রুদ্ধশ্বাস দুই দিন-২
11 comments
গত পর্বে:
সেখানে থাকা লোকজন কে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা জানায়, যে তারা দেখেছে।এক রুটির দোকানদার রুটি খাইয়েছে। এরপর সে গাইবান্ধার বাসে চড়ে।বাসওয়ালা ও প্রতিবন্ধী ভেবে কিছু বলে নি বা নামিয়ে দেয়নি বাস থেকে। এখন বগুড়া থেকে গাইবান্ধার যাত্রা শুরু।
বর্তমান পর্বে:
মামারা সাথে গাইবান্ধা রওনা দেয়। যদিও ততক্ষণে রাত হয়ে গেছে। ওখানে গিয়ে খোজাখুজি করেও দীপা কে পাওয়া যায় নি। সবার কপালে চিন্তার ভাজ গাঢ় হচ্ছিল। অনেক রাত হয়ে যাওয়ায় সবাই আবার বাসায় চলে আসল।কারন অত রাতে আর খোজাখুজি সম্ভব না৷
পরের দিন আবার খোজাখুজি শুরু হবে এমন সময় একটা ঘটনা ঘটে,মামা খুজতে বের হবে এমন সময় একজন ভদ্রলোক মামাকে ডাক দেয়,কিন্ত মামা চিন্তিত থাকায় তার ডাক শুনতে পায়নি।তখন সেই লোকটি পাশের আরেকজনকে জিজ্ঞেস করে, "আরে দাদার কি হইছে।দাদা তো এমন মানুষ না।"তখন পাশের লোকটি জানায়, উনার মেয়ে হারিয়ে গেছে।
তখন লোকটি বলে,আরে আমি তো উনার মেয়েকে দেখেছি। তখন লোকটি তারাতারি এসে মামাকে আটকায় আর জানায় বিস্তারিত। লোকটির নাম দিলীপ।উনি গাইবান্ধার বোনারপাড়া গিয়েছিলেন উনার এক আত্মীয়র শেষকৃত্যে। সেখানে থেকে ফেরার পথে উনি দীপাকে ঘুরতে দেখেন।উনি ভেবেছিলেন দীপা বুঝি ঘুরতে গেছে।তাই কিছু বলে নি।
এবার একটু আশার আলো দেখা গেল।মামারা সাথে সাথেই রওনা দিলেন বাইক নিয়ে।দিলীপ নামের ভদ্রলোক ও সাথে গেল।তবে সেখানে গিয়ে দেখা গেল দীপা নেই। মামারা হাল ছাড়লেন না।আশেপাশের লোকজন কে ছবি দেখিয়ে জিজ্ঞাস করতে থাকে। তখন এক পান দোকানদার জানায় তিনি এই মেয়েকে দেখেছেন। তবে সে একটি অটোতে চড়ে কই যেন গেছে।মামারা হতাশ হয়েই পড়ছিলেন এমন সময় দোকানদার জানায় যে উনি অটোওয়ালা কে চেনে।
এবং একটু অপেক্ষা করলেই দেখা পাওয়া যাবে। মামারা সেখানে অপেক্ষা করতে লাগলেন।একটু পর সত্যই সেই অটোওয়ালা এল,তখন তাকে জিজ্ঞেস করলে জানায়, দীপা সত্যই তার অটোতে উঠেছিল।কিন্তু সব শেষ গন্তব্য যাবার পরেও যখন কোথাও নামে নি তখন অটো তে থাকা এক ভদ্রলোক ওকে নিয়ে যায়। সেখানেই আছে দীপা। আর অটোওয়ালা সেই লোককে চেনে। উনিই সাথে করে মামাদের সেই লোকের বাড়িতে নিয়ে যায়।
এবার ভগবান সহায় হল।দীপাকে ঐ ভদ্রলোকের বাড়িতেই পাওয়া গেল।মামারা যখন পৌছায় তখন ঐ ভদ্রলোকের বৌ দীপাকে খাওয়াচ্ছিল। অবশেষে দুই দিনের রুদ্ধশ্বাস মুহুর্ত কাটানোর পর অবশেষে দীপাকে পাওয়া গেল। মামারা ঐ ভদ্রলোককে উপহার দিতে চেয়েছিলেন।কিন্তু উনি নেন নি। উনার এই উদারতা মুগ্ধ করেছে সবাইকে। অবশেষে উনাকে অনেক ধন্যবাদ দিয়ে মামারা দীপাকে নিয়ে চলে আসে।
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
Comments