কার না ইকো পার্কে ঘুরতে যেতে ইচ্ছা করে আমার তো মনে হয় সবার ইচ্ছা করে। আমাকে তো ঘোরার কথা বললে খুবই ভালো লাগে। কারণ ঘুরলে মন শরীর সবকিছুই ভালো থাকে। কলকাতা সবচেয়ে বড় ইকো পার্কে সেদিন গিয়েছিলাম ঘুরতে। আগে পরেও যাওয়া হয়েছে অনেকটা বার। হঠাৎ করে দাদা বলল ইকো পার্কে ঘুরতে যাবে। দিদি আমাকে বলল রেডি হয়ে থাকতে আজ ইকো পার্কে ঘুরতে যাব। আমি তো শুনে খুবই খুশি কারণ অনেকদিন পর ঘুরতে যাচ্ছি। আমাদের যাওয়ার কথা ছিল বিকাল চারটার সময়। কিন্তু দাদার হাতে কাজ থাকার কারণে কাজ শেষ করতে করতে আমাদের সন্ধ্যা হয়ে গেল বের হতে। যাইহোক, যেহেতু মন করা হয়েছে সেহেতু অবশ্যই আমরা যাব। আমাদের ইকোপার্কে পৌঁছাতে পৌঁছাতে প্রায় ছয়টা বেজে গিয়েছিল। আবার এদিকে পার্ক বন্ধ হয়ে যায় সাতটার সময় তার মানে হাতে আমাদের এক ঘন্টা রয়েছে। এই এক ঘন্টার ভিতর এত বড় পার্ক কোথায় বা ঘুরবো। যাইহোক,যেহেতু চলেই যখন এসেছি সেহেতু ঘুরতে তো হবেই। পরিবারের সবাই টিকিট কেটে ভিতরে প্রবেশ করলাম। ভিতরে ঢোকার আগে পার্কের পাশেই ছিল অসংখ্য খেলনার দোকান। খেলনার দোকান দেখতেই ভাগ্নে কিনার জন্য পাগল হয়ে গেল। বাবার হাতটা ধরে টানতে টানতে নিয়ে গেল দোকানে। যেটা পছন্দ হয় সেটাই কিনতে শুরু করল আর বাবাও সেটা কিনে দিতে লাগলো। এখানে চলছিল দাদু আর নাতির খুনসুটি তাই কেউ বারন ও করল না। যেহেতু আমাদের লেট হয়ে যাচ্ছিল তাই তাড়াতাড়ি করেই আমরা ভিতরে প্রবেশ করলাম। বেশি দূরে আর যেতে পারলাম না কারণ ইচ্ছা ছিল ইকো পার্কের তাজমহল টা দেখার জন্য এবং মিশরের পিরামিড গুলো। আমি এখানে আগেও এসেছি আমার পরিবেশটা খুবই ভালো লেগেছে তাই আবার খুব ইচ্ছা করছিল যাওয়ার জন্য। কিন্তু কি করার হাতে খুব অল্প সময় ছিল আর জায়গাটা অনেক বড়। সময় করে না আসলে সবটা ঘুরে আসা সম্ভব নয় কারণ ৪০০ প্লাস বিঘা জায়গা জুড়ে এই পার্কটি অবস্থিত। বুঝতেই পারছেন কতটা বড় এরিয়া নিয়ে এই পার্টি অবস্থিত। তাই হাতে সময় করে না আসলে কোনভাবেই সবটি দেখা সম্ভব নয়।
যাইহোক, আমরা ভিতরে প্রবেশ করলাম এবং পাশেই ছিল ছোট বাচ্চাদের জন্য খেলার জায়গা। আমরা সেখানে ছোট বাচ্চাদের খেলাধুলা দেখছিলাম আর আমার ভাগ্নে যেহেতু ছোট মানুষ তাকেও কিছুটা সময় নিয়ে খেলাধুলা করলাম। পার্কে আসলে একটা জিনিস সব সময় বেশি দেখা যায় সেটা হল অনেক ধরনের মানুষ সেখানে আসা-যাওয়া করে থাকে। কেউবা পরিবার নিয়ে এসেছে আবার কেউবা বয়ফ্রেন্ড গার্লফ্রেন্ড। আর ইকোপার্ক মানেই যে বয়ফ্রেন্ড গার্লফ্রেন্ডের আসা-যাওয়া তা কিন্তু নয় এখানে সব ধরনের বয়সের মানুষ এসে থাকে। কারণটা হলো এই ব্যস্ততার শহরে একটু ফাঁকা জায়গা কোথাও নেই। আর বর্তমান মানুষ কর্মজীবনে এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে যে পরিবারকে নিয়ে ঘোরার সময়টুকু নাই। সপ্তাহের সব কয়টা দিনই মানুষের ব্যস্ততার মধ্যে কাটাতে হয়। আর শহরে কিঞ্চিত পরিমানে জায়গা নেই সেখানে বসে কিছুটা সময় পার করা যায়। সপ্তাহের প্রত্যেকটা দিন ব্যস্ততার মধ্যে কাটানোর পর যখন সাপ্তাহিক ছুটিটা হয় তখন সবাই চায় পরিবারের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটানোর জন্য। আর এর জন্য সবথেকে ভালো উত্তম জায়গা হচ্ছে ইকোপার্ক। রবিবারে সব থেকে বেশি ভীড় হয়ে থাকে ইকো পার্কে। কারণ এই দিনটাতে সরকারি ছুটি থাকে সবাই তার পরিবারকে সময় দেওয়ার চেষ্টা করে।