হ্যালো বন্ধুরা
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজকে আমি আবারো আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি গত বছর ঠিক এই সময় আমি বেশ অসুস্থ ছিলাম। আর সেই অসুস্থ থাকার মুহূর্তের বিশেষ অনুভূতি ব্যক্ত করার জন্য এসেছি। আশা করি এই পোস্ট পড়লে অনেক কিছু জানতে পারবেন।
সুস্থতার মতো অসুস্থতাও মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ নেয়ামত: |
হয়তো অনেকে ভুলে গেছেন, আবার নতুন যারা জয়েন করেছেন তাদের অজানা। গত বছর আমি এই সময় বেশ অসুস্থ ছিলাম। আমার বাম পায়ে একটা সমস্যা হয়েছে। ছোটকালে ভুল ট্রিটমেন্টের জন্য আমার বাম পায়ে একটি ক্ষত সৃষ্টি হয়। এমনকি পাঁচ আঙ্গুলের মাঝের আঙ্গুলটা মাঝ বরাবর ২ ইঞ্চি হাড় নেই। ছোটকালে সেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেছে। গত বছর সেখানে ইনফেকশন হয়েছিল। বিয়ের পূর্বে ঘর নির্মাণে বেশ গাছ কাটা পড়েছিল। আমি একটি মেহগনি গাছে উঠেছিলাম নামার সময় আমার বাম পায়ের ওই জায়গায় বেশ মুচাড় মত আঘাত লেগেছিল। কিন্তু বিয়ের পরপর আস্তে আস্তে ওই জায়গায় সমস্যা হতে থাকে এবং ইনফেকশন হতে থাকে আবার। বিয়ের পর এমন অবস্থা আমাকে হতাশ করে ফেলল। বেশ কিছুদিন আমি স্কুলে এটেন্ড করতে পারলাম না। যতদিন যাই তত যেন আমার বাপ পায়ের ব্যথা বাড়তে থাকলো। তাই প্রথমত আমার খালাতো ভাইয়ের শরণাপন্ন হলাম। উনি যেহেতু সরকারি ডাক্তার। উনাদের সেবা ক্লিনিকে ব্লাড পরীক্ষা করলাম। এদিকে রক্তে কোন সুগার নেই। বেশ কিছু ওষুধ লিখে দেওয়া হল। পাশের বাজার থেকে ওষুধ কিনে নিলাম। বেশ কিছুদিন খেয়ে দেখলাম,এতে কোন ফল হলো না। দিন দিন যেন আমি চলতেই অক্ষম হয়ে গেলাম। যখন ছোট ছিলাম, আমার বড় নানা বলেছিল ভবিষ্যতে এই জায়গা নিয়ে সমস্যা আসতে পারে। তবে হাড়ের ডাক্তার দেখিয়ে নিরাপদে থাকতে হবে। খেলাধুলা সহ অনেক কিছু মানা হয়ে গেল। সেই থেকে জীবনে খেলাধুলা সব মাটি হয়ে গেল। ক্লাস এইটে থাকাকালে খেলাধুলা বন্ধ করেছি। আমি দৌড়াদৌড়িতে ফার্স্ট থাকতাম সবসময়। তবে যাই হোক বেশ ভালো ছিলাম দীর্ঘদিন। কোন প্রকার সমস্যা ফেস করি নাই। তবে এবার যেন পড়ে গেলাম বিপদে। তাই বেশ আতঙ্কে ছিলাম।
| |
এরপর কুষ্টিয়া ডায়াবেটিস সেন্টারে উপস্থিত হলাম। যেহেতু পরীক্ষা করেছি ডায়াবেটিস নেই। তবে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের দক্ষিণে ডায়াবেটিস সেন্টার। সেখানে আব্দুল আজিজ বলে এক হার বিশেষজ্ঞ ডাক্তার রয়েছে। উনি ঢাকা বারডেম হাসপাতালে রিটায়ার্ড পার্সন। উনার কাছে আমার আব্বা দীর্ঘদিন চিকিৎসা হন। আব্বা আমাকে উনার কাছে নিয়ে যেতে চাইলেন। পরিবারের সাথে নিয়ে আমি উনার কাছে উপস্থিত হয়েছিলাম। আমার এই আতঙ্কের মুহূর্তে পরিবার সেও যেন আমার থেকে দূরে থাকতে চাইল না। মনের টান এতটাই প্রবল ছিল সাথে সাথে চলে গেল। আমি অসুস্থ এরপরেও তাকে আমি শান্তনা দিয়েছি, হয়তো বিয়ের পরপর আমার এই অবস্থার পিছনে আল্লাহর কোন পরীক্ষা রয়েছে। কারণ একদম ছোট ছিলাম যখন, সমস্যা হয়েছিল তখনই, এর পরে আর কোন কালে কোন সমস্যা হয়নি। হঠাৎ এখন এই সমস্যার পেছনে নির্দিষ্ট কোন কারণ রয়েছে বা পরীক্ষা রয়েছে। ডাক্তার আমার পা দেখলেন। দেখে বললেন ওখানে একটু আঘাত লেগেছে তাই ইনফেকশন হয়েছে। প্রেসক্রিপশন লিখা দেখতে পাচ্ছেন,বেশ কিছু ঔষধ লিখে দিয়েছেন। আর বলে দিয়েছিলেন টানা ১৫ থেকে ২০ দিন বেড থেকে যেন আমি না নিচে যায়। কথা উঠল তাহলে ফ্রেশ হব কিভাবে। তখন বলে দিলেন যতটা সম্ভব হয় রুমের মধ্যে থেকেই ফ্রেশ হলে ভালো হয়। সুস্থ হতে হলে ধৈর্য ধরতে হবে। এরপর ডাক্তার দেখিয়ে যখন বাড়ি ফিরছিলাম। এই মুহূর্তে আমার শ্বশুর মোবাইলে ফোন দিলে। এরপর ফোন ধরে এত জোরে আমার জন্য কান্না করছিলেন,আমি ভাবতে পারি নাই। আমি মাত্র নতুন জামাই। আমার এই অবস্থা শুনে শশুরের এতটা মনে মায়া লেগেছে সত্যি অবাক করা বিষয়। কিন্তু আমার হাত থেকে মোবাইলটা আমার আব্বু হাসে মুখে নিয়ে হাসতে হাসতে আমার শ্বশুরকে সান্ত্বনা দিলেন। আব্বা বলে দিলেন এমন ডাক্তারের কাছে এনেছি আমার ছেলে সুস্থ হতে এক মাসও সময় লাগবে না ইনশাআল্লাহ। তখন আমার শশুর বুঝতে পারলো।
ইতোমধ্যে আমাদের স্কুলের পরীক্ষা চলছিল। মুস্তাফিজুরের জন্য খুব টাফ ব্যাপার হয়ে গেছিল সবকিছু সামলানো। তারপরেও খুব সুন্দর ম্যানেজমেন্ট করে নিয়েছিলেন পরীক্ষার বিষয়ে। এদিকে আমার এই অবস্থা। ডাক্তার তো কি বলে দিয়েছে বুঝতে পারছেন। তবুও বিদ্যালয়ের স্বার্থে ১০ দিনের পর আমি স্কুলে এটেন্ড করলাম। স্কুলের শিক্ষক মন্ডলী আমাকে স্বাগত জানালো, ছাত্র-ছাত্রীরা আমাকে দেখে খুব খুশি হয়েছিল। কোনরকম অ্যাটেন্ড করে পরীক্ষার হলেও উপস্থিত থাকলাম। তবে স্কুলে এমন উপস্থিত হওয়ায় আমার সমস্যা যেন পুনরায় বৃদ্ধি পেল। আবারো রেস্ট গ্রহণ করলাম। এরপর নিয়ম মেনে চলতে চলতে বেশ আরো কিছুদিন সময় লেগে গেল এবং সুস্থ হয়ে গেলাম আলহামদুলিল্লাহ। গত বছর এই সময়টা আমার জন্য বেশ ভয়াবহ ও কঠিন ছিল। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ আমাকে এই মুহূর্তে সুস্থ রেখেছেন। সকলে আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমার পায়ের সমস্যাটা যেন সব সময় সমাধান থাকে সেই দোয়া করবেন। সুস্থ অবস্থায় যেন সর্বদা আপনাদের সাথে চলতে পারি। আমি।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
বিষয় | অসুস্থতা |
লোকেশন | Location |
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | Infinix hot 11s |
ফটোগ্রাফার | @sumon09 |
দেশ | বাংলাদেশ |
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকুন সকলে। আল্লাহ হাফেজ। |
Comments