বিভীষিকাময় রাতের অভিজ্ঞতা (প্রথম পর্ব)।

rupok -

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


এর আগের কয়েকটা পোস্টে আমি আপনাদের সাথে আমার সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে পৌঁছানোর অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছি। কিন্তু দেশে পৌঁছানোর পর যে ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিলাম আজকের পোস্টে সেটাই শেয়ার করবো। আপনাদেরকে আগেই জানিয়েছি যে আমাদের বিমান সিলেটে ল্যান্ড করার পরেই আমি দেশের পরিস্থিতি সম্বন্ধে কিছুটা ধারণা পাই। কিন্তু আমাদের বিমান যখন সিলেট থেকে ঢাকায় ল্যান্ড করলো তারপরই আমি পরিস্থিতির ভয়াবহতা পুরোপুরি বুঝতে পারলাম। আমরা যখন লাগেজ বুঝে নিয়ে এয়ারপোর্ট থেকে বের হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি তখন একের পর এক আমার কাছে ফোন আসতে লাগলো। আমার বড় বোন আমার স্ত্রী আরও কয়েকজন আমাকে ফোন করে বারবার বলতে লাগলো পরিস্থিতি ঠান্ডা হওয়ার আগে যেনো আমি এয়ারপোর্ট থেকে বের না হই।

কিন্তু দীর্ঘ জার্নির ক্লান্তির ফলে আমার তখন শুধু মনে হচ্ছিলো কোনোভাবে বাসায় গিয়ে পৌঁছাতে পারলেই আমি বাঁচি। কিন্তু তাদের কথা আমি উপেক্ষা করতে পারছিলাম না। এদিকে আমি খেয়াল করে দেখি আমাদের সাথে যারা ছিলো তারা সবাই বিভিন্ন উপায়ে তাদের বাড়ির দিকে রওনা দিয়ে চলে গিয়েছে। আমি লাগেজ বুঝে পাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই একটা ফোনের মাধ্যমে জানতে পারি যে দেশে কারফিউ জারি করা হয়েছে। রাতের ভেতরে নাকি রাস্তায় আর্মি নামবে। আর তাদের নাকি শুট অ্যাট সাইট অর্ডার দেয়া হয়েছে। মানে দেখা মাত্র গুলি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই কথা শুনে তো আমি প্রচন্ড ভয় পেয়ে গেলাম। তখন আমি চিন্তা করতে লাগলাম এখন কি করা যায়? এর ভেতরে এয়ারপোর্টের একটি অ্যানাউন্সমেন্ট শুনতে পেলাম। সেই অ্যানাউন্সমেন্টে বলা হচ্ছিলো যে যে সমস্ত হজ থেকে ফিরে আসা যাত্রীরা বাড়িতে যেতে পারবেন না। তাদের রাত যাপনের জন্য হজ ক্যাম্পে ব্যবস্থা করা হয়েছে।


এই অ্যানাউন্সমেন্ট শুনে কিছুটা ভালো লাগলো। এদিকে আবার আমার এক খালাতো বোন সে ফোন দিয়ে তার বাসায় যেতে বলেছিলো। যদিও তার বাসায় যাওয়ার রাস্তার কি অবস্থা সেটা সম্বন্ধে তার অথবা আমার কারোরই তেমন পরিষ্কার কোন ধারনা ছিলো না। যার ফলে আমি তার বাসায় যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করে দেই। কারণ তখন মনে হচ্ছিলো যদি বোনের বাসায় ফিরতে নাও পারি তাহলে রাতটা অন্তত হজ ক্যাম্পে কাটানো যাবে। তখন আমার দুলাভাই আমাকে ফোনে জানালো সে চেষ্টা করছে এয়ারপোর্টে তার চ্যানেলের একটা গাড়ি পাঠানোর জন্য। তবে যদি সে রাতে গাড়ি নাও পাঠাতে পারে তাহলে সকালে সে আমাদের জন্য তাদের নিউজ চ্যানেলের একটা গাড়ি পাঠাবে।

দুলাভাইয়ের সাথে কথা হওয়ার পর কিছুটা আশ্বস্ত হলাম। চিন্তা করলাম যে রাতে যদি বাসায় নাও ফিরতে পারি তাহলে অন্তত সকাল বেলায় বাসায় ফিরে যেতে পারবো। এদিকে আমরা তখন পর্যন্ত না খেয়েছিলাম। ইতিমধ্যে রাত বারোটার বেশি বেজে গিয়েছিলো। এয়ারপোর্টের দোকানগুলোতে দেখলাম খাওয়ার মত কোন খাবারই অবশিষ্ট নেই। তখন আমি এয়ারপোর্টের সামনে থাকা একটি দোকান থেকে হালকা কিছু খাবার নিয়ে গেলাম খাওয়ার জন্য। চিন্তা করলাম যে আপাতত এগুলো দিয়েই কোন রকমে পেটটা ঠান্ডা করি। এভাবে বেশ কিছুক্ষণ এয়ারপোর্টের ভেতরে কাটানোর পরে আমাদের হজ ক্যাম্পে যাওয়ার জন্য ডাক পড়লো। (চলবে)

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসHONOR 90
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানফরিদপুর

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP


Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness



OR

SET @rme as your proxy



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok