Image created by OpenAI
দার্জিলিংকে অনেক সময় গোর্খাল্যান্ড বলা হয় কারণ এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি বিশেষ অঞ্চল যেখানে গোর্খা জনগোষ্ঠীর সংখ্যাগরিষ্ঠ বাস।গোর্খাল্যান্ড শব্দটি ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ।এই নাম এবং অঞ্চল নিয়ে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক আন্দোলনও হয়েছে।
গোর্খাল্যান্ড নামের উৎপত্তি:
গোর্খা জনগোষ্ঠী:
- গোর্খারা মূলত নেপাল থেকে আসা একটি জাতিগোষ্ঠী যারা দার্জিলিং ও সংলগ্ন পার্বত্য অঞ্চলে বসবাস করে।
- তারা নিজেদের ভাষা, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য ধরে রেখেছে।
- "গোর্খা" নামটি এসেছে নেপালের গোর্খা অঞ্চলের নাম থেকে যা ঐতিহাসিকভাবে এক শক্তিশালী সামরিক জাতি হিসেবে পরিচিত।
দার্জিলিং ও কালিম্পং অঞ্চল:
- দার্জিলিং, কালিম্পং এবং দোয়ারস অঞ্চল দীর্ঘদিন ধরেই গোর্খাদের আবাসস্থল।এই এলাকাগুলোই গোর্খাল্যান্ডের প্রস্তাবিত সীমান্ত হিসেবে বিবেচিত।
গোর্খাল্যান্ডের রাজনৈতিক আন্দোলন:
আন্দোলনের শুরু:
- ১৯৮০-এর দশকে গোর্খা ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট (GNLF) দলের নেতৃত্বে গোর্খাল্যান্ডের জন্য প্রথম বৃহৎ আন্দোলন শুরু হয়।এর প্রধান লক্ষ্য ছিল দার্জিলিংকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে পৃথক করে একটি স্বতন্ত্র রাজ্য গঠন করা।
আঞ্চলিক ভাষা ও সংস্কৃতি:
- গোর্খারা দাবি করেন যে তাদের সংস্কৃতি, ভাষা এবং ঐতিহ্য পশ্চিমবঙ্গের মূল ভূখণ্ড থেকে আলাদা।
- দার্জিলিং পার্বত্য অঞ্চলকে গোর্খাল্যান্ড নামে আলাদা রাজ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিলে তাদের স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত হবে।
২০১৩-২০১৭ সালের আন্দোলন:
- ২০১৩ সালে এবং ২০১৭ সালে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা (GJM) আন্দোলনের মাধ্যমে গোর্খাল্যান্ডের দাবি আরও তীব্র হয়।
- ২০১৭ সালের আন্দোলনে দার্জিলিং পুরোপুরি বন্ধ ছিল প্রায় ১০০ দিন যা ভারতের অন্যতম দীর্ঘস্থায়ী বনধ।
বর্তমান পরিস্থিতি:
- গোর্খাল্যান্ডের জন্য রাজ্য গঠনের প্রস্তাব এখনো ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের বিবেচনার বিষয়।যদিও এই অঞ্চলে গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (GTA) নামে একটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা গঠন করা হয়েছে।
গোর্খাল্যান্ডের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য:
- ভাষা:
- এখানে নেপালি ভাষা প্রধান।এটি ভারতীয় সংবিধানের ৮ম তফসিলে অন্তর্ভুক্ত যা একটি স্বীকৃত ভাষা।
- ধর্ম ও উৎসব:
- গোর্খারা প্রধানত হিন্দু এবং বৌদ্ধ।তারা দশাই, তিহার, লোসার ইত্যাদি উৎসব উদযাপন করে।
- সামাজিক অবদান:
- গোর্খা জনগোষ্ঠী ভারতীয় সেনাবাহিনীতে তাদের অবদানের জন্য বিখ্যাত। গোর্খা রেজিমেন্ট ভারতের অন্যতম সম্মানিত সামরিক রেজিমেন্ট।
গোর্খাল্যান্ড নাম নিয়ে বিতর্ক:
- পশ্চিমবঙ্গের বিরোধিতা:
- পশ্চিমবঙ্গ সরকার গোর্খাল্যান্ড রাজ্য গঠনের বিরোধিতা করে কারণ এটি রাজ্যের ভৌগোলিক এবং রাজনৈতিক অখণ্ডতা ভঙ্গ করতে পারে।
- পর্যটন শিল্প:
- দার্জিলিং একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন অঞ্চল। আলাদা রাজ্য হলে পর্যটন শিল্পে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করা হয়।
- অর্থনৈতিক বিষয়:
- দার্জিলিং চা শিল্প এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক সম্পদ পশ্চিমবঙ্গের রাজস্বের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
দার্জিলিংকে গোর্খাল্যান্ড বলা হয় কারণ এটি গোর্খা জনগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক কেন্দ্রবিন্দু।যদিও গোর্খাল্যান্ড নিয়ে রাজনৈতিক আন্দোলন এবং বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে, এটি দার্জিলিংয়ের মানুষের পরিচিতি এবং মর্যাদার প্রতীক।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy
Support
@heroism Initiative by Delegating your Steem Power
ধন্যবাদ।সবাই ভালো থাকবেন। |
|| Community Page | Discord Group ||
Posted using SteemPro Mobile
PUSS COIN:BUY/SELL