সবাইকে স্বাগতম জানাচ্ছি আমার বাংলা ব্লগের নতুন আয়োজন জীবনের গল্পের শো-তে । মূলত আমরা যেহেতু প্রথম থেকেই বলেছিলাম, রবিবারের আড্ডার কিছুটা ভিন্নতা হবে, ঠিক সেই ভিন্নতার জায়গা থেকেই, এই সংযোজন। মানুষের জীবনে কত গল্পই তো থাকে, কত সুখস্মৃতি থাকে, থাকে পাওয়া না পাওয়ার অভিজ্ঞতা কিংবা হারিয়ে ফেলার তিক্ততা কিংবা থাকে সফলতার হাজারো গল্প, যা হয়তো অনায়াসেই, অন্য কাউকে অনুপ্রাণিত করে ফেলে মুহূর্তেই। এই গল্পগুলো হয়তো অজানাই থেকে যায়, আমরা আসলে কান পেতে থাকি, এই গল্পগুলো শোনার জন্য। এইজন্য বাংলা ব্লগ আয়োজন করেছে, জীবনের গল্প। যেখানে অতিথি তার নিজের জীবনের গল্প অন্যদের সামনে অনায়াসেই বলে ফেলবে এবং অতিথি নিজের থেকেও বেশ হালকা হবে, সেটা হয়তো মনের দিক থেকে।
আজকের অতিথিঃ @narocky71 ভেরিফাইড সদস্য, আমার বাংলা ব্লগ
ফেলে আসা জীবন থেকে যদি কিছু কথা স্মৃতিচারণ করতেন।
আজকে মূলত আমি শেয়ার করবো আপনাদের সঙ্গে আমাদের বিয়ের ঘটনা। সনিয়া আমার খালাতো বোন ছিল,আমার বাবা চাইতো ওকে আমি বিয়ে করি। যেহেতু আমার বাবা প্রবাসে ছিল তাই প্রতিনিয়ত সেখান থেকে উপহার পাঠাতো সনিয়ার জন্য। তবে যেহেতু সনিয়া আমার খালাতো বোন ছিল, তাই শুরুতেই তাকে আমি ওই চোখে দেখতে পারিনি। পরে অবশ্য ধীরে ধীরে আত্মীয়-স্বজন ও সনিয়ার সঙ্গে কথা বলার পরে ওর প্রতি একটু দুর্বল হই। তবে যতদিনে আমি ওর প্রতি দুর্বল হয়ে যাই, তখন সেই কথা আর বাবাকে জানাতে পারিনি। বাবা তার আগে প্রবাসেই মারা যায়। বাবা মারা যাওয়ার পরে ভীষণ কঠিন সময় যায় আমাদের পরিবারে। তখন সনিয়া আমাকে বেশ মানসিকভাবে আশ্বস্ত করেছিল। তবে যেহেতু আমাদের পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ ছিল, তাই একটা সময়ের পরে গিয়ে সনিয়ার পরিবারের লোকজন বলেছিল, আমাকে বিদেশ যাওয়ার কথা। যদিও আমার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা ছিল না, কেননা আমি চাইতাম পরিবারের সঙ্গেই থাকি। তবে অবশেষে বাধ্য হয়ে আমার এক আত্মীয়কে টাকা দেই বিদেশ যাওয়ার জন্য। তবে দুঃখের বিষয় হচ্ছে, সেই আত্মীয় আমার সঙ্গে প্রতারণা করে এবং আমার বিদেশ যাওয়া হয় না বরং টাকাগুলো তিনি অন্য কাজে ব্যয় করেন। নিজের লোকের কাছ থেকে যখন এমন প্রতারণার শিকার হই, তখন মানসিকভাবে বেশ ভেঙ্গে পড়ি। সেই সময় আমার আর সনিয়ার বিয়ে হয়ে যায়, তারপর আমাদের সংগ্রামী জীবন শুরু হয়। সনিয়া বেশ চেষ্টা করে আমাদেরকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য, আমরা দুজনেই চাচ্ছিলাম নিজেদের অবস্থার পরিবর্তনে কাজ করতে। সেই সময় আমি কিছু খণ্ডকালীন ব্যবসাতে বিনিয়োগ করেছিলাম তবে ফলাফল খুব ভালো হয়নি। তখন আমাদের এলাকায় নেভলু ভাই কম্পিউটারের দোকান দিয়েছিল, সেই সূত্রেই ভাইয়ের সঙ্গে আমার পরিচয়। তিনি আমাকে নিজের ছোট ভাইয়ের মতো আদর করতেন, অবশেষে তার মাধ্যমেই স্টিমিটের সন্ধান পাই। এখানেও প্রচুর টাকা আমি বিনিয়োগ করি, তবে আমাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। আমরা এখন সপরিবারে ব্লগিং করছি এখানে, যদিও কিছু অর্থনৈতিক লোনের ভিতরে আছে, তবে তারপরেও বেশ বিন্দাস আছি।