New to Nutbox?

SBD recovery case #1 : beneficiary rme [round 38]

4 comments

sbd-recovery
73
12 days agoSteemit4 min read

This post is made for recovering lost SBD : 1470

Recovered so far : 1346.928 SBD


গল্প (রক্ত তৃষা) - পর্ব ৩৬


vampire-2115396_1280.jpg
Copyright Free Image Source : PixaBay


সহসা আকাশের বুক চিরে আবার বিদ্যুতের শিখা দেখা দিলো, আর তার ক্ষণেক পরেই কড় কড় কড়াৎ !! শ্মশানভূমির কোথাও যেনো বাজ পড়লো বিকট শব্দে । হাওয়ার বেগ তীব্রতর হলো । ঝিঁ ঝিঁ পোকার সেই অবিশ্রান্ত ডাক থেমে গিয়েছে, নদীতীর থেকে শোনা যাচ্ছে না আর শেয়ালের ডাকও । চারিদিক সহসা ভারী নিঃস্তব্ধ হয়ে গেলো । বিশ্রী থমথমে একটা পরিবেশ । ভয়ঙ্কর কিছু ঘটতে যাওয়ার পূর্বাভাস এটি ।

এমনভাবে সহসা শ্মশানের পরিবেশ পাল্টে যেতে দেখে বুক কেঁপে উঠলো দুর্ধর্ষ, অসীম সাহসী চন্ডেরও । চারিদিকে কেমন যেন একটা অদ্ভুত পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে । রক্ত তৃষা, হিংসা আর হননেচ্ছায় পূর্ণ এই পরিবেশে ধীরে ধীরে জন্ম নিচ্ছে এক ভয়ঙ্কর আদিম আতঙ্ক । সেই আতঙ্কের কোনো নাম নেই, সেই আতঙ্কের কোনো রূপ নেই, শুধু ভয়ার্ত শীতল হৃদপিন্ড দিয়ে এই আদিম প্রাগৈতিহাসিক আতঙ্ক অনুভব করা যায় ।

কাপালিকের বুক দুরু দুরু করছে । নিতান্তই ব্রাহ্মণ সন্তান পুজোয় বসেছে, তাই ইচ্ছে করলেও ছুটে পালাতে পারছে না সে । শ্মশান কালীর পুজো করা বড় ভয়ানক ব্যাপার, এই পুজোয় কোনো ব্যাঘাত হলে সবার আগে পুরোহিতের জীবন নিয়ে টানাটানি পড়ে যায় । তাই কাপালিকের দুই পা যেনো ইচ্ছে করছে এক ছুটে এখান থেকে পালিয়ে যায়, শুধু পারছে না পুজো অসমাপ্ত থেকে যাবে এ জন্য ।

কিছুক্ষণ বিমূঢ় অবস্থায় কাটানোর পর চন্ডর মনে আবার কিছুটা সাহসের সঞ্চার হলো । চোখের ইশারা করে কিছু জানতে চাইলো সে কাপালিকের কাছে । কাপালিক ঘাড় কাত করে মৃদু কম্পিত কণ্ঠে বললো, "সময় হয়েছে !"

চন্ড অনুচ্চ স্বরে তার দুই সঙ্গীদের কিছু নির্দেশ দিলো । সঙ্গে সঙ্গে একজন চলে গেলো বেদীর কাছে, আরেকজন গেলো খড়গের নিকট । বেদীর কাছে যে যমদূতটি গিয়েছিলো সে হঠাৎ বেদীর উপরে লাফ দিয়ে উঠে হাঁটু গেঁড়ে বসে কমলাদেবীর দুই হাত পিছমোড়া করে বেঁধে ফেললো । এরপরে চুলের মুঠি ধরে সবেগে বেদী থেকে নামিয়ে এনে হাঁড়িকাঠের দিকে নিয়ে চললো ।

যন্ত্রণার অভিঘাতে কমলাদেবীর মাথা যেন ছিঁড়ে পড়তে চাইছে, চুলের গোড়ায় রক্ত জমে যাচ্ছে, তলপেটে তীক্ষ্ণ একটা ব্যাথা মোচড় দিচ্ছে । গর্ভের শিশুটি এখন বড় বেশি নড়াচড়া করছে, পেট ছিঁড়ে বেরিয়ে আসতে চাইছে যেনো । বাতাসের বেগ তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে প্রতি মুহূর্তে, আর সেই তীব্র হাওয়ায় ভেজা শাড়িতে বড্ড শীত করছে তাঁর । ঠান্ডা জলের ঝাপটে নেশার ঘোর কাটছে তাঁর ধীরে ধীরে । কিছু একটা মাথার মধ্যে অবিরত পাক খাচ্ছে । তিনি এখন কোথায় ? কী করছেন তিনি ? কিছুই ভালো করে বোধগম্য হচ্ছে না এখনও ।

চুল ধরে টানতে টানতে সেই বিশাল হাঁড়িকাঠের সামনের কোপানো মাটির উপর এনে কমলাদেবীকে টেনে হিঁচড়ে ফেলে রাখলো চন্ডের সেই প্রথম অনুচরটি । হাঁড়িকাঠের দু'পাশে দু'টো মশাল জ্বলছে । সেই মশালের আলোয় সিঁদুর মাখানো প্রকান্ড হাঁড়িকাঠটার দিকে অপলক চোখে চেয়ে রইলেন কমলাদেবী । মাথাটা কিছুটা পরিষ্কার হয়েছে এখন । হাঁড়িকাঠ চিনতে পেরেছেন তিনি । এবং এও মনে পড়েছে যে হাঁড়িকাঠ কী কাজে ব্যবহৃত হয় ! বিস্ময় মাখানো অবাক দৃষ্টিতে তিনি চেয়ে রইলেন হাঁড়িকাঠের দিকে । ধীরে ধীরে তাঁর এখন সব মনে পড়ে যাচ্ছে । তিনি কে ? কোথায় এখন তিনি ? কী জন্য এখানে এসেছেন ? সব, সঅব মনে পড়ে যাচ্ছে তাঁর । ধীরে ধীরে কমলার বিস্ময়মাখা দৃষ্টি বদলে গেলো, বিস্ময়ের জায়গায় চরম আতঙ্ক স্থান করে নিলো । চরম আতঙ্কে বিস্ফারিত হয়ে উঠলো কমলার অক্ষি দ্বয় ।

চন্ড কিন্তু কমলাদেবীর মধ্যে ঘটা এই পরিবর্তন টের পেলো । সে দ্রুত যমদূতটাকে কমলার দুই পা কষে বাঁধার নির্দেশ দিলো, সেই সাথে মুখও বাঁধতে বললো । নেশা কেটে যাচ্ছে বড় দ্রুত, এর মধ্যে কমলাদেবীর মুখে আগল দেওয়াটা বড্ড জরুরী ।

শ্মশান থেকে মাত্র কিছুটা দূরে সেই রহস্যময় মূর্তিটি এখন প্রায় বাতাসের বেগে ছুটে আসছে মন্দিরের দিকে । হাওয়ায় তার মাথার জটা থেকে সাপের ফণার মতো চুলের গোছা উড়ছে, ভীষণ ক্রোধে তার দুই চোখে আগুন ঝরছে । হাতের ভয়ঙ্কর অস্ত্রটাকে বাগিয়ে ধরে সে ঝড়ের বেগে ছুটে চলেছে মন্দির পানে ।

[চলবে]

Comments

Sort byBest