আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি অনেক অনেক ভাল আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হলাম হাড় কিপটি নাটকের ১০৫ পর্বের মধ্য থেকে ৫৫ তম পর্ব রিভিউ করে শেয়ার করার জন্য। আশা করি আমার এই রিভিউ পোস্ট আপনাদের অনেক অনেক ভালো লাগবে।
মিলন আর শিবানী কমলাবানুর কাছে এসেছে গোল্লার জন্য নালিশ করতে। ইতোমধ্যে তারা কমলাবানুর কাছে বেশ অনেক কথা বলল। কমলা বানু অনেক ভালো একজন মহিলা যার জন্য সে কোন উচ্চস্বরে কথা বলে না বরঞ্চ ঝামেলার বিষয়গুলো সমাধান করার চেষ্টা করেন। তার এমন গুণাবলী সবাইকে মুগ্ধ করে। যখন তারা সবাই কথা বলছিল এই মুহূর্তে ঘরের মধ্য থেকে কমলা বানুর একমাত্র মেয়ের জামাই বের হয়ে আসে। শিবানী কে দেখে সে আনন্দ পায়। তার পকেটে থাকা পাত্রীর ফটোটা শিবানীকে একটু দেখতে বলে। কিন্তু শিবানী মনে করে দুলাভাইটা কোন পাত্রের ছবি তাতে দেখানোর চেষ্টা করছে। এর আগে একটি পাত্রর ছবি দেখে অনেক কাহিনী হয়েছে তার জীবনে। তাই সে আর দেখতে চায় না। এজন্য পাত্রর ছবি না দেখে দৌড়ে পালিয়ে গেল দুলাভাই এবং কমলাবানু আন্টির পাশ থেকে। কিন্তু বিষয়টা দুলাভাই কিছুই বুঝতে পারল না কেন ফটো দেখার কথা বলে সে পালিয়ে যাবে। তবে এই বিষয়টা বেশ ভালোভাবেই বুঝতে পারল কমলাবানু আন্টি। তাই জামাইয়ের পাশ থেকে সেও হাসতে হাসতে সরে গেল।
যখন মজনু দোকান চালাতো তখন হারাধন দত্ত তার কাছে গিয়ে বেশ অনেক কথা কাটাকাটি করতো এবং ফ্রিতে চা খাওয়ার চেষ্টা করত। এখন মজনুর বড় ভাই ফরহাদ যখন দোকান চালাচ্ছে হারাধন দত্ত সেখানে উপস্থিত হয়েছে এবং আগের মত ফ্রি ভাবে চা খাওয়ার আশা করছেন। কিন্তু মজনুর বন্ধু বলল এখন কিন্তু মজনু নাই ফরহাদের চা পান করা কিন্তু অতি সহজ নয়। যেমন কথা ঠিক সেভাবেই তার পরিচয় তুলে ধরল ফরহাদ। হারাধন দত্ত হাত দেখার জন্য টাকা ইনকামের ধান্দা করেছিল কিন্তু ফরহাদ দ্রুত সেই ফয়সালা করলো সবাইকে দোকান থেকে তাড়িয়ে দিয়ে। কারন সে দোকান দিয়েছে নিজে ইনকাম করার জন্য,দোকানে তার চেয়ার টেবিলে বসে অন্যের ইনকাম করার জন্য নয়। তবে এই বিষয়টা নিয়ে যখন ফরহাদ তার স্ত্রীর সাথে কথা বলছিল তখন স্ত্রী তার ভুলটা ধরিয়ে দেয়। কারণ বাবার সম্পত্তিতে মজনুর ভাগ রয়েছে সেটা তার বড় ভাইকে বুঝতে হবে। তাই মাথা না গরম করে ছোট ভাইয়ের বিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করুক এবং তার সম্পত্তি বুঝিয়ে দিক এটাই সবচেয়ে ভালো হয়।
গোল্লা দীর্ঘদিন লক্ষ্য করে আসছে মামা তো দুই কুলাঙ্গার ভাইয়ের প্রেম কাহিনী। তাই সে এখন তার মত চাচ্ছে বড়টা অবশ্যই চুমকিকে বিয়ে করে ফেলুক তার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে। এরপর বাচ্চা কাচ্চা হলে অবশ্যই তার কৃপণ মামা মেনে নিতে বাধ্য হবে। তবে গোল্লার বাড়িতে মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টা মোটেও কমলা বানু গ্রহণযোগ্য বলে মনে করছেনা। কারণ তার স্বামীকে না জানিয়ে এমন একটা বিয়ের বিষয় পরবর্তীতে যদি কোন ঝামেলা সৃষ্টি হয়। প্রথমত গোল্লার মামাতো বড় ভাই ফজর রাজি হয়েছিল কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায় সে একটু পিছু টান ভাব। যে বিয়ে করবে তার যদি মন দুর্বল হয় তাহলে আর কি করার। তারপরেও গোল্লা তার সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সকাল বিকাল রাত যে কোন মুহূর্তে সুন্দর পরামর্শ দিয়ে। কিন্তু রাতে পরামর্শ দেয়ার মুহূর্তে মামাতো মেজ ভাই বহর তাদের পরামর্শ উৎপেতে শুনে ফেলে।
এদিকে ভূপেন তার বাবার অত্যাচারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে আর বাড়িতে থাকবে না কোন এক জমিদারের আশ্রয়স্থলে স্থান নিবেন। যেখানে এলাকার গরিব অসহায় মানুষদেরকে ফ্রি ভাবে খাওয়ানোর ব্যবস্থা রয়েছে। তার এমন অসহায় অনুভূতিটা গোল্লা নজর আলী কৃপণের কুলাঙ্গার দুই ছেলে এমন কি ভারত থেকে আগত দুই মামার মনে কষ্ট দেয়। তারা পাশে থেকেও ভাগ্নের জন্য কিছু করতে পারছে না। এদিকে বাবার অনেক সয় সম্পত্তি থাকা সত্ত্বেও বাবা ছেলের দুঃখ বোঝেনা। অবশেষে তার এমন সিদ্ধান্তই যেন নিতে হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়টা যখন দুই মামা এসে তার বাবা হারাধনকে বলল, হারাধন ছেলের এমন চিন্তা ধারাকে সাধুবাদ জানালো। সে মনে করলো পাড়াগাঁয়ের ফালতু চ্যাংড়াদের সাথে না বেড়িয়ে, সেখানেই যাক এটাই বেটার। কিন্তু ছেলের ভবিষ্যৎ যে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তার বিয়ে দেওয়ার বিষয়টা এগুলো যেন তার বাবার কাছে কোন কিছু মনে হয় না। তাই শত বোঝানোর চেষ্টা করেও মামারা ব্যর্থ হয়।
রেশমার বাবাকে শাসন করেছে তার সাথে অপমানজনক অনেক কথা বলেছে নজর আলী। এজন্য রেশমা আর নহরের প্রেম যেন নষ্ট হয়ে যাওয়ার পথে, তাই মহা আনন্দে রয়েছে নজর আলী কৃপণ। সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এখন যদি বড় ছেলের প্রেমিকার বাবাকে শাসন করা যায় বা অপমান করা যায়, তাহলে অবশ্যই চুমকি তার বড় ছেলের পথ থেকে সরে দাঁড়াবে। তাই মেজো ছেলেকে সাথে করে চুমকির বাড়ির দিকে অগ্রসর হচ্ছিল এমন অবস্থায় পথের মধ্যে চুমকির সাথে দেখা। তাদের চিন্তাধারা পুরা উল্টে গেল চুমকির সাথে কথোপকথনে। তাছাড়া এমনটাই ছিল চুমকির চিন্তা ছেলের সাথে হাত ধরে পালিয়ে যাবে এবং তার বাবাকে বলে দিবে যেন শ্বশুরের নামে একটা মামলা করে দেয়। নজর আলী এমন সাংঘাতিক কথা শুনে পরিকল্পিত চিন্তাধারা যেন ভেস্তে গেল।
হাড় কিপটে নাটকটা আমার কাছে অনেক অনেক ভালো লাগে। তাই এ নাটকের অনেকগুলো পর্ব আমি একাধিকবার দেখেছি আর চেষ্টা করছিলাম আপনাদের মাঝে সব সময় এই নাটকের পর্বগুলো একের পর এক রিভিউ করে শেয়ার করতে। কারণ এখানে পরিচালকরা অভিনয় এত সুন্দর ভাবে পরিচালনা করেছে প্রত্যেক অভিনেতা যেন নিখুঁতভাবে তাদের অভিনয় উপস্থাপন করেছেন এবং দর্শকদের আনন্দ দিয়েছেন। আমরা সব সময় লক্ষ্য করে থাকি কৃপণরা তাদের কৃপণতা কিভাবে জয় করা যায় সে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। একদিকে ফরহাদ দোকানদার আরেক দিকে হারাধন দত্ত আর নাটকের প্রধান কৃপণ নজর আলী তাদের কৃপণতার শাখা-প্রশাখা বিস্তার করতে থাকেন নিজেদের কৌশল মোতাবেক। এতে তাদের ক্ষতি হচ্ছে কি ভালো হচ্ছে তা দেখার নেই। নিজেদের জ্ঞানে যেমনটা মনে হচ্ছে সেটাই চালিয়ে যাচ্ছে। ফরহাদ দোকান এমনভাবে জনগণের মাঝে উপস্থাপন করে যেন জনগণ তার দোকানের আশেপাশে উপস্থিত হতে হলেই আগে টাকা ফেলতে হবে নাই কেউ সেখানে দাঁড়াতে পারবেনা। হারাধন দত্ত নিজের টাকা পয়সা চিন্তা ভাবনা বোঝে কিন্তু ছেলের জীবন নিয়ে ভাবে না। এদিকে নজর আলী কৃপণ কিভাবে ছেলের প্রেমিকাদেরকে ছেলেদের জীবন থেকে দূর করা যায় সেই চিন্তায় ব্যস্ত। আর এই সব মিলে বেশ দারুন অভিনয় আমরা লক্ষ্য করি। এই পর্বের আমরা লক্ষ্য করেছি।তবে সবচেয়ে হাস্যকর আর ভালোলাগার অভিনয় ছিল নজর আলী কৃপণ এবং তার মেজো ছেলের পরিকল্পিত চিন্তা চুমকির কয়েকটা কথাতেই যেন উল্টে যায়। আর এখানেই মনে করি এই পর্বের সাফল্যতা অর্জন হয়েছে।
ব্যক্তিগত রেটিং:
৮.৭৫/১০
নাটকের লিংক
Loading iframe
সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন নাটক রিভিউতে, ততক্ষণ ভালো থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।