আসসালামু আলাইকুম

শুভ সন্ধ্যা সবাইকে।আমার বাংলা ব্লগে সবাইকে স্বাগতম।

মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার প্রিয়"আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগন,কেমন আছেন সবাই?আশা করি সবাই ভাল আছেন।আমিও আলহামদুলিল্লাহ্‌ আল্লাহ্‌র অশেষ রহমতে বেশ ভাল আছি।

বন্ধুরা,আমি @shimulaktet,আমি বাংলাদেশ ঢাকা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি।কাজ সময়মতো না করা হলে আসলে ভালো থাকাটা ঠিক মতো হয়ে উঠে না।তাই এখন চেষ্টা করছি লেখার।আজ জেনারেল রাইটিং নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।প্রতিদিন আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি পোস্টের ভিন্নতা এনে নিজের সৃজনশীলতাকে প্রকাশ করতে।তাই আজ একটি জেনারেল পোস্ট শেয়ার করছি।আশাকরি আমার পোস্ট আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।

বন্ধুরা,আমার আজকের জেনারেল পোস্টটি মূলত কি বিষয়ের উপর লেখা তা আপনারা সকলেই হয়তো অবগত হয়েছেন।আসুন,আজকের জেনারেল রাইটিং বিষয়টি নিয়ে কিছু লেখার চেষ্টা করি।বন্ধুরা,মানুষ হচ্ছে সৃষ্টির সেরা জীব।আমাদের জ্ঞান,বুদ্ধি,বিবেক দিয়ে আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন।আমরা জানি,জীবে প্রেম করে যেই জন,সেই জন সেবিছে ঈশ্বর।অর্থাৎ এই বাক্যটি দিয়ে আমরা এটা বুঝতে পারছি আল্লাহর সৃষ্টির সকল জীবের প্রতি ভালোবাসা থাকলে এতেই আল্লাহকে সেবা করা বুঝানো হয়েছে।এতেই আল্লাহ খুশী হন।এটা সব ধর্মেই আছে।সকল জীবের প্রতি আমাদের ভালোবাসা থাকা খুব দরকার।

আমার আজকের এই জেনারেল রাইটিং লেখার পেছনে একটি কারন আছে।আমি গত তিন দিন আগে ইউ টিউবে ঢুকেই মাই টিভির একটি খবরে আমার চোখ আটকে যায়।আর তাই আমি খবরটা শুনতে ব্যস্ত হয়ে পরি।খবরটা ছিল একটি ১০ বছরের বাচ্চাকে নিয়ে।এই ছোট ছেলেটি আট তলা ভবনের সাত তলার কার্নিশে গুটিসুটি হয়ে বসে আছে।মাই টিভির লোকজন কেউ একজন আছরের নামাজ পড়তে যাবে তখন ছেলেটিকে ওই কার্নিশে বসে থাকতে দেখে।সেই সময়ই লোকজন আরো বেশী জড়ো হয়ে যায়।

ছেলেটিকে দেখেই আমার দম আটকে যাওয়া কষ্ট আমি নিজের মধ্যে অনুভব করলাম।প্রথমেই কেন জানি আমার ছেলের মুখটি চোখে ভেসে উঠলো।অনেক বেশী খারাপ লাগা কাজ করছিলো। তারপরেও খবরটা আসলে কি তা জানতে পুরো ভিডিওটি আমি দেখলাম।এরপর দেখলাম সেই লোকজন ফায়ার সার্ভিস ডেকে আনে।ফায়ার সার্ভিসের লোকজন সাত তলার বারান্দার গ্রীল কেটে ছেলেটিকে উদ্ধার করে।এক শ্বাসরুদ্ধকর ঘটনা ছিল এটা।ছেলেটির জীবন এখানেই হয়তো শেষ হয়ে যেতো।ছাদ থেকে সেই ছেলেটি পানির পাইপ বেয়ে বেয়ে সেই কার্নিশে গিয়েছে।এটা শুনেই তো আমার দম বন্ধ হওয়া অবস্থা হলো।ছেলেটি বেয়ে বেয়ে যাওয়ার সময় তখনো তো নীচে পরে যেতে পারতো। আমার খুব কষ্ট হচ্ছিলো খবরটা দেখে।আপনারা কেউ এই ঘটনাটা দেখেছেন কিনা আমি জানি না।ঘটনাটি ঘটেছে খিলগাঁও এলাকাতে।

ছেলেটিকে উদ্ধার করার পর মাই টিভি চ্যানেলের সাংবাদিক তার কাছে জানতে চায় কেন সে এতো ঝুঁকি নিয়ে সেই কার্নিশে গেলো।ছেলেটি তখন বলল,সে বাড়ি যেতে চায়।তখন সাংবাদিক জানতে চায়,তার বাড়ি কোথায়?ছেলেটি বলল তার বাড়ি ময়মনসিংহ। ছেলেটির কাছে আরো জানতে চাওয়া হয়,ছেলেটি এখানে কেন এসেছে?ছেলেটি জানায়,তাকে পালতে আনা হয়েছে।সেই পরিবারের লোকজনের কথা কিছু খবরে দেখানো হয়নি।শুধু সাংবাদিক শেষে এটাই বলল,আমরা যারা পরিবারে এমন বাচ্চাদের রাখি তারা যেনো তাদের সাথে ভালো ব্যবহার করি।আর তাদেরকে বুঝতে চেষ্টা করি।এই ছেলেটি হয়তো না ফেরার দেশে চলে যেতো।তাতে কারো কিছুই হতো না।তার পরিবার একজন সন্তানকে হারাতো।যে সন্তানকে তারা একটু ভালো খাবার ও ভালো ভাবে থাকার জন্য শহরে পাঠিয়েছিল।

এই খবরটি দেখে আমার ভাবনাতে একটা জিনিসই এলো আমরা এতো আদর যত্ন করে পশু-পাখি পুষে থাকি।অথচ মানুষ হয়ে মানুষের উপর এতো কেন অনাদর হবে।বাচ্চাটা যারই হোক। তার তো একটু ভালো থাকার,একটু ভালো ব্যবহার পাওয়ার অধিকার আছে।আমরা কেন আমাদের ভেতরের মনুষ্যত্ব কে জাগিয়ে তুলে মানবিক হওয়ার চেষ্টা করবো না।আমাদের ভাবনাতে কেন আসবে না,এটা তো আমার ভাই,ছেলে ও হতে পারতো।আমরা দিনের পর দিন আমাদের ভেতরের মনুষ্যত্বটাকে মেরে ফেলছি।মানবতা আজ হারাতে বসেছে।আমি অনেককেই দেখি বাসার সাহায্যকারী সেই যে ছেলে বা মেয়েটির সাথে অনেককেই খারাপ ব্যবহার করতে দেখি।এটা আসলে উচিত নয়।তাইতো মানবিক মানুষ আজ খুঁজে পাওয়া মুশকিল।

আজ মাই টিভির লোকজন মানবতা দেখিয়েছেন ছেলেটিকে উদ্ধার করে।আসুন আমরা ও নিজেদের মনুষ্যত্ব কে জাগিয়ে তুলে মানবিক হয়ে উঠি।যাতে করে আর কোন বাচ্চা এমন মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে এমন কোন ঘটনার সূত্রপাত না ঘটায়।তবেই সমাজ ও দেশে মানবিক মানুষ তৈরি হবে।

আজ আর নয়।আশাকরি আমি আমার জেনারেল রাইটিং এর বিষয়টি আপনাদের মাঝে খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছি।সবাই সুস্থ থাকবেন। ভালো থাকবন।আবার কোন নতুন ব্লগ নিয়ে হাজির হবো।

পোস্ট বিবরন

বিষয়	জেনারেল রাইটিং
লেখা	@shimulakter

আমার পরিচয়

আমি শিমুল আক্তার। আমি একজন বাংলাদেশী।বাংলাদেশ ঢাকা থেকে আমি আপনাদের সাথে যুক্ত আছি।আমি এম এস সি ( জিওগ্রাফি) কমপ্লিট করি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। আমি বিবাহিতা।আমি একজন গৃহিণী।আমি একজন স্বাধীনচেতা মানুষ। ভালোবাসি বই পড়তে, নানা রকমের রান্না করতে,আর সবাইকে নতুন নতুন রান্না করে খাওয়াতে ভীষণ ভালোবাসি।ফটোগ্রাফি করতে আমি ভীষণ পছন্দ করি।বাংলায় লিখতে আর বলতে পারার মধ্যে অনেক বেশী আনন্দ খুঁজে পাই।নিজের মধ্যে থাকা সৃজনশীলতাকে সব সময় প্রকাশ করতে পছন্দ করি।এই বাংলার মাটিতে জন্মগ্রহণ করেছি বলে নিজেকে অনেক ধন্য মনে করি।