মূল্যায়ন করতে শিখুন বাহ্যিক নয় অভ্যন্তরীণ বিষয়বস্তুকে।

pulook -

প্রিয় বন্ধুরা,
সোমবারের শুভেচ্ছাবার্তা জানিয়ে আজকের লেখা শুরু করছি। আশাকরি সপ্তাহের শুরুটা আপনাদের সকলের কুশলেই হয়েছে।

এই মুহূর্তে কলকাতায় হালকা শীতের আমেজ অনুভব করতে পারছি বিগত কিছুদিন ধরে, কাজেই পরিশ্রম কিছুটা গায়ে লাগছে না দিনের বেলায়।

গ্রীষ্ম কালের মত এই মুহূর্তে গলদঘর্ম হতে হচ্ছে না এই বাঁচোয়া এবং ঠিক সেই কারণে আমার শীতকাল বেশ পছন্দের বিভিন্ন খাবার খাওয়ার সুযোগের পাশাপশি।

যাইহোক, যে বিষয় নিয়ে আজ আপনদের মাঝে আসা, সেটা হলো আমরা সব ক্ষেত্রেই বাইরে থেকে দেখেই কোনো জিনিসের মূল্যায়ন করে থাকি।

কোথাও একসাথে ঘুরতে গিয়ে কিছু নতুন মানুষের সাহচর্য, জীবনের চলার পথে নতুন নতুন প্রেমের অনুভূতি এবং নতুন পরিচিত মানুষের সহচর্য্য আমাদের মনের মধ্যে একটা রোমাঞ্চ সৃষ্টি করে।

এর পিছনের কারণ নতুন বিষয়ের সাথে, মানুষের সাথে পরিচিতি, খানিক অল্প বয়সের সবুজ মনের দোলা, সবকিছু মিলিয়ে কিভাবে সময় কেটে যায় বোঝাই যায় না।

সম্বিত ফিরলে দেখা যায়, কত সময় কেবল কিছু মানুষের পোশাক, মিথ্যে ব্যবহার আর মেকি ভালো সাজার অভিনয় দেখতে দেখতেই কেটে গিয়েছে।

ছোটোবেলায় ফুলের গন্ধ নেবার জন্য যখন ফুলের খুব কাছে যেতাম, বাবা বলতেন একটু দুর থেকে গন্ধ শুঁকতে; কৌতুহল বশত কারণ জানতে গিয়ে জানতে পারলাম সুন্দর দেখতে এবং ঘ্রাণ বহনকারী ফুলেদের অভ্যন্তরে খালি চোখে দেখতে না পাওয়া কিছু কীট সেই ফুলে থাকে।

যেগুলো ঘ্রাণ নেবার আমাদের শরীরে প্রবেশ করে ক্ষতি করতে পারে!
এই উদাহরণের মাধম্যে বোঝা যায়, সবসময় চোখের সামনে থাকা আকর্ষণীয় জিনিষ আমাদের হিতার্থে কাজ করে না।

কাজেই বাইরে থেকে চক চক করলেই যে, সেটি সোনা হবে এটা ভাবার কোনো অর্থ নেই।


তেমনি আখ গাছদের খেয়াল করে দেখবেন, কি রকম কদর্য লাগে বাইরে থেকে শক্ত, প্রতিটি গাঠ এর গায়ে শিকড় খুলছে, পাতায় আল।

সবকিছুর পরেও আজকে যে আমাদের সকলের বাড়িতে চিনি আমরা ব্যবহার করে থাকি, সেটি এই আখের দান।

এর পাশাপশি আছে বেশ কিছু স্বাস্থ্যকর দিক, গুগল ঘেঁটে দেখে নেবেন কারণ এখানে আমার লেখার বিষয় ভিন্ন।

তারমানে দাড়ালো, মিষ্টি কথার আড়ালে যে মানুষটি ও মিষ্টি হবে সেটা যারা ভাবেন বা এই সকল ছলনায় পা দিয়ে ফেলেন, তাদের সম্বিত ফেরার পরে দেখা যায় জীবন থেকে সময়ের সাথে হারিয়ে গেছে আরো অনেক কিছু।

সাময়িক ভালো লাগার বশে, আমরা বেশিরভাগ সময় এমন অনেক সিদ্ধান্ত জীবনে নিয়ে ফেলি যেটা ভবিষ্যতে কেবল যন্ত্রণা ছাড়া আর কিছু দেয় না।

কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানুষ নিজেকে উন্নত এবং উচ্চ মানসিকতার বলে জাহির করলেও আদপেও তাদের মধ্যে লুকিয়ে থাকা খালি চোখে ধরা না পড়া কীটদের আমরা দেখতে পাই না।

ফলস্বরূপ আমরা মানসিক ভাবে আহত হয় এবং জীবনের বহু মূল্যবান সময় আমাদের অপচয় হয়ে যায় ভুল জিনিষ, বিষয় এবং মানুষের পিছনে।

কাজেই যেসকল মানুষ সোজা কথা সোজা ভাবে বলে দেওয়া পছন্দ করেন তারা অনেকটা এই আখ গাছেদের মত দেখতে লাগলেও এটা অভ্যন্তরীণ দিক থেকে উপকারী হন।

তাই অবশেষে বলবো, মূল্যায়ন করতে শিখুন বাহ্যিক নয় অভ্যন্তরীণ বিষয়বস্তুকে।

আজ এখানেই ইতি টেনে বিদায় নিলাম, ভালো থাকুন আর ভালো কাটুক আপনাদের আগামী দিনগুলি।