সরকারি দপ্তরের কাজে দীর্ঘসূত্রিতা।

rupok -

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


আজকে সকালে একটি কাজের জন্য গিয়েছিলাম ফরিদপুর পৌরসভায়। যে কাজের জন্য গিয়েছিলাম সেই কাজটা ছিল খুবই ছোটো। আমরা বাসায় পৌরসভার একটা পানির লাইন নিয়েছিলাম। সেই লাইনটা ডিসকানেক্ট করার জন্য গিয়েছিলাম পৌরসভায়। কিন্তু তারা জানালো মাসের প্রথম ১৫ তারিখের ভেতর আসতে হবে। না হলে লাইন ডিসকানেক্ট করা যাবে না। অথচ এই কাজটা ছিলো একেবারেই সামান্য একটা কাজ। তারা ইচ্ছা করলে আমার কাছ থেকে রানিং মাসের বিল নিয়ে আমার লাইন ডিসকানেক্ট করে দিতে পারতো। আমার কোনো সমস্যা ছিলো না। কিন্তু সেটা হোলো না। তারা আমাকে বললো আগামী মাসের শুরুর দিকে আসতে।

এই যে সরকারি যে কোনো কাজে দীর্ঘসূত্রিতা এটা আমাদের দেশে নতুন নয়। সরকারি যে কোন দপ্তরের কাজে এরকম দীর্ঘ সূত্রীতা বহু পুরাতন। সরকারি যেকোনো দপ্তরে কাজের জন্য গেলে মনে হবে তারা আপনাকে হয়রানি করার জন্য বসে রয়েছে। তাদের কাছ থেকে আপনি কোন রকম সাহায্য সহযোগিতা পাবেন না। যদি সাহায্য সহযোগিতা পেতে চান তাহলে তার জন্য আপনাকে বাড়তি টাকা খরচ করতে হবে। অথচ সরকারি এই দপ্তর গুলিকে বানানো হয়েছে জনগণের সহায়তার জন্য। কিন্তু তাদের কাছে গেলে মনে হয় তারা আমাদের হয়রানি করার জন্য বসে রয়েছে। আমি এখন পর্যন্ত এমন কোন সরকারি দপ্তরের লোককে দেখতে পাইনি যিনি আগ্রহ সহকারে কোন সাহায্য প্রার্থীকে সহযোগিতা করছেন। পৌরসভায় গিয়ে যখন কাজ হোলো না তখন গেলাম ফরিদপুর জজ কোর্টে। সেখানেও আমার একটি কাজ ছিলো।


কোর্টে গিয়েছিলাম মূলত একটি বহু পুরাতন মামলার কাগজ উঠানোর জন্য। এই ধরনের কাগজগুলো কোর্টের রেকর্ড রুমে থাকে। প্রথম দিন গিয়ে একজন পরিচিত লোকের সাথে কথা বললাম যে কিভাবে কাগজটা উঠানো যায়। তিনি আমাকে বললেন এটা কোনো ব্যাপারই না। আপনি কিছু টাকা দিয়ে যান। আমি কাগজ উঠানোর ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। এই কথা বলে আমার সামনেই রেকর্ডরুমের দুজনকে কিছু টাকা দিলেন আমার কাগজ উঠানোর জন্য। তারপর আমাকে বললেন কয়েকদিন পরে যোগাযোগ করতে। আমি সাত দিন পরে যোগাযোগ করলে তিনি জানালেন কাগজটা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমি তখন তাকে বললাম দরকার হলে আরো কিছু টাকা দিচ্ছি আপনি তার পরেও তাড়াতাড়ি কাগজটা খুঁজে বের করার ব্যবস্থা করুন। এই কথা বলে আমি আরো কিছু টাকা তাদেরকে দিলাম। সেটাও প্রায় এক মাস হয়ে গেলো। এখন পর্যন্ত আমার সেই কাগজের হদিস পাইনি। এর ভেতরে আমি আরো একদিন গিয়েছিলাম সেখানে। গিয়ে দেখতে পেলাম আমার মত আরও অনেকে এসেছে রেকর্ডরুম থেকে বিভিন্ন রকম কাগজ উঠানোর জন্য। তাদের দু'একজনকে দেখতে পেলাম যারা কয়েক মাস ধরে ঘোরাফেরা করছে কাগজের জন্য। কিন্তু তারা তাদের প্রয়োজনীয় কাগজটা পায়নি।


এই যে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের লোকজনের অসহযোগিতা এবং অদক্ষতার জন্য মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। এই ভোগান্তি দেখার কেউ নেই। বাড়তি টাকা দিয়েও আমরা আমাদের কাঙ্খিত সেবাটা পাচ্ছি না। দুই দফা টাকা দিয়েও আমাকে এখনো অনিশ্চয়তায় বসে থাকতে হচ্ছে। কিন্তু এগুলো কার কাছে বলবো? কার কাছে বললে এই সমস্যার প্রতিকার পাওয়া যাবে? এগুলো বলার কোন বা শোনার কোন মানুষ নেই। সবাই ব্যস্ত রয়েছে যার যার আখের গোছাতে। সাধারণ মানুষ জনের সমস্যার দেখার কেউ নেই এই দেশে। এই দেশে শুধু ক্ষমতাবান মানুষেরাই শান্তিতে রয়েছে। সাধারণ মানুষের অবস্থা খুবই খারাপ। ন্যূনতম নাগরিক সুবিধা পাওয়ার জন্য আপনাকে রীতিমতো লড়াই করতে হবে। এ কারণেই দেশের মানুষ সুযোগ পেলেই দেশের বাইরে চলে যায়। কারণ উন্নত বিশ্বে আর যাই হোক আপনাকে এই ধরনের হয়রানি হতে হবে না। কিন্তু আমাদের মতো সাধারণ মানুষ যারা দেশে রয়েছেন তাদের জন্য তো কোন পথ খোলা নেই। যার ফলে আশা করে বসে আছি কখনো হয়তো এই দেশে জনবান্ধব কোন সরকার আসবে। যে দেশের সাধারণ মানুষের কষ্টের কথা উপলব্ধি করতে পারবে। এখন সেই আশায় দিনগুনি।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসHONOR 90
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানফরিদপুর

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP


Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness



OR

SET @rme as your proxy



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok