অঙ্কে আমি কোনদিনই বিশারদ ছিলাম না! নাহ্! নিজের দুর্বলতা স্বীকার করতে কোনো লজ্জা নয়, বরং সাহসিকতার প্রয়োজন।
যেহেতু, অঙ্কে কাঁচা, তাই তার প্রভাব জীবনের অনেক ক্ষেত্রেই পোহাতে হয়েছে এবং এখনও হয়।
হিসেবে আজও কাঁচাই রয়ে গেছি! বেশকিছুদিন ধরেই শরীরের পাশাপশি মনটাও খারাপ, অবশ্যই ব্যাক্তিগত কারণে!
আমাদের প্রত্যেকের একটা লড়াই অন্তরালে চলে দৈনন্দিন জীবনে! আর, এই জীবন নিয়ে ভাবতে গিয়ে উপরিউক্ত কথাটি মাথায় এসেছিল। তাই আজকের লেখার শীর্ষক হিসেবে একেই আজকে বেছে নিয়েছি।
জীবনের পরিভাষা বোঝা বড়ই কঠিন, জানিনা আর সকলের ক্ষেত্রে কতখানি? তবে, আমার নিজের ক্ষেত্রে অঙ্কে কাঁচা বলে, অনেকেই সেই সুবিধা সময় সময় নিয়ে গেছে, এখনও তার অন্যথা হয়না!
এখন আমি আগের চাইতে কিছু ক্ষেত্রে শক্ত হতে সক্ষম হয়েছি, জীবনের শাসনের ফলে।
যারা কথায় কথায় কেঁদে ফেলে, সমাজে তাদের একটি নাম আছে 'ছিঁচ কাঁদুনে!'
আমাকে শৈশবে ওই নামেই ডাকা হতো, কিন্তু জীবন আমাকে এমন চপেটাঘাত করেছে যে, এখন আর সহসা চোখে জল আসে না, আর আসলেও কাউকে বুঝতে দি না!
আজকাল, অনেক বিক্রিত দ্রব্যের মত চোখের জল কিছু মানুষ আত্মস্বার্থে ব্যবহার করে!
প্রথমে মানুষের দুর্বলতা জেনে, বারংবার সেখানে আঘাত করতে থাকে!
এরকম পরিস্থিতির শিকার বহুবার হয়েছি, এবং অবশেষে সিদ্ধান্ত নিয়েছি অনেক হয়েছে আর না!
নিজের ভালোলাগা মন্দ লাগা গুলোকে আর কাউকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে দেবো না।
তবে, যারা অঙ্কে কাঁচা তারা হিসেবে ক্ষেত্রে দুর্বল হবার কারণে, অনেকক্ষেত্রেই নিজেকে আটকে রাখতে পারে না, আর ঠিক সেই কারণে বারবার আহত হয়ে ফিরে আসতে হয়।
তাই আমার মনে হয়,
সবটা মিলিয়ে আমাদের জীবনের পথচলা।
বাইরে থেকে সকলেই মানুষ কিন্তু অভ্যন্তরীণ দিক থেকে কিন্তু সেটা সবসময় সঠিক নয়।
মানে, অন্তর থেকে সকলে মানুষের সংজ্ঞা বয়ে বেড়ায় না, সেখানে দুদিকের দুই পাল্লায় রাখা থাকে নিজের লাভ লোকসানের হিসেব।
মান আর হুশ দুই পল্লার এক্ দিকেও থাকে না!
বাহ্যিক আঘাত চোখে দেখা যায় তাই তার দর হয়তো আজও বেশি, সহানুভূতি দেখায় অনেকেই, কিন্তু মানসিক আঘাত আজও কোণঠাসা!
(জীবনের প্রতিটি শিক্ষা, আগামী পথ চলার দীক্ষা!) |
---|
সাধারণ দৃষ্টিতে 1+1=2 হয়, কিন্তু অঙ্কে কাঁচা বলেই বোধহয় আমি 1+1=11 দেখি!
সবাইকে নিয়ে চলা, সকলের সাথে মনখুলে কথা বলার খেসারত গুনতে হয়েছে বহুবার!
অনেকেই, রটিয়েছে মিথ্যে রটনা, অনেকেই নিজের সুবিধা মিটে গেলে অবলীলায় মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে!
জীবনের অর্থ বুঝতে অভিজ্ঞতার ঝুলিতে এরকম অনেক ঘটনা জমা করতে পারলেও, পুনরায় ছুটে গেছি তারাই আবার ডাকলে, যেখানে সুপ্ত ছিলনা কখনোই কোনো স্বার্থ।
এখন অনেক সময় একলা ভাবতে বসি, কোনটা বেশি কঠিন? মৃত্যু নাকি বেঁচে থাকা?
আমার মনে হয়, মানুষের শারীরিক মৃত্যু একবারই হয়, কিন্তু মানসিক মৃত্যু হয় প্রতিদিন, সকলের জন্য বিষয়টি প্রযোজ্য নয়, এই আমার মত অঙ্কে যারা কাঁচা তারা হয়তো আমার শব্দগুলোর অভ্যন্তরীণ অর্থ বুঝতে সক্ষম হবে!
অভাগীর স্বর্গ যাত্রায়, তবুও মুখে আগুন পেয়েছিল অভাগী! আমার সে উপায় ও নেই!
এখন তাই চাওয়া, পাওয়ার হিসেব কষতে বসি না, শুধু নিজের প্রতিদিনকে চেষ্টা করি অতিবাহিত করতে কারোর মনে অযথা আঘাত না হেনে!
এই একটা বিষয় আমি ভীষণ বিশ্বাস করি, কারোর মন থেকে বেরোনো দীর্ঘশ্বাস কখনোই ব্যর্থ হয় না।
অনেক কষ্টের সমষ্টিপুঞ্জ হিসেবে বহির্গত এই দীর্ঘশ্বাস অভিশাপের চাইতেও ভয়ংকর।
আমাদের মত করে যে জীবন পরিচালিত হয়না, কথাটা অনেক ইচ্ছেপূর্তির সময় তাৎক্ষণিক ভাবে আমরা উপলব্ধি করতে পারি না, কিন্তু বেশ কিছুদূর পথ অতিক্রমের পরে যখন পিছু ফিরে তাকাবার সময় হয়, তখন বোঝা যায়, জীবন আসলে আমাদেরকে পরিচালিত করেছে তার মতো করে!
আমরা বুঝতে দেরি করে ফেলেছি, অনেক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে, অনেক ভুল মানুষকে পাথেয় করে এবং সঠিক অঙ্ক কষতে শেখা হয়নি বলে!
জানিনা আমার মত কতজন জীবনের অঙ্কে কাঁচা বলে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন, মন্তব্যের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না।