স্মৃতিচারণ: ছোটবেলায় জলে ডোবার গল্প

ronggin -

নমস্কার সবাইকে,

তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও ভালো আছি।

ইমেজ সোর্স

বন্ধুরা, আজকের নতুন একটি ব্লগে তোমাদের সবাইকে স্বাগতম। আজকের এই ব্লগে তোমাদের সাথে আমার জীবনে ঘটে যাওয়া ছোটবেলার একটি স্মৃতিচারণ শেয়ার করবো। যেহেতু ছোটবেলাটা আমার গ্রামেই কেটেছে। তাই ছোটবেলা থেকেই গ্রামের পুকুর ঘাট, নদী নালা এসবের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।গ্রামে সব ছেলে মেয়েদেরই সাঁতার শেখার প্রতি আগ্রহ থাকে,আমিও এর ব্যতিক্রম ছিলাম না। প্রথমদিকে আমার বাড়ির লোকেরা আমাকে সাঁতার কাটানো শেখায়। যদিও তখন খুব ভালো করে একটা সাঁতার শিখে উঠতে পারেনি। তবুও ওইভাবেই একদিন আমি সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে একা পুকুর ঘাটে গেছিলাম সাঁতার কাটার জন্য। যদিও বাড়ির বড়রা আমাকে অনেকবার সাবধান করেছিল যেন আমি পুকুর ঘাটে একা একা না যাই। তবুও আমি তাদের কথা অমান্য করে একা একা পুকুর ঘাটে চলে যাই সাঁতার কাটার জন্য। আর ওইদিনই আমার সাথে ঘটে যায় সেই দিনের স্মরণীয় ঘটনা। যদিও আমি ঠিকমতো সাঁতার কাটতে পারতাম না তবুও আমি পুকুরে নামার পর পুকুরের ধার দিয়ে সাঁতার কাটতে চেষ্টা করি এবং আমি মোটামুটি পারছিলামও।

আর আমাদের ওই পুকুর অনেক গভীর ছিল। পুকুরের ধার দিয়ে যদিও সাঁতার কাটতে পারছিলাম কিন্তু এমন করতে করতে এক পর্যায়ে আমি পুকুরের গভীরে চলে যাই আমার অজান্তেই এবং আমি গভীরে গিয়ে দুর্বল হয়ে পরার কারণে বেশ অনেকটাই জল খেয়ে ফেলি আর পুকুরের মাঝেই ছটফট করতে থাকি। এমন সময় পুকুরের পাশ দিয়ে আমার পাড়ার এক দাদা হেঁটে যাচ্ছিলো। তিনি আমাকে ওই অবস্থায় দেখতে পান এবং আমাকে তাড়াতাড়ি করে পুকুর থেকে পুকুরের পাড়ে তোলে এবং আমি পুকুরের গভীরে অনেক জল খেয়ে ফেলায় আমি অচেতন হয়ে পরি । তখন দাদা আমার পেট থেকে জল বের করার চেষ্টা করে এবং নানাভাবে আমার জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করে। এসব করতে করতে এক পর্যায়ে কিছুক্ষণ পর আমার জ্ঞান ফিরে আসে। তারপর দাদা আমাকে আমার বাড়িতে নিয়ে যায় এবং আমার বাড়ির লোককে সব ঘটনা খুলে বলে।

বাড়ির লোকজন প্রথমদিকে অনেক ভয় পেয়েছিল এবং টেনশন করছিলো পাশাপাশি অনেক রাগও করছিলো। পরবর্তীতে আমি যেন এরকম বিপদের সম্মুখীন না হই তাই জন্য বাড়ির লোকেরা এক প্রকার দায়িত্ব নিয়েই আমাকে ভালোভাবে সাঁতার শেখানোর সিদ্ধান্ত নেয় এবং শেখায়। যদিও এই ঘটনার পর থেকে অনেকদিন আমি জলে নামতে অনেক ভয় পেতাম। তবে আমি যেহেতু মোটামুটি সাঁতার কাটতে পারতাম খুব একটা ভালো পারতাম না। কাজেই মনের মধ্যে এই ইচ্ছাটা সবসময় ছিল পুরোপুরি ভাবে সাঁতার কাটা শেখার। কারণ আমার গ্রামে এমন অনেকেই ছিল যারা অনেক ভালো সাঁতার কাটতে পারতো। আমারও মনে মনে ইচ্ছা ছিল তাদের মতো সাঁতার শেখার। তাই পরবর্তীতে অনেকদিন ধরেই জলের প্রতি যদিও একটা ভয় কাজ করতো সেই ঘটনার পর থেকেই । কিন্তু মনে মনে ভালোভাবে সাঁতার শেখার ইচ্ছা থেকে এবং বাড়ির লোকের সেই শিখানোর চেষ্টা থেকেই আমি পরিপূর্ণভাবে সাঁতার কাটা শিখে যাই। এরপর থেকে আমি অনেক ভালোভাবেই সাঁতার কাটতে পারি এবং কখনোই আর সেরকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়নি। কিন্তু আজকে অনেকদিন পরেই সেই পুরনো স্মৃতিটি মনে পড়ে গেল। তাই ভাবলাম তোমাদের সাথে শেয়ার করি। আর যার জন্যেই আমার সেই ছোটবেলার ঘটনা আজকে তোমাদের সাথে শেয়ার করা।


◾▪️◾পোস্ট বিবরণ◾▪️◾

শ্রেণীজেনারেল রাইটিং
বন্ধুরা, আজকে শেয়ার করা এই পোস্ট টি তোমাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট এর মাধ্যমে জানিও। সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে






আমার পরিচয়

আমি সুবীর বিশ্বাস( রঙিন)। কলকাতার বারাসাতে আমি বসবাস করি। আমি স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে আমার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিস এন্ড ফিসারিস সাবজেক্ট নিয়ে। বর্তমানে আমি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যানরত আছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে একটু শান্ত স্বভাবের । চুপচাপ থাকতেই বেশি ভালোবাসি আমি। নতুন নতুন জিনিস শিখতে আমার খুব ভালো লাগে। মাঝে মাঝে আর্ট করা, ফটোগ্রাফি করা, রেসিপি করা , গল্প লেখা আমার বেশ ভালো লাগে। আমি স্টিমিটকে অনেক ভালোবাসি এবং সব সময় স্টিমিটে কাজ করতে চাই।

🌷🌷 সমাপ্ত 🌷🌷