"জীবনে প্রথমবার এত বড় সারপ্রাইজ"

tanuja -

বন্ধুরা
আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন। আপনারা কম বেশি সবাই জানেন কাল আমার জীবনের সবচেয়ে দামী একটি দিন ছিলো। দেখতে দেখতে দিন চলে যায়। মনে এই তো সেই দিন আমরা দুজনে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলাম। সময় কত দ্রুত চলে যায় বুঝতে পারিনি। ও ছিলো আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ উপহার। আমার প্রিয় মানুষটি তার নিজের মত করে দিনটি আমাকে উপহার দেয়। আমি ভাবি ও ভুলে যায় কিন্তু পরে দেখি না ওর মনে থাকে আমাদের বিবাহ বার্ষিকী ও আমার জন্মদিন। আমাকে রাগানোর জন্য বলে মনে থাকে না। এই দিনটি আমার দেবোর ও আমার প্রিয় মানুষটি মিলে অনেক সুন্দর করে দিনটি পালন করেছে। ঠিক এবার ও তাই করেছে। ও শুধু ভাবে কি করলে আমি বেশি আনন্দ পাই। এদের সঙ্গে এবার আর একজন যুক্ত হয়েছে সে তো এদের থেকে বড় পাগল। সে হলো আমার বন্ধু বা বোন যাই বলবো কম হয়ে যাবে স্বাগতা।ও যে এই দিনটার কথা মনে রাখবে ভাবিনি। এই দিনটি ৩ তারিখে ১২ টার পর কখনো দিনটি পালন করিনি। শুধু ওই দিন আমরা দুজন দুজনকে উইশ করতাম। আমি ভাবছি এবার ও তাই। যা কিছু আমরা ৪ তারিখে করছি।
যথা রীতি আমি একটু বাইরে গিয়েছিলাম কিছু কেনাকাটা করতে। আমার দেবোর আলাদা বেরিয়েছে।শুধু বললো আমার বাড়ি ফিরতে অনেক দেরি হবে। আমি ভাবছি হয়তো কোথাও ঘুরতে গেলো। আর এদিকে স্বাগতা কে লাইনে পাই না। আমি এক ঘন্টা বাদে বাইরের থেকে এসে চা করছি। হটাৎ আট টার দিকে আমার দেবোর ফোন দিয়ে বলে। আমি ফোন দিলে আমাদের নতুন ফ্ল্যাটে চলে এসো তোমরা। আমি শুধু বললাম কেনো কি হয়েছে? শুধু বলে তোমরা এসো আগে ফোনে বলা যাবে না। আমি তো অবাক হয়ে গেলাম। আর এ দিকে আর একজনকে লাইনে পাই না। যে আমার সাথে কথা না বলে ১ মিনিট ও থাকতে পারে না। আগেই বলেছি আমরা সারাদিন মেসেজে কথা বলি। আর আমি যখন ফ্রি সময় বসে থাকি তখন গল্প শুরু হলে আর শেষ হয় না। আর সে কথাই বলছে না।আমার এত রাগ হচ্ছিলো। আমি রাতে খেয়ে বসে আছি।তখন ১১.৪০ মিনিট আমার দেবোর ফোন দিয়ে বলে নতুন ফ্ল্যাটে এসো তাড়াতাড়ি। আমরা রেডি হয়ে ফ্ল্যাটে যাই। দরজা খুলে ভিতরে ঢুকতেই দেখি সারাঘর অন্ধকার।

অন্ধকারের ভিতর ছোট ছোট মোমবাতি জ্বলছে আবার দুপাশে গোলাপ ফুলের পাপড়ি বিছানো। এই টুকু দেখলাম শুধু।শুধু বললাম এ কি করছো। আর স্বাগতা কোথায়। তখন ও বলে এই তো তোমরা অন্য ঘরে যাও।আমরা অন্য ঘরে গেলাম। আমি বুঝতে পারছিলাম কিছু একটা করছে। রাত ১২.০১ বাজতেই বলে ওই ফুলের ভিতর দিয়ে হেঁটে ঘরে যাও। আমি ঘরে ঢুকে কিছুক্ষন চুপ হয়ে যাই। আমাদের জন্য এতবড় সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছিলো বুঝতে পারিনি। আমাদের দুজনের সেই বিয়ের রাতের কথা নতুন করে মনে করিয়ে দিলো স্বাগতা।আমরা দুজনে পুরো অবাক হয়ে গেলাম ওদের দুজনের কান্ড দেখে।কিছুক্ষন চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিলাম কিছু বলার ভাষা ছিলো না।


এই প্রথমবার আমি এত সুন্দর কোন সারপ্রাইজ পেলাম। প্রতিবছর অনেক ধুমধামের মধ্যে দিয়ে এই দিনটি পালন করে আমার প্রিয় মানুষটি। এবার সত্যি অন্য রকম ছিলো। আমার দেবোর আমি আসার পর থেকে এক গ্লাস জল ও ঢেলে খায় না। সে ও নিজের হাতে স্বাগতার সাথে এত কিছু করছে। যা দেখে আমি তো অবাক। আমি ভেবেছিলাম এই দিনটি শুধু আমার প্রিয় মানুষটি মনে রাখে আর ও পালন করে। আমরা কেক কাটলাম খেলাম।
আর একটা কথা না বললেই নয় তা হলো আমার বাংলা ব্লগ এর সকল এডমিন ও মডারেটর ভাইয়া ও আপুরা তারা সকলে মিলে আমাদের বিবাহ বার্ষিকী পালন করেছেন। আমি খুবই খুশি হয়েছিলাম। আমি তো ভাবতেই পারিনি এত রাত পর্যন্ত তারাও থাকবে। সবার এত এত ভালোবাসা কয়জনে পায়। আমি সত্যি খুব ভাগ্যবতী। দেবতার মতো স্বামী পাওয়া, এমন দেবোরের মতো ভাই, মিষ্টি একটা বোন আর আপনাদের সকলের ভালোবাসা এটা কয়টা মেয়ে পায়।


এত কিছু দেখে আমার চোখে জল এসে গিয়েছিলো।আবার ওরা খাওয়া দাওয়ার আয়োজন করেছিলো।সব মিলিয়ে অনেক মজাই হয়েছিলো।