ট্রাভেল || বাংলাদেশ ভ্রমণ: গ্রাম ঘুরে দেখা (পর্ব -০৩)

ronggin -

নমস্কার,

তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও মোটামুটি ভালো আছি।

আজকের নতুন একটি ব্লগে সবাইকে স্বাগতম। আজকের ব্লগে ভ্রমনমূলক একটি পোস্ট শেয়ার করবো তোমাদের সাথে। আজকের তৃতীয় পর্বের এই ব্লগে বাংলাদেশের একটি গ্রাম ঘুরে দেখা সম্পর্কে আরো বেশ কিছু কথা শেয়ার করব।

দ্বিতীয় পর্বের লিংক

তোমাদের আগেও বলেছি, বাংলাদেশের ওই গ্রাম ঘোরাঘুরির সময় আমাদের গন্তব্য ঠিক করা ছিল না । আমরা শুধু রাস্তা দিয়ে চলার সময়, রাস্তার দুই পাশের গ্রামের দৃশ্য দেখতে দেখতে এগিয়ে যাচ্ছিলাম সামনের দিকে। সামনের দিকে আমরা কি দেখতে পাবো, সেই সম্পর্কে আমাদের কোন ধারণা ছিল না। তবে এতোটুকু বিশ্বাস ছিল নতুন নতুন জিনিস দেখতে পাব, যেহেতু গ্রাম ভ্রমণ করছি। কিছু দূর এগিয়ে আসার পর দেখতে পাই খালের এক অপরূপ দৃশ্য।

খালের সৌন্দর্য দেখতে দেখতে চোখে পড়ে খালে থাকা ভেসাল জাল । এটির মাছ ধরার ফাঁদ হিসাবে ব্যবহার করে থাকে জেলেরা। এটিকে অনেকে আবার বেয়াল জালও বলে। এটি মাছ ধরার এমন এক পদ্ধতির জাল ছিল যা জলের একটি নির্দিষ্ট গভীরতা পর্যন্ত ডুবিয়ে দিয়ে, কিছু সময় অপেক্ষা করে জাল উঠিয়ে তারপর মাছ ধরা হয়। এইগুলো অনেক রকম আকারেও হয়ে থাকে। যাইহোক, আমরা যে সময় গেছিলাম, সেই সময় এই ভেসাল জাল দিয়ে মাছ ধরার কোন দৃশ্য দেখতে পাইনি। তবে আশেপাশে যে দৃশ্যগুলো দেখছিলাম তাই আনন্দ সহকারে উপভোগ করি। সেখানে দাঁড়িয়ে গাছের ফাঁক দিয়ে দূরের সুন্দর দৃশ্য দেখতে জাস্ট অসাধারণ লাগছিল। সূর্য ডুবে যাওয়ার মুহূর্ত ছিল, সেই জন্য চারপাশটা একটা অন্যরকম সৌন্দর্যে ভরে উঠেছিল। সেখানে কিছু সময় দাঁড়িয়ে, আমরা পুনরায় সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকি।

একটু এগিয়ে আসার পর আমরা একটি পুকুর দেখতে পাই যার উপরে কমলা কালারের একটা আস্তরণ পড়ে ছিল। এমন ধরনের পুকুর আমি আগেও দেখেছিলাম যখন আমরা আমাদের জার্নি শুরু করেছিলাম। এই নিয়ে তোমাদের যদিও আগেও বলেছিলাম। এখানকার অধিকাংশ পুকুরই আমি এরকম দেখতে পাচ্ছিলাম। সত্যি বলতে পুকুরের উপরে এমন কমলা কালারের আস্তরণ কেন পড়েছে, সেটা নিয়ে আমি কিছুই জানতাম না । তবে দেখতে অন্যরকম লাগছিল ব্যাপারটা। এখানে দাঁড়িয়েও আমি চারপাশের দৃশ্য দেখে কিছু ফটোগ্রাফি করে রাখি। এই পুকুরের পাশ দিয়েও রাস্তা চলে গেছিল, এটা মূলত বিলের দিকে চলে গেছিল। যা ওইখানে দাঁড়িয়ে আমি বুঝতে পারছিলাম।

আর কিছুদূর এগিয়ে আসার পর দেখতে পাই খালে থাকা অনেক বাঁশের বাঁধ। এই বাঁধ দেওয়ার সিস্টেমটাও আলাদা ছিল । জেলেরা বাঁশের পাটা দিয়ে এই বাঁধগুলো তৈরি করেছিল। এটা দিয়ে তারা জলের স্রোত অনেকটা কমিয়ে মাছ ধরার জন্য এখানে বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জাম পেতে রাখে। এই সম্পর্কে যদিও আমি বিস্তারিত সব কিছু জানিনা। তবে ওইখানে দাঁড়িয়ে যতটুকু যা বুঝতে পেরেছিলাম সেটাই শেয়ার করলাম। এইখানে অনেক জালও ছিল যেগুলো সম্ভবত জেলেরা মাছ ধরে সেগুলোর মধ্যে রাখার জন্য রেখেছিল।

এইসব দেখতে দেখতে মেইন রাস্তা দিয়ে আর কিছু পথ এগিয়ে আসার পরে আমরা এক জেলের মাছ ধরার দৃশ্য দেখতে পাই। এটা আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছিল, মনে হচ্ছিল অনেক সময় ধরে অপেক্ষা করছিলাম এরকম কোন দৃশ্য দেখার জন্য। সেই জেলে টি নৌকায় বসে, ধরে আনা বিভিন্ন মাছগুলোকে আলাদা আলাদা জায়গায় রাখছিল।তবে সেদিন সে বেশি মাছ পাইনি, সে তার সেই দুঃখের গল্প গুলোই বলছিল আমাদের যখন তার কাছে মাছ ধরা সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করি। সে এটাও জানায়, আগে যেমন মাছ পাওয়া যেত এখন নাকি তেমন আর মাছ পাওয়া যায় না। কারণ খালে সবাই বাঁশের পাটা দিয়ে বাঁধ করে দিয়েছে , এইজন্য মাছ আর আগের মতো তারা পায় না। এইখানে দাঁড়িয়েও দূরের অনেক সুন্দর দৃশ্য দেখার সুযোগ হচ্ছিল। আমি বারবার চলার পথে হঠাৎ করে দাঁড়িয়ে যাচ্ছিলাম এই দৃশ্যগুলো উপভোগ করার জন্য। গ্রামের এই সুন্দর প্রকৃতি আমাকে মুগ্ধ করে তুলেছিল ।

চলবে...


পোস্ট বিবরণ

শ্রেণীট্রাভেল
ডিভাইসSamsung Galaxy M31s
ফটোগ্রাফার@ronggin
লোকেশননড়াইল, বাংলাদেশ।
বন্ধুরা, বাংলাদেশের গ্রাম ঘোরাঘুরি নিয়ে শেয়ার করা তৃতীয় পর্বের এই ব্লগটি তোমাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট এর মাধ্যমে জানিও । সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে






আমার পরিচয়

আমি সুবীর বিশ্বাস( রঙিন)। কলকাতার বারাসাতে আমি বসবাস করি। আমি স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে আমার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিস এন্ড ফিসারিস সাবজেক্ট নিয়ে। বর্তমানে আমি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যানরত আছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে একটু শান্ত স্বভাবের । চুপচাপ থাকতেই বেশি ভালোবাসি আমি। নতুন নতুন জিনিস শিখতে আমার খুব ভালো লাগে। মাঝে মাঝে আর্ট করা, ফটোগ্রাফি করা, রেসিপি করা , গল্প লেখা আমার বেশ ভালো লাগে। আমি স্টিমিটকে অনেক ভালোবাসি এবং সব সময় স্টিমিটে কাজ করতে চাই।

🌷🌷 সমাপ্ত 🌷🌷