আমার অতি সংক্ষিপ্ত ভ্রমণ বিষয়ক আপডেট -১১

rme -


চিড়িয়াখানা থেকে বের হয়েই আমরা ছুটলাম রোপওয়ের দিকে । সিঁড়ি দিয়ে অনেকটা উঁচুতে উঠছি যখন এমন সময় মাঝামাঝি পথে উল্টো দিক থেকে এক অবাঙালি যুবক নেমে আসছিলো, সে আমাদের কে দেখেই বুঝতে পারলো যে আমরা রোপওয়েতে চড়ার জন্য উপরে উঠছি । সঙ্গে সঙ্গে আমাদেরকে নিষেধ করলো সে । বললো রোপওয়ে গত তিন দিন ধরে বন্ধ আছে মেইনটেন্যান্স এর জন্য, ইভেন আজকেও নাকি বন্ধ ।

অগত্যা কি আর করার, আবার সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে এলুম । বুঝলুম এই যাত্রায় রোপ ওয়ে আমাদের কপালে নেই । এরপরে টয়ট্রেনে ঘুরতে ইচ্ছে প্রকাশ করলাম । তখন আমাদের গাড়ির ড্রাইভার খুব সুন্দর করে বুঝিয়ে দিলো যে টয় ট্রেনে নাকি কোনও মজা নেই । দার্জিলিং স্টেশন থেকে ঘুম স্টেশন অব্দি মাত্র ৭ কিলোমিটার টয় ট্রেন জার্নির মাথাপিছু খরচ ১৫০০ টাকা করে, অথচ কিছুই নাকি দেখার নেই, কোনো মজা নেই । অগত্যা ওটাও বাদ দিলাম ।

এরপরে বললাম চলো সিঞ্চল অভয়ারণ্য ও সিঞ্চল লেকে । ড্রাইভার এবারও মাথা নাড়ালো । বললো সিঞ্চল জঙ্গল ও লেকে এখন নাকি প্রবেশ নিষেধ । পরে জেনেছি মিথ্যে বলেছিলো ড্রাইভার । আসলে তারই দূরে যাওয়ার কোনো ইচ্ছে নেই । কাছে পিঠে ঘুরিয়েই টাকা নেবে । এই জন্য পরেরদিন আমরা গাড়ি ও ড্রাইভার চেঞ্জ করেছিলাম । কিন্তু, অনেক জায়গাতেই আর যাওয়া হয়নি, কারণ প্লেনের টিকিট কাটা ছিল আমাদের । ভ্রমণ শিডিউল চেঞ্জ করার তাই কোনো ওয়ে ছিল না ।

যাই হোক রোপ ওয়ে, টয় ট্রেন, সিঞ্চল সব বাতিল হওয়াতে বললাম একটা চা বাগানে নিয়ে যেতে । ড্রাইভার রাজি হলো । চললুম আমরা দার্জিলিং চা বাগানের উদ্দেশ্যে । এই চা বাগানটি দার্জিলিং শহরের খুব কাছেই । অনেকগুলো পাহাড় জুড়ে রয়েছে এই টি স্টেট । আমার ভাই টিনটিনের কাছে থাকলো গাড়িতে । আমি আর তনুজা চা বাগানে প্রবেশ করলাম । একদম পাহাড়ের টপে ছিলাম আমরা ।

তনুজাকে বললাম চলো ওই নীচে নামি । এই বলে আঙ্গুল দিয়ে প্রায় চারশো ফিট নিচে সরু ফিতের মতো একটা পায়ে চলা রাস্তা দেখলাম । দেখেই তো তনুজার হয়ে গেলো । যেতে চায় না আর । পরে অনেক বলে কয়ে নিচে নামালাম তাকে । আমি তো ভীষণ মজা পাচ্ছিলাম । এটাই হলো এডভেঞ্চার । খুব সরু আঁকাবাঁকা মাটির এবড়োখেবড়ো রাস্তা । পাহাড়ি রাস্তা তাই পাহাড়ের কল ঘেসে পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে নিচে নেমে গেছে । রাস্তার একদিকে চা বাগান, আরেকদিকে অতল খাদ । একবার পা ফস্কালে আর খুঁজে পাওয়া যাবে না ।

এটাই মজা । লাইফ রিস্ক যেখানে আছে উত্তেজনা সেখানে মারাত্মক রকমের । সেই উত্তেজনার চোটে আমরা অনেকটাই নিচে নেমে গেলাম । এমন একটা জায়গায় গিয়ে পৌঁছলাম অবশেষে সেখানটায় মানুষের পায়ের ছাপ পড়ে না তেমন বোঝাই যাচ্ছে । এদিকটায় কোনো চা বাগান নেই । আছে শুধু বুনো লতা পাতা, ঝোপ ঝাড় আর পাহাড়ি বুনো ফুল । এখানেই একটা ভাঙা পরিত্যক্ত বাড়ি খুঁজে পেলাম । সেই বাড়ির গেটের সামনে তনুজাকে বসিয়ে ছবি তুললাম ।

এরপরে আরো কিছুটা নিচে নেমে ঘোরাঘুরি করে হঠাৎ উপরে তাকিয়ে দেখি মানুষজন সব খেলনা পুতুলের মতো দেখাচ্ছে, বাড়িঘর, গাড়ি সব কিছুই দুই ইঞ্চির খেলনা হয়ে গেছে । বুঝলাম আর নিচে যাওয়া ঠিক হবে না । এবার ফেরার পালা । আমি দৌড়ে দৌড়ে উপরে উঠতে লাগলাম । আর পেছনে বহু কষ্টে একটু একটু করে তনুজা উঠতে লাগলো । আসলে খাড়াই উঠতে হার্ট আর লাংসের উপরে অসম্ভব প্রেশার পড়ে । উপরে পৌঁছে আমরা এই চা বাগানের চা টেস্ট করলাম ফ্রীতে । এরপরে অনেকগুলো খাঁটি দার্জিলিঙের চায়ের প্যাকেট কিনে রওনা দিলাম আমাদের নেক্সট গন্তব্য "রক গার্ডেন"


আমরা এই ছবি তোলার সময়ে ছিলাম একদম পাহাড়ের টপে । ওই দূরে যতগুলি চা বাগান দেখা যাচ্ছে সব এক একটা পাহাড়ের পুরোটা জুড়ে রয়েছে ।

তারিখ : ১৮ নভেম্বর ২০২২

সময় : দুপুর ০১ টা ৩৫ মিনিট

স্থান : দার্জিলিং, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


ওই দূরে আমাদের গন্তব্য । ওখানে নামবো আমরা । আর নিচের ফটো দেখুন । ওটাই হলো নামার রাস্তা ।

তারিখ : ১৮ নভেম্বর ২০২২

সময় : দুপুর ০১ টা ৪৫ মিনিট

স্থান : দার্জিলিং, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


পাহাড়ি রাস্তার খাদের কিনারে দাঁড়িয়ে তনুজার কিছু ছবি তুললাম । ভয় পাচ্ছিলো বেশ, হে হে :)

তারিখ : ১৮ নভেম্বর ২০২২

সময় : দুপুর ০২ টা ০৫ মিনিট

স্থান : দার্জিলিং, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


এই সেই পরিত্যক্ত বাড়ি । একদম জঙ্গল হয়ে গিয়েছে এখন । এই বাড়িটা আমার আবিষ্কার । এদিকটা তেমন একটা কেউ আসে না । ভূতের ভয় আছে, সাপ খোপের ভয় আছে তাই । এদিকটায় প্রচুর বুনো ফুলের ঝোপ ঝাড়, লতা গুল্মের জঙ্গলে আচ্ছাদিত ।

তারিখ : ১৮ নভেম্বর ২০২২

সময় : দুপুর ০২ টা ১৫ মিনিট

স্থান : দার্জিলিং, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


ক্যামেরা পরিচিতি : OnePlus

ক্যামেরা মডেল : EB2101

ফোকাল লেংথ : ৫ মিমিঃ


✡ ধন্যবাদ ✡


পরিশিষ্ট


প্রতিদিন ৫০০ ট্রন করে জমানো এক সপ্তাহ ধরে - ৪র্থ দিন (500 TRX daily for 7 consecutive days :: DAY 04)




সময়সীমা : ২২ নভেম্বর ২০২২ থেকে ২৮ নভেম্বর ২০২২ পর্যন্ত


তারিখ : ২৫ নভেম্বর ২০২২


টাস্ক ১২৩ : ৫০০ ট্রন ডিপোজিট করা আমার একটি পার্সোনাল TRON HD WALLET এ যার নাম Tintin_tron


আমার ট্রন ওয়ালেট : TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx

৫০০ TRX ডিপোজিট হওয়ার ট্রানসাকশান আইডি :

TX ID : 74bfafbee38ff487a014def9ec229f75edab1aecabba910b5fd6012e48640182

টাস্ক ১২৩ কমপ্লিটেড সাকসেসফুলি


এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তো যে কোনো এমাউন্ট এর টিপস আনন্দের সহিত গ্রহণীয়

Account QR Code



VOTE @bangla.witness as witness

OR

SET @rme as your proxy