সৌদি আরব থেকে ফেরার ক্লান্তিকর যাত্রার অভিজ্ঞতা ( শেষ পর্ব)।

rupok -

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


যখন বুঝতে পারলাম আমি ভুল জায়গায় চলে এসেছি তখন আমি আমাদের মোয়াল্লেমকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম তিনি কোথায়? তিনি আমাকে জানালেন তিনি তখনও ইমিগ্রেশন পার হতে পারেননি। তখন আমি তাকে বললাম ইমিগ্রেশন পার হলে আমাকে একটা ফোন দেবেন। আমি সম্ভবত ভুল জায়গায় চলে এসেছি। অবশ্য সেখানে আমি একা ছিলাম না। আমার সাথে আরো দুই তিন জন মানুষ ছিলেন যারা আমাকে ফলো করে ভুল জায়গায় চলে গিয়েছেন। যাই হোক বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পরও যখন দেখলাম মোয়াল্লেম সাহেব ফোন দিচ্ছে না। তখন আমি আমাদের সাথে থাকা অন্যদের সাথে যোগাযোগ করলাম। তারা আমাদেরকে জানালো তারা কাউন্টার নাম্বার ১৭ এর ওখানে সবাই অবস্থান করছে। তখন আমি এয়ারপোর্টের লোকজনের কাছ থেকে শুনে ১৭ নম্বর কাউন্টারের দিকে যেতে লাগলাম।

তবে সেখানে পৌঁছতে আমাদেরকে অনেকটা পথ হাঁটতে হয়েছিলো। যাই হোক ১৭ নম্বর কাউন্টারের কাছে পৌঁছে দেখি সেখানে আমাদের সাথে থাকা বাদবাকি লোকজনেরা বসে রয়েছেন। সেখানে পৌঁছে আমি স্বস্তির নিশ্বাস ফেললাম। তারপর আমি আমাদের সাথে থাকা কয়েকজনকে জিজ্ঞেস করলাম আমাদের প্লেন কি চলে এসেছে নাকি? তারা জানালো প্লেন এখনো আসেনি। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে প্লেন আসতে কিছুটা দেরি হবে। আমি যতক্ষণে ১৭ নম্বর কাউন্টারে পৌঁছেছি তখন আমাদের সাথে বাকি ছিলো আর মাত্র ৪০ মিনিট। সমস্ত কিছু শেষ করতে গিয়ে কখন সময় চলে গিয়েছে সেটা বুঝতেই পারিনি। যাইহোক দীর্ঘক্ষণ বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকার ফলে আমার তখন বেশ দুর্বল লাগছিলো। তাই আমি চিন্তা করলাম আগে কিছুক্ষণ বসে বিশ্রাম নেই। তারপর প্লেনের খোঁজ খবর নেয়া যাবে।


বেশ কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয়ার পরে যখন প্লেনের খোঁজ নিতে গেলাম তখন দেখলাম সেখানকার কেউই আমাদেরকে সঠিকভাবে কোন তথ্য দিতে পারছে না। অনেকক্ষণ চেষ্টা করার পরে একজনের মাধ্যমে জানতে পারলাম আমাদের ফ্লাইট এক ঘন্টা ডিলে হবে। এই কথা শুনে মনটা আরো খারাপ হয়ে গেলো। আমার তখন শুধু মনে হচ্ছিলো কখন ঢাকায় গিয়ে পৌঁছাবো? যাইহোক যেহেতু ফ্লাইট ডিলে হবে তাই চিন্তা করলাম ততক্ষণে সমস্ত প্রাকৃতিক কাজকর্ম সেরে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেই। ফ্লাইটে ওঠার কিছুক্ষণ আগে জানতে পারলাম আমাদের প্লেন প্রথমে সিলেট এয়ারপোর্টে গিয়ে ল্যান্ড করবে। সেখান থেকে কিছু যাত্রী নামার পরে আবার ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেবে। মানে এখানেও প্রায় এক দেড় ঘন্টা সময় নষ্ট হবে। যাইহোক যথা সময়ে আমাদেরকে এনাউন্সমেন্ট করে প্লেনে উঠতে বললে আমরা সকলে প্লেনে উঠে যার যার নির্ধারিত সিটে গিয়ে বসলাম।


তারপর যথারীতি যা হয় সেভাবেই প্লেন চলতে লাগলো। তবে আমি বাংলাদেশ বিমানের কেবিন ক্রুদের ব্যবহারে খুব হতাশ। এ ব্যাপারে আজকের পোস্টে বিস্তারিত কিছু লিখবো না। পরবর্তী কোনো এক পোস্টে তাদের বিষয়ে কিছু কথা তুলে ধরবো। আমরা রাত আটটা থেকে সাড়ে আটটার দিকে সিলেটে ল্যান্ড করলাম। সিলেটে আমাদের বিমান ল্যান্ড করার পরেই আমি আমার ফোনের সুইচ অন করে আমার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলাম। তবে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে গিয়ে যা শুনতে পেলাম তাতে দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলাম। আমার বোন এবং আমার স্ত্রী দুজনই আমাকে বলছিলো এয়ারপোর্ট থেকে যেন বের না হই। কারণ ঢাকার অবস্থা নাকি খুবই খারাপ।


যদিও আমরা সৌদি আরব থাকা অবস্থায় শুনতে পেয়েছিলাম ঢাকায় বেশ ঝামেলা হচ্ছে। কিন্তু অবস্থা যে এতটা খারাপ হবে সেটা চিন্তা করতে পারিনি। আমি তখন শুধু চিন্তা করছিলাম এয়ারপোর্ট থেকে কিভাবে বোনের বাসায় পৌঁছাবো। যাই হোক সিলেট থেকে আমাদের বিমান ঢাকায় পৌঁছাতে খুব একটা বেশি সময় নেয়নি। ঢাকায় যখন আমরা ল্যান্ড করলাম তখন সম্ভবত রাত সাড়ে নটা বা দশটা বাজে। কিন্তু সেখানে বিমান থেকে নামার পরেই একের পর এক দুঃসংবাদ পেতে লাগলাম। আমার সমস্ত আত্মীয়-স্বজন আমাকে ফোন করে বলতে লাগলো এয়ারপোর্ট থেকে যেন রাতে বের না হই। শেষ পর্যন্ত অবশ্য একটি গাড়ি নিয়ে আপুর বাসায় পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছিলাম। সেই অভিজ্ঞতাও ছিল রীতিমতো ভয়াবহ এক অভিজ্ঞতা। যাই হোক এভাবেই আমার সৌদি আরব থেকে দেশে আসার জার্নি শেষ হয়েছিলো।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসHONOR 90
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানমদিনা, সৌদি আরব

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP


Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness



OR

SET @rme as your proxy



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok