আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। প্রথমে বলে রাখি,
মানুষ ভুলের উর্ধ্বে নয়, ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
আজকে আমি শিক্ষার আলো নিয়ে আরেকটি পর্ব শেয়ার করতে চলেছি। শিক্ষার আলো নিয়ে আমি বেশ কিছুটা পোস্ট আপনাদের মাঝে শেয়ার করব, ইতোমধ্যে কয়টা পোস্ট শেয়ার করেছি। আমি মনে করি, দিনশেষে আমাদের মধ্যে জ্ঞানের ভান্ডার টা যেন খালি হয়ে যাচ্ছে। আর এজন্য আমাদের সমাজটা অবক্ষয়ের দিকে চলে যাচ্ছে। তাই এই বিষয়কে কেন্দ্র করে আমি অনেকগুলো সচেতন মূলক পোস্ট নিয়ে উপস্থিত হব। আজকের টাইটেল পড়ে আপনারা বুঝে গেছেন, ব্যক্তির মধ্যে সুশিক্ষার আলো কতটা থাকা প্রয়োজন আর কেমন বোধশক্তি থাকলে সে শিক্ষার আলোর সফলতা আসবে।
আলোচনার বিষয়:
শিক্ষার আলো
আমরা মানুষ, সৃষ্টির সেরা জীব। মহান সৃষ্টিকর্তা একমাত্র মানুষকে সবচেয়ে বেশি বিবেক, জ্ঞান, সচেতন দৃষ্টিভঙ্গি, বাক শক্তি ইত্যাদি দিয়েছেন। একটি পশুর কথা বলি। একটি অবলা প্রাণী যে কোন মুহূর্তে ভুল কাজ করতে পারে আবার সঠিক কাজ করতে পারে এর দোষ গুণ নির্ণয় করে লাভ নেই। কারণ সে অবলা। কিন্তু মানুষ জাগ্রত বিবেকসম্পন্ন হয়ে যদি পশুর মত আচরণ করে তাহলে মানুষ তাকে খারাপ দৃষ্টিতে দেখবে। আর সমাজে ১০০ জন ব্যক্তির মধ্যে যদি ৮০০ মানুষ এমন আচরণে লিপ্ত হয়, তাহলে সমাজটা হয়ে যাবে নষ্ট। সমাজকে সুন্দর রূপে গড়ে তুলতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জ্ঞানীগুণীদের উপস্থিতি এবং জ্ঞান মূলক কথা সর্বদা সমাজের মধ্যে রয়েছে কিন্তু তারপরেও মানুষ কেন আগের চেয়ে এখন খারাপ আচরণে বেশি লিপ্ত হচ্ছে? আমি মনে করি এগুলো মানুষের জাগ্রত বিবেকের অভার রয়েছে। আর এর মধ্যে প্রধান কারণটা হচ্ছে ব্যক্তিত্বের মধ্যে শিক্ষার আলো পৌঁছায়নি। আর যদি পৌঁছে থাকে সেটা কার্যকর হয়নি। আপনি আমি ভালো-মন্দ উভয় কিছু বিশ্লেষণ করতে জানি। কোনটা করলে ভালো হবে কোনটা করলে খারাপ হবে সেই ন্যূনতমা বোধশক্তি টা সবার মধ্যে রয়েছে। তবু কেন আপনার আমার মাধ্যমে খারাপ কাজটা হয়ে যায়? জেনে শুনে বুঝেও তারপরে কেন আমরা খারাপ কাজে লিপ্ত হই?
আমি মনে করি আমাদের ব্যক্তিত্বের মাঝে সেই শিক্ষার আলো পরিপূর্ণতা পায়নি। ব্যক্তিত্বের মাঝে শিক্ষার আলো এসেছে, ১০০% পরিপূর্ণতা লাভ করে চলাতে সক্ষম হয়নি আমরা। যদিও ৫০% ব্যক্তিত্বের মাঝে শিক্ষার আলো আসে, আমরা সেটা এপ্লাই করি না। বরং সেটাকে আধারে ঠেলে দেয় এবং বুঝে শুনেও মূর্খের পরিচয় দিয়ে চলি প্রতিনিয়ত। এটা আমাদের দুর্বলতা,যার জন্য প্রতিনিয়ত আমাদের সমাজটা নষ্টের দিকে চলে যাচ্ছে। এখন সমাজটা কেমন নষ্টের দিকে চলে যাচ্ছে একটু আঙ্গুল দিয়ে দেখা যাক। একটা সময় ছিল শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তি বা বয়সে বড় ব্যক্তিদের দেখলে ছোটরা আগে থেকেই নিজেকে সংযত করে চলত। ভাবতো না জানি আমার কোন আচরণে শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তি বা বয়সে বড় ব্যক্তিরা ভুল ভাববে এবং তার দৃষ্টিতে আমি খারাপ হয়ে যেতে পারি। আর এখন শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিদের সম্মান দেওয়া তো দূরে থাক ছোটরা অশ্লীল গান বাজনা নিজেরা তো শোনে এবং বড়দের শোনাতে পারলে মনে হয় ধন্য হয়। তাহলে আমাদের জাতি কতটা মূর্খের দিকে চলে যাচ্ছে? তাদের সঠিক পথে ফিরিয়ে আনবে কে? সঠিক পথে ফেরানো কি সম্ভব? আমি মনে করি অবশ্যই সঠিক পথে আনা সম্ভব। তবে কঠোর স্ট্রাগল করতে হবে অভিভাবকদের। অন্যথায় এ জাতি ধ্বংসের দিকে চলে যাবে। এমন একটা সময় আসবে বর্বরতা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আজকে যদি ব্যক্তিত্বের মাঝে শিক্ষা থাকতো তাহলে বর্তমান সমাজের ছেলেমেয়েরা ওপেনলি চলাচল করতে পারত না। এখানে আমি ওপেনলি চলাচল বলতে সেটাকে বুঝিয়েছি তাদের মুখের লাগাম নেই, যে কোন মুহূর্তে মুখের কথাবাত্রা সকলের মাঝে খারাপ অশ্লীলতা নিয়ে বলে ফেলে। এমনকি নিজেদের সংযত রেখে পথ চলে না অনেকে। একটা সময় মা-বোনেরা কত সুন্দর ভাবে সংযত হয়ে নিজেকে পর্দার মধ্যে আগলে রাখত। মূলত তাদের মধ্যে সেই ব্যক্তিত্বের শিক্ষা ছিল। চক্ষু লজ্জা, মান সম্মান হারানো চরিত্র নষ্টের ভয় ছিল। আর এখন এমন বেহায়াপনা চলাচল কথাবাত্রা যেন শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিদের লজ্জা দিয়ে দেয়। এমনকি প্রত্যেক ধর্মকে অবক্ষয় করে চলে। যেটা ধর্মবিরতি ক্রিয়াকলাপ। মিডিয়া যোগাযোগ ব্যবস্থা অনলাইন ব্যবস্থা উন্নতি হওয়ার পাশাপাশি ব্যাপক অবনতি হয়েছে জনসমাজের। আপনি লাইকি, টিকটক, ইনস্টাগ্রাম, facebook, youtube এ জাতীয় মিডিয়াতে চোখ রাখতে গেলে আগেই আপনার চোখের সামনে উপস্থিত হবে অশ্লীল ভঙ্গের ও কথাবার্তার ভিডিও। আর সেখানে দেখবেন যুব সমাজের অবক্ষয়। যদি ব্যক্তিত্বের মাঝে শিক্ষার আলো থাকতো তাহলে তারা নিজেদের ইজ্জত মান সম্মান বিলিয়ে ভিডিও ধারণ করে মিডিয়াতে ছাড়তো না। যারা আজকে এমন বেহায়াপনা কার্যকলাপে লিপ্ত তাদের দ্বারা আরও হাজার হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যে ব্যক্তি নিজেকে কন্ট্রোল করতে চায় খারাপ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে, সে নিজেও জেনো কন্ট্রোল করতে পারে না। বিশেষ করে অবিবাহিত যুব সমাজ যেন প্রতিনিয়ত ধ্বংসের দিকে চলে যাচ্ছে এ সমস্ত বিষয়ের কারণে।
বলতে গেলে এখন অনেক কথা মনে আসতে থাকবে। তবে ব্লগটি বড় করতে চায়না। শুধু এই মেসেজ দিতে চাই। আগামী প্রজন্মকে সঠিক পথে পরিচালনা করতে হলে আমাদের অভিভাবকদের, দেশের আইন শৃঙ্খলা কঠোর হতে হবে। পিতা-মাতা জেনে শুনেও যদি সন্তানকে খারাপ পথ থেকে ফিরাতে না পারে, সেটা সেই পিতা-মাতার ব্যর্থতা। এখন আরও একটা কথা উদাহরণে বোঝানো যায় "বাবা যদি সিগারেট টানে, ছেলে তো টানবেই" তাই অভিভাবককে আগে সংযুক্ত হতে হবে। নিজের মধ্যে অর্থাৎ ব্যক্তিত্বের মাঝে শিক্ষার আলো প্রতিষ্ঠিত করতে হবে পাশাপাশি নিজের আগামী ভবিষ্যতের আলোর পথ দেখাতে হবে। তা না হলে আমাদের জাতি ধ্বংস হবে খুব শীঘ্রই। আর এর জন্য আমরাই দায়ী হব।