গত পর্বে আমার ছোটবেলার একটা ঘটনা শেয়ার করেছিলাম যেখানে আমার এক মামাতো ভাই আমার ফোটো তুলে দিয়েছিলো । ছবিটি ছিল রঙিন । বহুদিন অব্দি মায়ের কাছে ছিল সেই ছবিটি । অনেকেই জানতে চেয়েছেন সেই ছবিটি এখনো আমার কাছে আছে কি না ? এখনো আছে কি না আমার জানা নেই । মায়ের কাছে যদি পাই তো অবশ্যই আপনাদের দেখাবো ।
মুশকিল হলো বয়স হয়ে যাওয়াতে আজকাল মায়ের অনেক কিছুই আর সেভাবে মনে থাকে না । সে যাই হোক ছোটবেলার কিছু ছবি আছে আমার কাছে । দেওয়া যাবে একদিন সেগুলো । আজ আমি আপনাদেরকে আমার জীবনের প্রথম ফোটোগ্রাফি করার অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো ।
তখন আমি কিসে পড়ি ? উম্ম, খুব সম্ভবত ক্লাস সেভেন । বাড়িতে কম্পিউটার ছিল, কিন্তু কোনো ক্যামেরা ছিল না । স্কুলে পুজোর ছুটি হয়ে গেলো । তো, একদিন বিকেলে দেখি কম্পিউটার টেবিলের ওপরে ছোট্ট একটা ক্যামেরার মতো কি যেনো । পরে জানা গেলো আমার দাদা তার এক বন্ধুর থেকে চেয়ে এনেছে । ক্যানন ক্যামেরা । সাথে দুই রোল ফুজিৎসু কালার ফিল্ম রোল । ব্যাটারি ছিল না । তাই দাদা বাইরে গিয়েছে পেন্সিল ব্যাটারি কিনতে । ব্যাটারি ছাড়া ফ্ল্যাশ জ্বলবে না ।
তো সেই ক্যামেরা নিয়ে পুজোর ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে গেলুম সবাই মিলে । যাওয়ার আগের দিন আমাদের দুই ভাইয়ের চোখ মুখ দেখে সন্দেহ হওয়াতে দাদা আরো দুই রোল ফিল্ম সাথে নিলো, আর নিলো আরো চারটে পেন্সিল ব্যাটারি । দাদা ঠিকই সন্দেহ করেছিল । গ্রামে পৌঁছতেই ক্যামেরা নিয়ে আমি আর আমার ছোট ভাইয়ের সাথে যুদ্ধ শুরু করে দিলাম । কে ছবি তুলবে তা নিয়ে চললো যুদ্ধ ।
বেচারা আমার দাদা ! তার ভাগ্যে খুবই কম সুযোগ জুটলো ছবি তোলার । আমি আর আমার ভাই সারাদিন গ্রামের পথে ঘাটে টো টো করে ঘুরি আর ছবি তুলি । তখনকার দিনে এক রোল ফিল্মে মোট ছবি উঠতো ৩৫ টার মতো । তাই ইচ্ছে থাকলেও খুব বেশি ছবি তোলা সম্ভব হয়নি । আমি গ্রামের পথ, ঘাট, পুকুর, ক্ষেত, ফুল গাছ, হাঁস-,মুরগি, গরু-বাছুর আর বেশ কিছু পাখির ছবি তুলেছিলাম । তার মধ্যে একটা ছিল মাছরাঙা পাখি ।
ছবি ওয়াশ করার পরে আর সে মাছরাঙার ছবিতে মাছরাঙ্গাকেই আর খুঁজে পাইনি । খুউব ছোট্ট একটা অবয়ব পেয়েছিলাম শুধু । আসলে ওই সব ক্যামেরায় zoom তেমন উন্নত ছিল না, তাই যতগুলি পাখির ছবি তুলেছিলাম সবগুলোর ক্ষেত্রে একই রেজাল্ট পেয়েছিলাম ।
আমার কিছু শৈশবের বন্ধু বান্ধবেরও ছবি তুলে দিয়েছিলাম । তারা ছবি ওঠার কথা শুনে বেশ সেজেগুজে এসেছিলো ছবি উঠতে । একটা রোল জ্বলে গিয়েছিলো সাবধানতা অবলম্বন না করে ফিল্ম পাল্টাতে গিয়ে । ফিল্ম wash করার আগে দিনের আলো লাগলেই জ্বলে নষ্ট হয়ে যেতো ।
পুজোর ছুটির পরে সেই তিনটে রোল wash করিয়েছিলো দাদা । আমরা তিন ভাই অপলক নয়নে দেখছিলাম নিজেদের ফোটোগ্রাফি কৃতিত্ব।
জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুরবাড়ি
নাম না জানা ফুলের ফোটোগ্রাফি
হলুদ সরিষা ফুলের বিস্তীর্ণ ক্ষেতে
সুন্দরবনের জেলেরা
সবুজ পাতার আড়ালে টুকটুকে লাল লঙ্কা উঁকি মারছে
কলমি ফুল, সবুজের সমারোহে নিষ্কলুষ শুভ্র
Canna Lily
নতুন ও পুরাতন
তারিখ : ০৭ মে ২০২৩
আমার ট্রন ওয়ালেট : TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx
TX ID : 8240ed27f07919251eb24f0412219b19ebfb65f36e29259e03a448896ffe753d
Account QR Code
VOTE @bangla.witness as witness
OR