ধাক্কা লাগছে। সেই ভাই পুরে যায়নি, সে ব্যথা পাইনি। তাহলে কেন আমাদের থেকে এভাবে অন্যায় ভাবে পনেরশো টাকা চাচ্ছেন। আমরা আপনাদের ৫০০ টাকা দিচ্ছি আপনারা খেয়ে নিয়েন। এই কথা বলার সাথে সাথে আমার গালে ঠাস করে একটা থাপ্পর মারল। তখন সোহান বলল দেখেন ভাই আপনারা কিন্তু বেশি বেশি করছেন। আমাদের বন্ধুর গায়ে হাত দিবেন না। আর একটা হাত কিন্তু খবর আছে। এবার সাথে সাথে আমাদের তিনজনকেই ছুরি ধরলো। বললো যে বেশি কথা বললে একদম তোদেরকে জবো করে ফেলবো। যা কাছে যে টাকা আছে বের কর।


holding-hands-g88e167cb4_1920.jpg

source

তখন আমরা ঠিকই বুঝতে পারলাম, যে এটা ঝগড়ার কোন কারণ না। এটা আসলে তারা একটা ধান্দা করেছে আমাদের থেকে টাকা পয়সা নেওয়ার জন্য। উপায় না পেয়ে আমরা টাকা পয়সা দিতে লাগলাম। তখন সোহান বলল টাকা পাস আমরা দিব না,কিন্তু সোহানকে যখন আরো মারতে লাগলো তখন বললাম আমরা এই টাকার জন্য তোকে মার খেতে দেখতে না। কারণ সোহান বেশি কথা বলেছিল যার কারণে সোহানকেই বেশি মারতে ছিল। তাই আমরা সফল টাকা পয়সা দিয়ে দিলাম যে ভাই আমাদের যা টাকা ছিলো দিয়ে দিয়েছি। আপনারা সব নিয়ে যান, কিন্তু আমাদের বন্ধুদের কাউকে মারবেন না। তারা বললো তোদের বন্ধুত্ব এত ভালোবাসা। আমি একজনকে মারলে আরেকজন ব্যথা পাস দেখতাছি।তখন আমরা তাদের টাকা পয়সা দিয়ে ওখান থেকে চলে আসলাম। সত্যিই দিনটা খুবই কষ্টের ছিল,ঐ দিনটাতে যেমন আনন্দ করেছি, ঠিক তেমনি আবার কষ্ট পেয়েছি। আসলে এভাবে আমাদের ধরে টাকা-পয়সা এবং মারবে এটা কখনোই কল্পনা করিনি। তখন আসতে ছিলাম আর সুজন বলল আমাদের কাছে যে টাকা ছিল সব টাকায় তো শেষ। আমরা এখন কিভাবে যাবো। তখন সোহান বলল সব টাকা শেষ না বন্ধু, আমার কাছে এখন টাকা আছে ১০০০ টাকা। প্যান্টের ভিতরে রেখেছিল। পায়ের কাছে যে প্যান্টের ভাজ থাকে সেখানে।আমি বললাম কিরে সোহান তুই এই কাজটা করলে কিভাবে, কখন করলি।সোহান বলল যে ওই ছেলেটা যখন তার বন্ধুদের ফোন দিয়েছিল। তখনই ভাবছিলাম কোন একটা ঝামেলা হবে। তখন আমি কাজটা করেছিলাম। তখন বললাম বন্ধু সত্যি তোর উপস্থিত বুদ্ধির তারিফ করতে হবে।যার কারণে আজ আমাদের একটু হলেও যাওয়ার টাকা থাকলো।তবে এই দিনটা কখনোই ভুলবো না। এটা ছিল আমাদের জন্য কালো একটা দিন।বনভোজনে যেমন আনন্দ করেছি তেমনি এই দিনটায় প্রথম ছিনতই হলাম এবং প্রথম অন্যদের হাতে মার খেয়েছি।

বন্ধুদের সাথে বগুড়া মহাস্থানগড়ের ভ্রমণের আনন্দময় দিনটি যেমন উপভোগ করেছি। তেমনি ছিনতাই হওয়ার পর থেকে অনেক খারাপ লেগেছে। আসলে ঐ দিনটি বন্ধুদের সাথে নিয়ে কাটানো মুহূর্তগুলো আজ খুবই মনে পড়তে ছিল। তাই আপনাদের সাথে বন্ধুদের সাথে কাটানো গল্পটি শেয়ার করলাম। আশাকরি আপনাদের ভাল লেগেছে।

banner-abbVD.png

আমার পরিচয়

IMG_20211018_182622.jpg

আমার নাম মোঃ রায়হান রেজা।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি পেশায় একজন সহকারী মেডিকেল অফিসার ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে🌹💖🌹।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉 বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Comments

Sort byBest