মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা ।। শুভ নববর্ষ ❤️
6 comments
নমস্কার,,
আজ পহেলা বৈশাখ। বাংলা বছরের শুভ সূচনা হলো। তাই আমার বাংলা ব্লগের প্রতিটি সদস্যকে জানাচ্ছি বাংলার নববর্ষের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। নতুন বছর প্রতিটি প্রাণে সজীবতা নিয়ে আসুক এবং সকল অশুভ শক্তিকে বিদায় দিয়ে শুভ শক্তিকে সাদরে বরণ করে নিক এমনটাই প্রত্যাশা করছি। পহেলা বৈশাখ প্রতিটি বাঙালির অস্তিত্বকে ধারণ করে। শুধু ধারণ করলে বললে ভুল হবে, বাঙালি মনে প্রানে ধারণ ও পালন করে পহেলা বৈশাখ কে। প্রতিটা বছর নতুনের বার্তা নিয়ে হাজির হয় বৈশাখ এই দিন। দীর্ঘ পথ পরিক্রমার পর অনেক হিসেব-নিকেশ চুকিয়ে শুরু হল নতুন বছরের পথ চলা।
মোটামুটি সারাদেশেই নানান উৎসবের মাধ্যমে পালিত হয় পহেলা বৈশাখ। মঙ্গল শোভাযাত্রা, পান্তা ইলিশ খাওয়া, বৈশাখী মেলা, বাউল গানের আসর এসব কিছুই বাঙালির চিরায়িত ঐতিহ্যকে ধারণ করে আসছে। ছোটবেলা থেকেই পহেলা বৈশাখের সকালে বেরিয়ে যাই বাড়ি থেকে। সবার সাথে হৈ হুল্লোড় করে বর্ষবরণ করে তবেই বাড়ি ফিরি। আজকেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
ঈদে তো বাড়ি যাওয়া হয়নি। তাই ঢাকাতেই ছিলাম এবারের বৈশাখে। সকালে যে মঙ্গল শোভাযাত্রায় যাব এরকম প্ল্যান সাত দিন আগেও ছিল না। কারণ প্রচন্ডমাত্রায় গরম শুরু হয়েছে ঢাকায়। কিন্তু বগুড়া থেকে আমার বন্ধু সৌরভ আসে ঢাকাতে ঘুরতে। ওর খুব ইচ্ছে ছিল মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া। এজন্য আর ভাবাভাবি না করে সকালবেলায় ঘুম থেকে উঠে রওনা দিলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের দিকে। আর সেই সাথে আমার কলিগ সুব্রতদাকেও জোর করে নিয়ে আসলাম সেখানটায়।
সকাল ৯ টার কিছু পর পরই শুরু হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। হাতি, টেপা পুতুল, ভোঁদড় আরো নানান সব কারুকার্য নিয়ে এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রা এগিয়ে গেছে সামনের দিকে। সাথে ছিল ঢাকের বাজনা। বাঙালির প্রাণের সাথে মিশে যায় এই ঢাকের শব্দ। প্রচন্ড গরম উপেক্ষা করেই সবাই নেচে গেয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নেয়। এই উৎসবের আনন্দটুকু অংশ গ্রহণ না করলে কেউ কখনো অনুভব করতে পারবে না। মঙ্গল শোভাযাত্রায় আরো কিছু বন্ধু এবং বান্ধবীর সাথে দেখা হয়ে যায় দীর্ঘদিন পর। বেশ ভালো লাগে সবার সাথে সময় কাটিয়ে।
মঙ্গল শোভাযাত্রা শেষ করে চলে গেলাম প্রথমে রমনা কালী মন্দিরে। সেখানে মাকে প্রণাম জানিয়ে কিছুটা সময় নিরিবিলিতে অবস্থান করি আমরা কয়েকজন। তারপর যাই ঢাকেশ্বরী মন্দিরে। আসলে নতুন বছরের শুরুর দিনটা বাবা-মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে শুরু করতে হয়। যেহেতু মা বাবার কাছ থেকে কিছুটা দূরে আছি তাই মন্দিরে গিয়ে মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে নতুন বছর শুরু করলাম। সবকিছু মিলিয়ে সকাল থেকে সারাটা দুপুর ভীষণ ভালো কেটেছে আজ।
নতুন বছর নতুন বার্তা নিয়ে সকলের কাছে হাজির হোক এমনটাই প্রত্যাশা করি। আর যেটা ভালো যেটা কল্যাণকর এবং মঙ্গলময় সকলের জন্য সেটাই যেন ঈশ্বর আমাদের দান করেন এই প্রার্থনা করি।
Comments