দ্বিতীয়বার ঘর বন্দী!

tanay123 -

Hello Friends,,,

নমস্কার বন্ধুরা! কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও মোটামুটি ভালো আছি। বেশ অনেক দিন পর আপনাদের মাঝে পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। হয়ত মাঝে মাঝে একপ্রকার ইচ্ছে করেই কাজে ফাঁকি দেই তবে ইচ্ছা করে একাটানা এতদিন ফাঁকি দেওয়ার মতো ওত বড়ো ফাঁকিবাজও নই😀।

একটু ভালো নেট স্পিডের আশায় খুলনাতে এসেছি, তবে এখানেও অবস্থা যে খুব ভালো সেটা বলা যায় না।তবুও আশা করি এখন থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত থাকতে পারবো। চলুন তাহলে আজকের লেখাটা শুরু করা যাক,,,

লক ডাউন!

লক ডাউন শব্দটার সাথে আমরা সকলেই পরিচিত। এই শব্দটা শুনলে প্রথনেই মনে আসে কিছু বিরক্তিকর ও কষ্টদায়ক কিছু মুহুর্ত। সাধারণত আমরা লক ডাউনের সাথে প্রথম পরিচিত হয়েছিলাম করোনা কালীন সময়ে ঘর বন্দী থাকা অবস্থায়। ওটাই হয়ত ছিলো আমাদের সকলের জন্য জীবনের প্রথম বন্দী দশা।

ঐ বন্দী জীবন যে আমাদের জন্য কতটা অভিশাপের মধ্যে মতো ছিলো সেটা আমরা সকলেই অনুভব করতে পেরেছিলাম।জীবনে আরও একবার ঘর বন্দী থাকার স্বাদ পেলাম। এটা আমাদের সকল বাংলাদেশির জন্য সত্যিই দুঃখজনক। যদিও করোনা কালীন সময়ের তুলনায় এবার বন্দী থাকার সময়সীমা অনেকটা কম তবে আমি মনে করি, এবারের বন্দীদশা অনেক বেশি যন্ত্রণা দায়ক।

অনেকেই ভাবতে পারেন, কেন অনেক বেশি যন্ত্রণার?

করোনা মহামারীর সময়ে অন্তত ঘরে বসে সকলের সাথে যোগাযোগ করতে পারতাম, সকলের খোঁজ নিতে পারতাম, অনলাইনে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে সময় পার করতে পারতাম।

তবে এবার সম্পূর্ণ ইন্টারনেট দুনিয়াই অচল অবস্থায় ছিলো। অনিবার্য কারনে দেশে ইন্টারনেট সচল রাখা সম্ভব হয় নি আর এটাই সব থেকে বেশি কষ্টদায়ক ছিলো অন্তত আমার জন্য। না পারছিলাম কারো সাথে দেখা করতে আর না পারছিলাম কারো সাথে ভালো ভাবে যোগাযোগ করতে। সারাদিন বাড়িতে বসেই বিরক্তিকর সময় পার করতে কার ভালো লাগে? তবে এটা কিছুই করার ছিলো না।

যেদিন থেকে দেশের অবস্থা আরও বেশি ভয়াবহ হয়ে ওঠে, সেদিন থেকেই আমার সকল ব্যাচ বন্দ ঘোষণা করে। বাড়ি থেকে বাবা, মা ফোন করে বাড়িতে যেতে বলে কারন শহরের দিকে ঝামেলা অনেক বেশি। তাই পর দিনই খুব সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলাম কারন বেলা বাড়ার সাথে সাথে পরিস্থিতিও খারাপ হয়ে যায়।

খুলনাতে থাকা অবস্থায় ব্রডব্যান্ড চালু ছিলো তবে বাড়িতে গিয়ে পড়ে যাই মহা বিপদে। বাড়িতে গিয়ে মোবাইলের ডাকা প্যাকেজ ক্রয় করলাম তবে বারবার চেষ্টা করার শর্তেও মোবাইল ডাটা চালু করতে পারি না।

মনে মনে ভাবি হয়ত মোবাইলে কোনো সমস্যার কারনে ইন্টারনেট চালু হচ্ছে না তাই সাথে সাথে মোবাইল রিস্টার্ট করি তাতেও কাজ হয় না, পরে জানতে পারি সারা দেশে ইন্টারনেট কানেকশন বন্দ হয়ে গিয়েছে।

তখন নিজের মনে অজান্তেই কেন জানি হাসি চলে আসে হয়ত বারবার ফোন রিস্টার্ট করার কথা ভেবেই!

সন্ধ্যার দিকে বাড়ি থেকে কিছুটা দুরে এক ভাইয়ের বাড়িতে গিয়ে তার ওয়াইফাই কানেক্ট করি তবে কিছুক্ষণ পরই যথারীতি ব্রডব্যান্ড কানেকশন বন্দ হয়ে যায়। তখন আর কিছুই করার ছিলো না।

মোবাইল ব্যবহার করা শুরুর পর একদিন ইন্টারনেট ব্যবহার না করে থেকেছি এমন হয়নি কখনও আর এবার প্রায় একটা সপ্তাহ কেটে গিয়েছে ইন্টারনেট দুনিয়ার বাইরে। তবে ইচ্ছে করে নয়, বাধ্য হয়ে। জীবনে চলার পথে, বাধ্য হয়ে অনেক সময় অনেক কিছু মেনে নিতে হয় সেখানে নিজের ইচ্ছা- অনিচ্ছার কোনো মূল্য থাকে না।

কয়েকদিন আগে মাকে নিয়ে হসপিটাল গিয়েছিলাম এবং সেটার রিপোর্ট আনতে যাওয়ার কথা ছিলো তবে সেটাও যেতে পারিনি। তবে আপনারা জানেন যে প্রতি সপ্তাহে আমার বাবার খুলনা যেতে হয়, মুরগির ফার্মের জন্য জিনিসপত্র আনতে।

এ সপ্তাহে আসার সময় রাস্তায় মারামারি হচ্ছিলো সেটার সামনে পড়ে যায় তবে সাবধানতার সাথে পাশ কাটিয়ে জোরে গাড়ি চালিয়ে চলে আসে। সৌভাগ্যবশত কারো কোনো সমস্যা হয় নি।

কি ভাবছেন, কড়াকড় শুধু শহরে।

প্রয়োজনে আমাদের সকলেরই বাড়ি থেকে বেরোতে হয় তবে কোনো কারনে যদি বাইরে না যাওয়া যায় বা ঘরে বন্দী থাকতে হয় তাহলে সেটা যে কতটা কষ্টদায়ক সেটা বলে বোঝানো যাবে না আর ইন্টারনেটের অচল অবস্থা সেই কষ্টটাকে যেন আরও কয়েকগুন বাড়িতে দিয়েছে।

আসল করি সব কিছু আবারও আগের মতো হয়ে যাবে দ্রুত। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

END