জেনারেল রাইটিংঃ অচেনা বন্ধুর উপহার ✉️

tanha001 -
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু /আদাব

🌿আমি তানহা তানজিল তরসা। আমি বাংলাদেশ 🇧🇩 থেকে বলছি। আমার স্টিমিট আইডির নাম @tanha001


আজ ২১ নভেম্বর রোজ বৃহস্পতিবার ২০২৪ ইং:।

বাংলায় ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।

হ্যালো বন্ধুরা..............

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছি।আজ আমি আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। প্রতি সপ্তাহের মতো এই সপ্তাহেও আমি আপনাদের মাঝে একটি জেনারেল রাইটিং পোস্ট শেয়ার করব।লেখালেখি করতে বরাবরই আমি অনেক পছন্দ করি। লেখালেখির পাশাপাশি পড়তেও অনেক পছন্দ করি।আশা করি আমার লেখা জেনারেল রাইটিং আপনাদের কাছে অনেক ভালো লাগবে। চলুন তাহলে শুরু করি।


Source

নভেম্বরের এক শীতল বিকেল। কলকাতা শহরের কোলাহল তখন সন্ধ্যার সুরে মিশে গেছে। ছোট্ট কফি শপের এক কোণে বসে ছিলাম আমি। সামনে রাখা কফির মগ থেকে ধোঁয়া উড়ছিল, আর জানালার বাইরে ব্যস্ত মানুষের স্রোত। মাথাটা ভারী লাগছিল অফিসের কাজ, জীবনের টানাপোড়েন, আর ক্লান্তি মিলে যেন এক অনন্ত অস্থিরতা।ঠিক তখনই, দরজার ঘণ্টা বেজে উঠল। এক বয়স্ক লোক ধীর পায়ে ভেতরে ঢুকলেন। তার পরনে পুরোনো কিন্তু পরিপাটি পোশাক, হাতে একটি ছোট ব্যাগ। চেহারায় বয়সের ছাপ থাকলেও তার চোখে ছিল এক অদ্ভুত প্রশান্তি। তিনি সামনের টেবিলে বসলেন, কিন্তু কোনো কিছু অর্ডার করলেন না। শুধু বাইরে তাকিয়ে কী যেন ভাবছিলেন।কিছুক্ষণ পর কৌতূহলী হয়ে আমি তার দিকে তাকালাম। হঠাৎ তিনি আমার দিকে ফিরে মৃদু হাসলেন। আমি সিগন্যাল পেলাম তার সঙ্গে কথা বলতে পারি।"আপনি এখানে প্রতিদিন আসেন?" আমি প্রশ্ন করলাম।তিনি একটু হেসে বললেন, না আজই প্রথম এলাম। আমার এখানে আসার পেছনে একটি বিশেষ কারণ আছে।আমি আরও জানতে চাইলাম। তিনি বললেন, আজ আমার স্ত্রীর মৃত্যুর পঞ্চম বছর। আমরা একসময় এই শহরে থাকতাম। সে খুব ভালোবাসত এই কফি শপের কফি। তাই আজ এখানে এসে তাকে স্মরণ করছি।

কথাটা শুনে মনটা কেমন জানি অস্থির হয়ে গেল। তার চোখের গভীরে লুকিয়ে থাকা কষ্ট স্পষ্ট দেখতে পেলাম। তিনি আরও বললেন, জীবনে অনেক কিছু হারিয়েছি, কিন্তু ভালোবাসার স্মৃতি কখনও মুছে যায় না। আমি এখানে বসে তার প্রিয় গানগুলো মনে করার চেষ্টা করি। তার ভালোবাসার স্মৃতিগুলোই আমার আজকের একমাত্র সঙ্গী।

আমরা যখন গল্প করছিলাম, তখন এক তরুণ মেয়ে কফি শপে ঢুকল। তার পরনে ছিল সাধারণ পোশাক, কিন্তু তার চোখে ছিল স্বপ্নের আলো। মেয়েটি ক্যাশ কাউন্টারে গিয়ে একটি রোজ কেক কিনল এবং বয়স্ক লোকটির দিকে এগিয়ে দিল।আজ আপনি যেটা করছেন, সেটা আমাকে অনুপ্রাণিত করছে,মৃদু হেসে সে বলল। এই কেকটা আপনার স্ত্রীর স্মৃতির প্রতি আমার শ্রদ্ধা। আপনি যা অনুভব করছেন তা আমাদের প্রত্যেকের জীবনে একদিন না একদিন আসবে।লোকটি মেয়েটির দিকে তাকিয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে গেলেন। তিনি বললেন, তোমার মতো তরুণদের মাঝে এমন ভালোবাসা দেখলে আমার মনে হয়, পৃথিবীতে এখনো মানবতা বেঁচে আছে।

আমাদের কথার মাঝে বৃষ্টি শুরু হলো। জানালার বাইরে ছাতার নিচে এক দম্পতি হাঁটছিল। বয়স্ক লোকটি তাদের দেখে একটু হেসে বললেন, জানো আমিও একসময় এমন ছাতা নিয়ে হাঁটতাম। আমার স্ত্রী বৃষ্টিতে ভিজতে পছন্দ করত। সে বলত বৃষ্টি মানুষকে তার অনুভূতিগুলো আরও গভীরভাবে বুঝতে শেখায়।আমি হাসলাম তার কথাগুলো যেন আমার হৃদয়ের ভেতরে কোথাও দাগ কেটে গেল। আমি অনুভব করলাম, প্রতিটি সম্পর্কের পিছনে লুকিয়ে থাকে হাজারো ছোট ছোট মুহূর্ত, যা আমরা কখনো তুচ্ছ বলে ভাবি, কিন্তু এগুলোই একদিন আমাদের জীবনের গল্প হয়ে দাঁড়ায়।

বয়স্ক লোকটি চলে যাওয়ার সময় টেবিলে একটি ছোট্ট কাগজ রেখে গেলেন। তাতে লেখা ছিল"জীবনের অর্থ খুঁজো না। অর্থ খুঁজে পাবে যদি ভালোবাসতে শেখো।"সেই রাতটা আমার জীবনের অন্যরকম হয়ে গেল। অচেনা সেই মানুষটির দেওয়া উপহার আমাকে শিখিয়ে দিল জীবনের অর্থ কীভাবে ভালোবাসা আর সম্পর্কের মধ্যেই লুকিয়ে থাকে।


পোস্টের বিষয়জেনারেল রাইটিং
পোস্টকারীতানহা তানজিল তরসা
ডিভাইসরেডমি নোট ১১
লোকেশনপাবনা
আজ এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আর লেখার অমিল ও ভূল ত্রুটি হলে ক্ষমা ও সুন্দর দৃষ্টিতে দেখেবেন।


১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।


আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়

আমি তানহা তানজিল তরসা। আমার স্টিম আইডির নাম @tanha001। আমি বাংলাদেশের একজন নাগরিক। আমি বিবাহিতা। আমার একটা ছেলে সন্তান আছে। আমি ফটোগ্রাফি, গান গাইতে,রান্না করতে ও বাইকে ঘুরতে অনেক পছন্দ করি। আমার জন্ম স্থান কালিগঞ্জ থানা ঝিনাইদহ জেলায়। আমি পেশায় এক গৃহিনী। পাশাপাশি আমি আমার পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছি। আমি অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। আমি আমার হাসবেন্ড এর চাকরির সূত্রে পাবনা চাটমোহর এ বসবাস করছি।


সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি দেখার জন্য ও সুন্দর মতামত শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। স্পেশালি ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার বাংলা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা, এডমিন ও মডারেটরদের যারা আমাকে এত সুন্দর একটা কমিউনিটিতে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছে এবং আমাকে প্রতিনিয়ত সাপোর্ট করছেন।