আটা-ময়দা

shuvo35 -


source

গ্রামের যে সকল শিক্ষিত মানুষজন ছিল, তারা অধিকাংশ বহু আগেই শহরে চলে গিয়েছে। হয়তো সেটা জীবিকার তাগিদে। এখন যারা থাকে তারা মূলত প্রবীণ কিংবা কোন রকমে টেনেটুনে পড়াশোনা করেছে, এরকম লোকজনের বসতি এখন গ্রামে। তবে বেশিরভাগ লোকজনই প্রযুক্তি সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণা রাখে না।

আগে তো আমাকে নিয়ে বহু সমালোচনা হতো, তবে বর্তমানে তা কিছুটা কমেছে। হয়তো গুরুত্ব দেইনি বিধায় নিজেরাই চুপ হয়ে গিয়েছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে যারা সমালোচনা করে, তাদের যখন প্রযুক্তি নির্ভরশীল কোন কাজের দরকার হয়, তারাই আবার আমার শরণাপন্ন হয়।

বহু রকম সার্কাস দেখছি আজকাল, হয়তো এসব অভিজ্ঞতা গ্রামে না আসলে কোনভাবেই সঞ্চারণ হতো না। তবে যাই ঘটছে, সেটাকেই সাধুবাদ জানাচ্ছি।

লোকজনের পড়াশোনার জ্ঞান সীমিত হলেও, কিছু কিছু ক্ষেত্রে বুদ্ধি খাটানোর চেষ্টা করে। হয়তো বিগত সময়ের পরিস্থিতির কারণে এসব শিখেছে। সেদিন পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে একদল তরুণ ছেলে এসেছিল এলাকার মানুষের ভোটার আইডির ফটোকপি সংগ্রহ করা এবং ছবি তোলার জন্য।

কিছু লোক অবশ্য তরুণ ছেলেদের দেখানো লোভে পড়ে, সামান্য এক-দু কেজি আটা আর ময়দার জন্য প্রথম অবস্থায় ভোটার আইডির ফটোকপি এবং ছবিও দিয়েছিল। তবে যখন দু-একজন লোকের কৌতূহল সৃষ্টি হয়, তখনই মূলত আমার গিন্নির কানে কথাটা চলে আসে।

যদিও আমি ঘুমে ছিলাম, তাই আমাকে সরাসরি ডাকেনি গিন্নি। সে নিজেই চেষ্টা করেছিল তরুণ ছেলেদের বিষয়গুলো বোঝার জন্য। সে যখন বিভিন্ন রকম প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছিল তরুণ ছেলেদের কাছে, তখন ছেলেগুলো কিছুটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গিয়েছিল। তারা বারবার বলছিল, তারা আদমশুমারির কাজে এসেছে। তবে বাস্তবে তাদের কাছে কোন কাগজপত্র ছিল না।

তারা শুধু ভোটার আইডির ফটোকপি নিচ্ছিল, মোবাইল ফোন দিয়ে ছবি তুলছিল আর আটা-ময়দা দিচ্ছিল। গিন্নি যখন প্রশ্ন বারবার করতেছিল, তখন গ্রামের অন্যান্য লোকজন নিজের থেকেই ব্যাপারটা বোঝার চেষ্টা করছিল এবং তারাও বেশ চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল।

অবশেষে পরিস্থিতি ঘোলাটে দেখে, তরুণ ছেলেরা দ্রুত এলাকা ত্যাগ করে। যদিও এ যাত্রায় আমি সশরীরে পরে ঘটনাস্থলে যাই এবং লোকজনের সঙ্গে কথা বলার পরে, নিজের থেকেই অনেকটা বিরক্তিবোধ করি এবং সবাইকে বুঝিয়ে বলি, ভোটার আইডির তথ্যগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ, এটা সহজে কাউকে দেওয়া যাবে না। কেননা প্রতারক চক্র এইসব তথ্য দিয়ে অনলাইনে অনেক রকমের বেআইনি কার্যকলাপ করে থাকে।

সুতরাং এক প্যাকেট আটা-ময়দার লোভে পড়ে কোন অবস্থাতেই ভোটার আইডির তথ্য কারো সঙ্গে শেয়ার করা যাবে না এবং অন্য কেউ যাতে এমন প্রতারণার শিকার না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। কতটুকু আমার কথা গ্রামের লোকজন বুঝেছে তা আমি জানিনা, তবে কিছুটা হলেও যে সচেতনতা বোধ গ্রামের লোকজনের ভিতরে জাগ্রত হয়েছে, এটাই বা কম কিসের।

ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht



JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

|| Join the Discord Server for more Details ||

VOTE @bangla.witness as witness



OR

SET @rme as your proxy