সিনেমা হলে মুভি দেখার অভিজ্ঞতা
3 comments
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন।আজ আমি আপনাদের মাঝে সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতার কথা উপস্থাপন করছি। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।
আমি মুভি দেখে খুবই পছন্দ করি। মুভি দেখার এতটাই নেশা যে মুভি দেখতে বসলে আমি খাওয়ার কথা ভুলে যাই। আমাদের একটি সিডি ছিল যেটি ডিক্সের মাধ্যমে চালানো হতো। আমি যে সময়টির কথা বলছি তখন মোবাইলের তেমন একটা ব্যবহার ছিল না। তখন একটি ফোন কিনতে অনেক টাকা লাগতো আর তখন ইন্টারনেট অনেক দাম দিয়ে চালাতে হতো। আমার এখনো মনে পড়ে সেই সোনালী দিনগুলোর কথা। বাবার কাছ থেকে টাকা নিয়ে বন্ধুদের কাছ থেকে কালেকশন করে আমরা মুভির ডিক্স ভাড়া করে এনে সবাই মিলে একসঙ্গে বসে দেখতাম। তখন সিনেমা হল মানে তেমন একটা বুঝতাম না শুধু বড়দের মুখে নাম শুনতাম। আর মনে মনে ভাবতাম সেখানে কি হয় মানুষ কেন সিনেমা হলের কথা বলে। খুব কৌতুহল হতো আমিও বড় হয়ে সিনেমা হলে ছবি দেখব। আস্তে আস্তে বড় হতে শুরু করি যখন কলেজে পড়াশোনা করছি। তখন বন্ধুদের সঙ্গে প্রথম সিনেমা হলে ছবি দেখতে যাই। আমার এখনো মনে আছে আমি প্রথম ছবিটি দেখেছিলাম জিৎ দার। আমি জিৎ দার একজন অন্ধ ভক্ত টিভিতে যখন সাথী মুভিটি দেখি তখন থেকেই তার ভক্ত হয়ে যাই আর এখনো পর্যন্ত তারা অন্ধ ভক্ত। হলের ভিতর টিকিট কেটে ঢুকে পড়লাম দেখলাম অনেক চেয়ার পাতা রয়েছে। আমার খুবই কৌতুহল হচ্ছে মনে মনে ভাবছিলাম কখন মুভি শুরু হবে। আমার আশেপাশের সবাই কমবেশি খাবার খাচ্ছিলো। কিন্তু আমার ওসবের কোন আগ্রহ ছিল না কারণ আমার খুবই আনন্দ লাগছিল যে আমি সিনেমা হলে বসে মুভি দেখছি। প্রথমে মুভি শুরু হবার আগে জাতীয় সংগীত গাওয়া হলো সবাই যার যার সিট থেকে উঠে দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীত গাওয়া হলো। তারপর ছবি শুরুর হতেই সবাই হাতে তালি চিৎকার হইচই করতে শুরু করলো। আর যখন জিৎ দাকে প্রথম পর্দায় দেখলাম আমিও আনন্দে চিৎকার করে উঠলাম। মুভি দেখছি আর হইচই করছি অনেক আনন্দ করেছিলাম সেদিন। ওই যে হলে মুভি দেখার আনন্দ আমি পেয়েছিলাম আজও ভুলতে পারিনি। সেদিনের পর থেকে নতুন কোন মুভি বের হলে আমি চেষ্টা করি সিনেমা হলে দেখার জন্য।
যখন থেকে ফোন ব্যবহার করা শুরু করলাম তখন থেকেই সাউথ মুভির প্রতি ভালোবাসা বেড়ে গেল। তাদের যে গল্প তাদের যে আর্ট আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। আমার মনে হয় বর্তমান বেশিরভাগ সবাই সাউথ ইন্ডিয়ান মুভি দেখতে বেশি পছন্দ করে। প্রভাস, আলী অর্জুন, এনটিআর, রামচরণ, সাউথের আরো অনেক হিট নায়ক রয়েছে। যাদের মুভি গুলো বর্তমান ইয়াং জেনারেশন বেশি পছন্দ করে। আমিও তাদের ভিতর একজন এখন আর তেমন বাংলা মুভি দেখতে ইচ্ছা করে না। আমি যাদের নাম উল্লেখ করলাম তাদের মুভি বের হলে আমি চেষ্টা করি সিনেমা হলে মুভি দেখার জন্য। কিছুদিন আগে পুষ্পা টু মুভি দেখার জন্য চলে গিয়েছিলাম সিনেমা হলে। যেহেতু পুষ্পা দেখার পর পুষ্পা টু দেখার জন্য খুব আগ্রহী ছিলাম। আর যখনই ছবিটি এল দেখার জন্য খুব ইচ্ছা করছিল প্রথমে নিলয় দাদাকে বলেছিলাম তারপর দীপ্র দাদাকে। নিলয় দাদা কোন কারনে যেতে পারল না তাই বললাম দীপ্র দাদাকে। দাদাকে বলার সঙ্গে সঙ্গে দাদা রাজি হয়ে গেল সঙ্গে সঙ্গে অনলাইনে দুজনের টিকিট বুক করে নিল। পরের দিন আমরা সন্ধ্যা পাঁচটার সময় চলে গেলাম আমাদের বাড়ির পাশে সিনেমা হলে। যেহেতু আমাদের টিকিট আগে থেকেই বুক করা ছিল তাই কোন লাইনে দাঁড়ানোর প্রয়োজন হলো না কাউন্টারে টিকিট কনফার্ম করে আমরা ভেতরে প্রবেশ করলাম। হলের ভিতরে যাওয়ার আগে দাদা কিছু খাবার অর্ডার করে নিল। সেগুলো সঙ্গে নিয়ে আমরা আমাদের নিজ আসনে বসে পড়লাম। সিনেমা হলে প্রচুর দর্শক হয়েছিল। সিনেমা হলে যদি দর্শক না থাকে তাহলে সিনেমা দেখার কোন আনন্দই পাওয়া যায় না।
তিন ঘন্টা প্লাস মুভিটি ছিল। প্রত্যেকটা সময় শরীরের উত্তেজনা কাজ করছিল কারণ এত সুন্দর করেছে মুভিটা যেটি না দেখলে বুঝাই যাবে না। আপনারা কম বেশি সবাই জানেন আলী অর্জুনের মুভির একশন গুলো কতটা সুন্দর হয়ে থাকে মুগ্ধ হয়ে দেখতে ইচ্ছা করে। মুভিটির প্রত্যেকটা সময় টানটান উত্তেজনা ছিল।মুভি দেখতে দেখতে আমি একজনের প্রতি খুবই বিরক্ত হয়ে যাই। লোকটি আমার পাশের সিটে বসেছিল সে ছবি দেখা বাদ দিয়ে সব সময় সেলফি তুলায় ব্যস্ত ছিল। যার জন্য আমি খুবই বিরক্ত হই তাকে মানা করা সত্বেও সে তার কাজগুলো করে যাচ্ছিল। যাই হোক, পপকর্ন খেতে খেতে মুভিটা ইনজয় করলাম। খুবই খারাপ লেগেছিল মুভিটির শেষের গল্পটা খুবই দুঃখজনক ছিল। পরবর্তীতে দেখলাম গল্পের তৃতীয় পার্ট বের হবে। তৃতীয় পার্টে সম্পূর্ণ কাহিনীটা ভালোভাবে বোঝা যাবে। অবশেষে এটুকুই বলবো মুভিটি দেখার পর বুঝতে পারলাম সাউথ ইন্ডিয়ান মুভি গুলো কেন এত টাকা মুভিতে ব্যবসা করে। যেহেতু আমি সিনেমা পাগল আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছিল।
Comments