"দাম্পত্য জীবনে সুখী হতে গেলে, কিছু জিনিস আমাদের অবশ্যই মাথায় রাখা উচিত!"
14 comments
আমার কাছে কি মনে হয় জানেন তো? যে ব্যক্তি দাম্পত্য জীবনে সুখী পরিবারকে নিয়ে ভালো আছে! তার জন্য বিশ্ব জয় করা মোটেও অসম্ভব কিছু নয়। এই বিষয়টা বলার পেছনে আর কিছু কারণ রয়েছে! কিন্তু কারণ আমাদের জীবনটা শুরু হয় পরিবার থেকে! পরিবার থেকে আমরা বড় হই! সমাজ সম্পর্কে জানতে পারি! বড় হওয়ার পর বিয়ের মাধ্যমে নতুন জীবন শুরু করি।
বিয়ের মাধ্যমেই আমরা আমাদের জীবনসঙ্গী খুঁজে পাই! এবং সেই মানুষটার সাথে আমাদের বাকিটা জীবন কাটাতে হয়! বাকিটা জীবন কাটাতে গিয়ে অনেক কিছু ছাড় দিতে হয়! অনেক কিছু মেনে নিতে হয়! আবার অনেক কিছু সহ্য করে নিতে হয়! এভাবেই আমরা সঙ্গির সাথে বাকিটা জীবন কাটিয়ে দিতে পারি।
আমি এমন অনেক দম্পত্যি দেখেছি। যারা কিনা বিয়ের সময় একজন আরেকজনের প্রতি ভালোবাসা থাকে একরকম। কিন্তু দিন দিন সেটা পরিবর্তন হতে থাকে। সেটা একরকম থাকে না। আবার সুখী দম্পত্যি যারা, তারা বিয়ের প্রথম দিন যেমন তার সঙ্গীকে ভালবাসে। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত একই রকম ভালোবাসা তাদের মধ্যে থেকে থাকে। আজকে আমি ব্যতিক্রম ধর্মী কিছু পয়েন্ট আপনাদের সাথে উল্লেখ করবো। একটা মানুষের সুখে থাকা পরিবারকে নিয়ে ভালো থাকা। এবং সুখী দাম্পত্য জীবন কিভাবে গঠন করা যায়। সেই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করব।
কর্মক্ষেত্র থেকে ফিরে এসে আপনি যতই ব্যস্ত থাকুন না কেন? আপনার জীবনসঙ্গীর সাথে একবার হলেও আলিঙ্গন করুন। আমার কাছে মনে হয় আমরা কাজের জায়গায় অনেক বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়ি। দিনশেষে আমাদেরকে বাড়িতে ফিরে আসতে হয়। আর সুখী দম্পতি যারা রয়েছে। তারা বাড়ি ফিরে প্রথমত একজন আরেকজনকে আলিঙ্গন করে। তারপরেই তারা আবার চাঙ্গা হয়ে ওঠে। এবং তাদের মধ্যে আবারও স্বস্তি ফিরে আসে। আবারও কাজ করার প্রবণতা ফিরে আসে।
আপনার সঙ্গীর দোষ খোঁজা বন্ধ করুন। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে। যারা কিনা জীবনসঙ্গী গ্রহণ করে ঠিকই। কিছুদিন সঠিকভাবে তাদের জীবন চলে এর পরেই তারা একজন আরেকজনের দোষ খুঁজতে থাকে। এতে করে সংসারে অশান্তির সৃষ্টি হয়। আমরা জীবনকে যেভাবে গ্রহণ করবো। জীবন আমাদের সাথে ঠিক সেই ভাবেই পরিচালিত হবে। আমরা আমাদের প্রিয় মানুষটাকে যেভাবে আমাদের জীবনে গ্রহণ করব। সেই মানুষটা ঠিক সেই ভাবেই আমাদেরকে তার জীবনে গ্রহণ করবে। তাই আমি মনে করি প্রিয় মানুষের দোষ খোঁজা অবশ্যই বন্ধ করা উচিত। এতে করে আমরা আমাদের দাম্পত্য জীবনে, অনেক সুখে থাকতে পারবো।
আপনার সঙ্গী কে অবশ্যই বিশ্বাস এবং ক্ষমা করতে হবে। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে জীবনসঙ্গীকে কখনো বিশ্বাস করে না। আবার কিছুদিন বিশ্বাস করলে সেটাও সঠিকভাবে কন্টিনিউ করেনা। ক্ষমা করতে জানে না, একটু অন্যায় করলেই তার ওপর রাগ করে। অনেক বড় অন্যায় নিজেও করে ফেলে। কিন্তু নিজের অন্যায় চোখে দেখতে পায় না। এভাবে ঝগড়া সৃষ্টি হয়, সুখে বসবাস করতে গেলে কিছু জিনিস আমাদেরকে মেনে নিতেই হবে। কেননা জীবনসঙ্গী হিসেবে যেই মানুষটাকে গ্রহণ করেছি। তাকে যদি বিশ্বাস করতে না পারি, তাকে যদি ক্ষমা করতে না পারি। তাহলে জীবনে সুখ আসবে বলে আমার মনে হয় না। তাই প্রিয় মানুষটাকে বিশ্বাস করুন এবং ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখুন। যদি তিনি কোন অন্যায় করে ফেলেন। তাহলে তাকে বোঝান, অবশ্যই তিনি বুঝতে পারবেন।
জীবনসঙ্গীর হাতে হাত ধরে একটু হাঁটতে চেষ্টা করুন। অনেক সময় দেখা যায় আমরা আমাদের প্রিয় কোন দর্শনীয় স্থানে ঘুরতে যাই। যারা প্রিয় মানুষের হাত ধরে পথ চলা শুরু করে। তারা বুঝতে পারে ওই জায়গায় যে দর্শনীয় স্থানগুলো রয়েছে। সেগুলো দেখার চাইতে প্রিয় মানুষের হাত ধরে হাঁটা কত বেশি গুরুত্বপূর্ণ, এবং কত মজার একটা বিষয়। তাই সর্বদা চেষ্টা করবেন প্রিয় মানুষের হাত ধরে অনেক দূর এগিয়ে যেতে। দেখবেন আপনার দাম্পত্য জীবন অনেক বেশি সুখের হবে।
- দুইজন একই সময়ে ঘুমানোর চেষ্টা করুন। বিয়ের পর আমরা কি করি একজন স্বামী এবং একজন স্ত্রী অপেক্ষা করি। কখন রাত হবে কখন আমরা একসাথে বিছানায় গিয়ে ঘুমাবো। এবং কখন নিজেরা নিজেদের মনের কথাগুলো একজন আরেকজনের সাথে শেয়ার করব। এই জিনিসটা সারাটা জীবন ধরে রাখার চেষ্টা করুন। কেননা আপনি যখন আপনার জীবন সঙ্গীর জন্য বিছানায় বসে অপেক্ষা করবেন। তখন সেই মানুষটা বুঝতে পারবে আপনি তাকে কতটা ভালোবাসেন। জীবনসঙ্গীর জন্য অপেক্ষা করা, এবং তার সাথে নিজের মনের কথাগুলো শেয়ার করা। নিজেরা একান্ত সময় কাটানো। এই মুহূর্তগুলো অনেক বেশি দরকার জীবনে।
সুখী হতে গেলে অনেক বেশি টাকার প্রয়োজন হয়। এমন কোন কথা বা কোন গল্প আমি আমার জীবনে পড়িনি। কিন্তু সুখী হতে গেলে ধৈর্য, আত্মবিশ্বাস, ক্ষমা করার প্রবণতা, একটা মানুষের মধ্যে থাকাটা অনেক বেশি দরকার। যে মানুষটা এই জিনিসগুলো নিজের জীবনে আয়ত্ত করে নিতে পারে। তার দাম্পত্য জীবন অনেক বেশি সুখী হয়ে থাকে।
আমরা জানি একটা মানুষ সবসময় একরকম থাকে না। কিন্তু সেই মানুষটাকে আমাদের জীবনে একই রকম ভাবে রাখার জন্য। আমাদের নিজেদের কিছু অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। নিজেরা অনেক কিছু মেনে নিতে হবে। অনেক কিছু ছাড় দিতে হবে। তাহলেই হয়তোবা জীবনসঙ্গীর সাথে জীবনটা অনেক সুন্দর ভাবে কাটাতে পারব। সবার সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আল্লাহ হাফেজ।
meraindia |
---|
Comments