আজকের কবিতা - নালিশ (Poetry- Complain!)

sduttaskitchen -

একটা কথা কখনো ভেবে দেখেছেন? সম্পর্ক কাছের হোক বা দূরের, পরিচিত হোক অথবা অপরিচিত, যতক্ষণ আমরা এই ধরায় থাকি ভালোর চাইতে মন্দের তালিকা দীর্ঘ্য থাকে!

ভালো কথার মন্দ দিক খুঁজে বের করা, সদুপদেশ কে সন্দেহের নজরে দেখা! সোজা কথার বাঁকা অর্থ ধরা ইত্যাদি ইত্যাদি।

পাড়ায় হোক বা পরিবারে এরকম উদাহরণ রোজকার জীবনে নজরে পড়ে। সবচাইতে অবাক বিষয় যে মানুষটি জীবিত অবস্থায় চোখের কাঁটা ছিল, চিরবিদায় নেবার পরে তার খারাপ গুলো, তার প্রতি নালিশ গুলো এক নিমেষে প্রশংসায় রূপান্তরিত হয়!

ভালোর ভালোটা তো আগেও ছিল, তখন তো সমালোচনা ছাড়া কিছুই নজরে পড়ে না!

শরীর দিয়ে, মায়া মমতা দিয়ে, সময় দিয়ে নিজের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা দিয়ে করেও দিনশেষে কিন্তু নালিশ পড়ে থাকে অনেকের ঝোলায়।
তাই আজকে মনে হলো একটি ছোট্ট কবিতা আপনাদের মাঝে তুলে ধরি, যার নাম দিয়েছি -

নালিশ

হটাৎ করেই যদি একদিন যাই চলে;
দু'ফোঁটা অশ্রু আসতে চায় না বলে!

মনের কোণার নালিশ গুলোকে ঝেড়ে ফেলে;
চিরবিদায় জানিয়ে সন্ধান করতে গেলে,
কিছু ভালোর হদিস হয়তো
তখন মিললেও যদি মেলে!

বেঁচে থাকতে সবটাই বেকার;
হারালে পরে খুঁজে একাকার!
ভালোবাসা গুলো ফিকে আজ সব;
বিদায়ের পর খোঁজ খোঁজ রব!

সংগোপনে আমি বয়ে যাই ব্যাথা;
অনেক কষ্ট অব্যাক্ত অনেক কথা!

যেদিন এ ধরা হতে চির বিদায় নেবো;
যা কিছু আছে সবটুকু দিয়ে যাবো।
নিয়ে যাবো অব্যাক্ত কষ্টের বোঝা;
যা বোঝা নয়কো মোটেই সোজা।

একবার ছুটির ঘণ্টা বাজলে
এক্ ছুটে ওপারে পৌঁছে যাবো;
হারানো স্বজনদের হয়তো
সেখানে ফিরে পেলেও পাবো!

একাকীত্বে আজ নিঃস্বার্থ
ভালোবাসার বড়ই অভাব;
বিনা কারণে ফিরে না চাওয়া
মানুষের আজ নিত্য স্বভাব।

ক্লান্ত আমি নিঃস্বার্থ
ভালোবাসার সন্ধানে;
গ্লানি অপমান মিলেছে কেবল
আবদ্ধ করতে নিজেকে মায়ার বন্ধনে।

- সুনীতা দত্ত।

(জীবিত অবস্থায় ফুলের খরচ বাড়তি, মৃত্যুর পর খরচে নেই ঘাটতি)

আজও বুঝতেই পারলাম না, সবার মাঝে থেকে একাকীত্বের জ্বালা বেশি, নাকি সর্বহারা হয়ে!
অনেকেই আছেন নারী পুরুষ নির্বিশেষে নিজের সবটা ইজার করে দিয়েও মন পায় না, বিশ্বাস পায় না আবার অনেকক্ষেত্রে মন যুগিয়ে চলতে চলতে হয় পথ পরিবর্তন করে ফেলে, নয়তো অকালে বিদায় জানিয়ে ওপারের দেশে চলে যায়।

জীবনে মোটামুটি সব রকম ঘটনা দেখে আজকে তাই মনে হলো, চেহারায় পৃথক হলেও অনেকের জীবনের গল্পটা বোধহয় প্রায় একইরকম।

বোঝার চেষ্টা আর বোঝানোর প্রয়াস এই করেই জীবনের বেশিরভাগ সময় অতিবাহিত করে ফেলি আমরা।

একটা সময় যখন পিছন ফিরে তাকাই, মনে হয় কত কিছুই তো পরিবর্তন করা যেতে পারতো, যদি একটু নালিশ কম করা যেতো!

আমাদের জীবনের সবচাইতে বড়ো ভুল আমরা অনেক সময় আলোচনাকে নালিশ ভাবি, আবদারকে ভাবি লোভ।

একটু যদি মানসিকতার পরিবর্তন করা যায়, তাহলে হয়তো নালিশ টাও আলোচনা অথবা মনের কষ্টের অভিব্যাক্তি প্রকাশ বলে মনে হতে পারে। ভেবে দেখবেন একবার আমার কথাগুলো, যারা আমার লেখা পড়েন।

এখন ভারতীয় সময় রাত ১ টা বেজে ১২ মিনিট।
এখনও লেখা শেষ করতে পারিনি, তবে এইবার ইতি টেনে বিদায় নেবো, প্রতীক্ষায় থাকলাম আপনাদের মন্তব্যের। তবে সেটা যেনো নিজের হয়, আমার লেখার পুনরাবৃত্তি না হয়।