২১শে ফেব্রুয়ারি এবং গ্রামের মেয়েরা - স্মৃতি এবং বাস্তবতা

sabbirakib -

আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন আপনারা? আশা করি ভাল আছেন। আজ একটি ভিন্ন রকমের বিষয়ে কথা বলব। তা হচ্ছে একুশে ফেব্রুয়ারি এবং এই দিনে গ্রামের মেয়েদের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে।


একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষার জন্য অন্যতম একটি বিশেষ দিন। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারিতে ভাষার জন্য যারা প্রাণ দিয়েছিল তাদের স্মরণে প্রতিবছর বাংলাদেশে একুশে ফেব্রুয়ারি পালিত হয়। বর্তমানে যা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃত। প্রতিবছর এই দিনে খুব ভোরে বাংলার আপামর জনতা খালি পায়ে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। ভাষা শহীদদের প্রতি সম্মান জানানো ছাড়াও গ্রামের মেয়েদের কাছে এই দিনের অন্য একটি বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।

শহরের তুলনায় গ্রামের পরিবেশ, সমাজ একটু বেশি রক্ষণশীল। যার কারণে শহরের মেয়েরা যখন পহেলা ফাল্গুন, পহেলা বৈশাখ ইত্যাদি দিবস পালন করে; গলায় ফুলের মালা, মাথায় ফুলের মুকুট এসব পরে ঘুরে বেড়ায়, গ্রামের মেয়েরা সেই সুযোগটা পায়না। এজন্য যখন একুশে ফেব্রুয়ারিতে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান; সেটা প্রাইমারি স্কুল হোক কিংবা উচ্চ বিদ্যালয় কিংবা কলেজ অথবা মাদ্রাসা থেকে প্রভাত ফেরির আয়োজন করা হয় তখন গ্রামের মেয়েরা বেশ সেজেগুজে বের হয়। এই সাজ বলতে বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য সাজ নয়। তারাও শহরের মেয়েদের অনুকরণ করার চেষ্টা করে। গলায় ফুলের মালা মাথায় ফুলের মুকুট পড়ে বের হয়। বিশেষ করে প্রাইমারি স্কুলের বাচ্চা মেয়েরা। কারণ যারা হাই স্কুল লেভেল কিংবা কলেজে পড়ে তারা এক-আধটু সুযোগ পেলেও কোমলমতি বাচ্চা মেয়েগুলো এধরনের সুযোগ মোটেও পায় না।

এজন্য তাদের বাবা-মায়ের কাছে তাদের আবদার থাকে তাদেরকে ফুলের মালা কিনে দিতে হবে। মাথায় দেয়ার জন্য ফুলের মুকুট কিনে দিতে হবে। হাতে গোলাপ ফুল থাকবে যা তারা শহীদ মিনারে অপর্ণ করবে। অভিভাবকরাও তাদের আবদার ফেলে না। সাধ্যমত কিনে দেয়ার চেষ্টা করে। সুযোগ সন্ধানী কিছু ব্যবসায়ী এই দিনে ভালো মুনাফা করে কেবলমাত্র ফুল বিক্রি করেই।

আমি এই বিষয়টাকে খুবই পছন্দ করি। অন্তত বছরের একটি দিন এই মেয়েগুলোর জন্য থাকুক যেদিন তারা ফুলে ফুলে সেজে উঠবে। এ যেন একটি ফুল আরো কিছু ফুল দিয়ে সেজেছে। নিচে আমি কিছু ছবি দিচ্ছি। ছবিগুলো ২০১৫ সালের মাতৃভাষা দিবসে তোলা। তখন আমাদের গ্রামের স্কুলের প্রভাত ফেরির দায়িত্বে আমরা ছিলাম। আপনি ছবিগুলো দেখলেই বুঝতে পারবেন কতটা খুশি এই মেয়েগুলো। দিনটির ভাব-গম্ভীর্য সম্পর্কে তারা অবগত নয়। তারা খুশি কারণ এই দিনটি তাদের। এদিনে তারা ফুলে ফুলে নিজেকে সাজাতে পেরেছে।
















সেদিনে তোলা নিজের একটি মাত্র ছবি (সেল্ফি) যা আপলোড দেয়ার যোগ্য


নিজের সম্পর্কে
আমি মুহাম্মদ সাব্বির আকিব। জন্মসূত্রে একজন বাংলাদেশি। জেলাঃ চাঁদপুর, থানাঃ ফরিদগঞ্জ। থাকি ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানাধীন দক্ষিণ গাজীরচট নামক স্থানে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রসায়নে স্নাতক (সম্মান) সম্পন্ন করেছি। বর্তমানে একটি ফার্মেসিতে ফার্মাসিস্ট হিসাবে কর্মরত রয়েছি। বিবাহিত এবং আল্লাহ একটি পুত্র সন্তানের জনক করেছেন, আলহামদুলিল্লাহ।