মোবাইল পড়ে পাওয়ার গল্প

sumon09 -


আসসালামু আলাইকুম



হাই বন্ধুরা!

আমার গল্পের রাজ্যে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগতম। পূর্বসপ্তার ন্যায় আজকে উপস্থিত হয়ে গেলাম সুন্দর একটি গল্প নিয়ে। যে গল্পের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন আমার জীবনে কোন একটা লুকিয়ে থাকা ঘটনা। একজনের জানা ঘটনা অন্য জনের মাঝে ব্যক্ত করার মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হয় অজানা তথ্য। ঠিক তেমনি সুন্দর একটি গল্প নিয়ে উপস্থিত হয়েছি আজ। আশা করবো আবার আজকের এই বাস্তব জীবনের গল্পটা আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। তাহলে চলো না দেরি না করে সম্পূর্ণ গল্পটা পড়ে। আর এই গল্পের মধ্য দিয়ে পড়ে পাওয়া মোবাইল ফেরত দেওয়ার বিস্তারিত জানি।

photography device:
Infinix Hot 11s

What3words Location


মোবাইলের গল্প:


আমি আর আমার বন্ধু মারুফ,একদিন গাংনী বাজার থেকে বাজার করে বাড়ি ফিরছিলাম। ফিরতে পথে রায়পুর নামক একটি গ্রাম। সে গ্রামে বাজারের কিছুটা পশ্চিম পাশে মোটরসাইকেলে আসতে আমার চোখে বাঁধলো রাস্তার উপর একটা বাটন আলা মোবাইল সেট পড়ে রয়েছে। সম্ভবত ২০১৬-১৭ সাল হবে। তখন বাটন আলা একটু বড় সাইজের মোবাইল গুলোর টান ও মান বেশি ছিল। সবে মাত্র গ্রাম গঞ্জে এন্ড্রয়েড মোবাইলের প্রচলন শুরু হয়েছে। তবে গ্রাম খুঁজলে কয়েকটা বাড়িতে হাতেগুনে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল হয়েছে কি। তাহলে বুঝতে পারছেন তখন বাটন আলা বড় মোবাইলগুলোর মূল্যায়নটা যথেষ্ট ছিল। ঠিক তেমনি বড় একটা মোবাইল ফোন। আমি দেখামাত্র মারুফকে বললাম মারুফ একটা মোবাইল পড়ে আছে রাস্তার উপরে। মারুফ গাড়ি স্লো করল এবং তাকিয়ে দেখলো। দেখল সত্যি তো একটা মোবাইল। এরপর গাড়ি থামালো, মোটরসাইকেল থেকে নেমেই মোবাইলটা মারুক নিয়ে আসলো। এরপর মোবাইলটা হাতে ধরে বলল মোবাইল আলার কপাল ভালো, মোবাইলটা আমাদের নজরে পড়েছে।


এরপর সে মোবাইলটা হাতে তুলে নিল, তখন লক্ষ্য করে দেখল মোবাইলটা অফ। সে ভাবলো মনে হয় নষ্ট মোবাইল হতে পারে অথবা গাড়ি থেকে পড়ে হয়তো নষ্ট হয়ে গেছে। এরপর পেছনের অংশটা সে খুলে ফেলল। ভেতরে লক্ষ্য করে দেখলো মোবাইলে যত বড় ব্যাটারি প্রয়োজন তত বড় ব্যাটারি নাই,ব্যাটারিটা একটু ছোট এবং পন্স স্যান্ডেল কেটে বাকি অংশটা পূরণ করে লাগিয়ে রেখেছে যেন ব্যাটারিটা ভালোভাবে আটকায়। এমন দৃশ্য দেখে মারুফ হেঁসে উঠলো। বলল এ আবার কোন মেকানিক্স এর কাজ? মোবাইলের মধ্যে ব্যাটারি যত সাইজের প্রয়োজন,তত সাইজের না দিয়ে স্যান্ডেল কেটে ব্যাটারির অংশ পূরণ করে দিয়েছে ছোট ব্যাটারির সাথে যুক্ত করে। যাই হোক বিষয়টা আমাদের কাছে হাস্যকর মনে হল। পন্ডিতি করে এমনটাই করে দিয়েছে কোন অজানা ব্যক্তির মোবাইলটা। সব পাবলিক তো আর মোবাইল সম্পর্কে ধারণা রাখেনা। মেকানিক্স এর কাছে নিয়ে যায়, তারা তাদের মত করে সার্ভিসিং করে দেয়। তাই বলে যে এত বড় ধোকা দিয়ে রাখবে কে জানে।


এরপর সে ব্যাটারিটা নড়িয়ে চড়িয়ে আবার যেভাবে সেট করা ছিল, সেভাবে সেট করলো। কভার লাগালো, সেট অন করার চেষ্টা করল। মোবাইলটা সাথে সাথে অন হয়ে গেল। মারুফ মোবাইলটা নেড়েচেড়ে দেখল এবং মডেলটা দেখল। এরপর সে অনুমানিক বলল ওই সময়ের ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা দামের বাটন আলা মোবাইল ছিল সেটা। বলতে গেলে সে সময় এমন একটা মোবাইল বড় মানের বিষয়। তখন সে বলল মোবাইল আলার কপাল ভালো, মোবাইলটা আমাদের হাতে পড়েছে। কিন্তু খেয়াল করে দেখলো মোবাইলে চার্জ খুবই কম। কারণ যেমন মোবাইল তেমন ব্যাটারি ভেতরে নাই। তবে ওই মুহূর্তে আমাদের দুজনার বাড়িতে একাধিক ব্যাটারি থাকতো। কারন আমরা টুকটাক তাঁতালের কাজ করতাম। এরপর বাড়িতে নিয়ে আসা হল। আমাদের কাছে থাকা ভালো ব্যাটারি দিয়ে পরীক্ষা করা হলো। মোবাইলটা একদম ফ্রেশ এবং ভালো। ইতোমধ্যে যে মোবাইল হারিয়েছে সে একাধিকবার ট্রাই করেছে অন্য সেট দিয়ে। তাই মিস কলের নোটিফিকেশন আসতে থাকলো মেসেজে।


তখন মারুক বলল যার মোবাইল আমি তার হাতের সেভাবে ফিরিয়ে দিতে চাই। কারণ একটা বিষয় আমরা জানি একজন ব্যক্তির মোবাইল হারিয়ে গেলে আর একজন ব্যক্তি খোঁজ করার চেষ্টা করে এবং সে মোবাইলটা নিজের বলে দাবি করে হাতে পাওয়ার জন্য। আর তখন তো সিমের এনআইডি কার্ড দিয়ে নিবন্ধন ছিল কম, সম্ভবত চালু হচ্ছিল তখন। এরপর মোবাইলের মধ্যে কয়েকটা ফটো দেখে, সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে সঠিক ব্যক্তির হাতে সে মোবাইলটা তুলে দেয়। আর মোবাইলটা হাতে পাওয়া মাত্র সেই ব্যক্তি অনেক খুশি হয়েছিলেন। তখন তিনি মোবাইলের আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। তিনি ভেবেছিলেন মোবাইলটা হয়তো আর পাবেন না। সেখানে মারুফ এই কথাই বলেছিলেন, আপনার কপাল ভালো! আমাদের দুজনের চোখের সামনে আপনার মোবাইলটা পড়েছে। আর এভাবেই আমরা কাঙ্খিত লোকের হাতে মোবাইলটা ফিরিয়ে দিয়েছিলাম।


গল্পটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।



গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
ফটোগ্রাফিহনুমান
বিষয়অতীত ঘটনা
ফটোগ্রাফি ডিভাইসInfinix Hot 11s
ঘটনার লোকেশনজুগীরগোফা
ব্লগারSumon
ঠিকানাগাংনী-মেহেরপুর, বাংলাদেশ


পুনরায় ফিরে আসবো নতুন কোন গল্প নিয়ে। ততক্ষণ ভালো থাকুন সবাই, সবার জন্য শুভকামনা রইল। আল্লাহ হাফেজ।