New to Nutbox?

গ্রীষ্মকালীন ফল জাম।

7 comments

piya3
72
10 months agoSteemit4 min read
Picsart_23-06-02_23-43-10-733.jpg Edited by Picsart

পাঠক/পাঠিকা বন্ধুগণ,
কেমন আছেন সবাই? আশা করি আজকের দিনটি আপনাদের খুবই ভালো কেটেছে। আজ আমি গ্রীষ্মকালীন একটি পরিচিত ফল নিয়ে চলে এসেছি আপনাদের মাঝে।

"জাম" নামক মৌসুমী ফলটির সঙ্গে আমরা সবাই কমবেশি পরিচিত। আমার জানা কিছু তথ্য এই ফল সম্পর্কে আমি উপস্থাপন করব। তাহলে চলুন বন্ধুরা, আমরা মূল লেখাতে চলে যাই।

উপকারীতাঃ

PXL_20230530_114807907.jpg
PXL_20230530_114738206.jpg
  • জাম স্মৃতিশক্তি প্রখর করে; জামে গ্লুকোজ ও ফ্রুকটোজ রয়েছে, যেটা কাজ করার শক্তি যোগায়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে স্মৃতিশক্তি দিনদিন হ্রাস পেতে থাকে। জাম এই স্মৃতিশক্তি প্রখর রাখতে সহায়তা করে।

  • ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য জাম খুবই উপকারী। জাম রক্তে চিনির পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে। এক চা চামচ জামের বীজের গুড়া প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেলে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

  • জামে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন "সি" রয়েছে। মানব শরীরে ভিটামিন "সি" এর ঘাটতি পূরণ করে। এছাড়া মুখের দুর্গন্ধ রোধ করে, দাঁত ও মাড়ি মজবুত করে। এই ফলে থাকা উপাদান জল, লবণ ও পটাশিয়াম অতিরিক্ত গরমে শরীরকে ঠান্ডা রাখে।

  • জাম রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমিয়ে হার্ট'কে ভালো রাখে। এছাড়া দেহের অপ্রয়োজনীয় কার্বন-ডাই-অক্সাইড কে সরিয়ে অক্সিজেন সরবরাহের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

  • জামে স্বল্প/কম পরিমাণ ক্যালরি থাকে, আর এটা শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে।

  • চিকিৎসাবিজ্ঞানে বলা হয়েছে, জাম এমন একটি ফল যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে খুবই উপকারী।

  • মানুষের মুখের লালাতে একপ্রকার ক্ষতিকর রঞ্জক পদার্থ তৈরি হয়। যা থেকে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার জন্ম হয়। এ ধরনের ব্যাকটেরিয়া থেকে মুখে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই জাম খুবই উপকারী এই ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করার জন্য।

  • জামের কচি পাতার রস দুই থেকে তিন চা চামচ, একটু গরম করে ছেঁকে নিয়ে খেলে ২-৩ দিনের মধ্যে রক্ত আমাশয় কমে যায়।

  • গ্যাস মানব শরীরের জন্য নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই গ্যাস দূরীকরণে খুবই কার্যকরী জাম। এছাড়া মুখের রুচি বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

এটা খাওয়ার সময় যে সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজনঃ

PXL_20230530_120321984-01.jpeg

নিঃসন্দেহে জাম একটি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন ফল। যার উপকারী অনেক দিক রয়েছে। যার মধ্য থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক আমি উপরেই উপস্থাপন করেছি।

তবে আমরা এটা তো জানি যে ওষুধের মাধ্যমে আমাদের বিভিন্ন রোগ থেকে আরোগ্য লাভ হয়। তবে সেই ওষুধ নামক উপকারী উপাদানটি আমাদের জন্য মাঝেমধ্যে মৃত্যুর কারণ ও হয়ে দাঁড়ায়।

প্রত্যেকটা খাবারের যেমন উপকারী দিক রয়েছে তেমনি কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে। তবে এই ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার জন্য আমরা নিজেরাই দায়ী। আমি বলব আমাদের অসচেতনতা এবং স্বল্প জ্ঞান এটার জন্য বেশি দায়ী।

"অল্প বিদ্যা ভয়ংকরী।"কেন?

এ পর্যায়ে ছোট্ট একটি শিক্ষনীয় গল্প আমি উপস্থাপন করব। এক যুবক যার মনে অদ্ভুত এক চিন্তার উদয় হলো। কেন বিমান চালকেরা এত দীর্ঘ মেয়াদী পড়াশোনা করে এবং তারপর অনুশীলন করার পর পাইলট হিসেবে নিযুক্ত হন।

কারণ এই যুবক বিমান আকাশে উড্ডয়নের প্রথম অংশটি পড়ে ফেলেছিল। আর সে ভাবা শুরু করেছিল যে এ আবার এমন কি! যেটাকে আমরা বলতে পারি অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস।

এবং ঘাড় ত্যাড়া এই যুবক যেকোনো উপায়ে একদিন এই বিমানের কাছাকাছি পৌঁছে গেলেন। তারপর বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে বিমানে পাইলটের আসন গ্রহণ করলেন।

এমনকি বিমান চালানোর ওই বইয়ের অংশটিও তার সাথে নিয়েছিলেন। তিনি পাইলটের মতো করে সুন্দর ভাবে বিমানকে আকাশে উড়িয়েছিলেন। একটা সময় তার মনে হল এখন এটাকে ভূমিতে অবতরণ করাতে হবে।

কিন্তু তিনি কোনো উপায় পাচ্ছিলেন না। এবং ওই বইটি বেশ কিছুক্ষণ ধরে আবারো দেখলেন। তারপর উনি লক্ষ্য করলেন বইয়ের শেষের পাতায় লেখা রয়েছে, বিমান কে ভুমিতে অবতরণ করানোর জন্য এই বইটির দ্বিতীয় অংশ পড়ুন।

এরপর যেটা ঘটলো, সেটা আপনি/আমি সবাই বুঝে গিয়েছি। ঠিক তেমনি প্রত্যেকটা জিনিসের ক্ষেত্রে আমাদের উপকারী দিকগুলোর পাশাপাশি অপকারিতা সম্পর্কেও জানাটা গুরুত্বপূর্ণ অর্থাৎ সম্পূর্ণ বিষয়টা।

যে নিয়মাবলী অনুসরণ করে জাম খাওয়া উচিতঃ

  • আমরা অনেকেই ফল খাওয়ার সাথে সাথেই আবার জল পান করি। এটাতে যে উপকার হওয়ার কথা ছিল ফল থেকে, তার ঠিক বিপরীতে। প্রতিক্রিয়া ঘটবে শরীরে।
  • তারপর আমাদের সামনে জাম রয়েছে আর খালি পেটেই অনেকগুলো খেয়ে ফেললাম। এটা মোটেও ঠিক না। খালি পেটে জাম খেলে গ্যাস বৃদ্ধি পেতে পারে।

  • জাম খাওয়ার পরে শুধুমাত্র জল নয় বরং দুগ্ধ জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।

  • জাম ও হলুদ দুটি খাদ্য উপাদান একটি অপরটির সংস্পর্শে আসলে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে। আর এটার জন্য জাম খাওয়ার পরপর হলুদ দিয়ে রান্না করা কোনো খাবার খাওয়া ঠিক না।

উপসংহারঃ

মৌসুমী যে ফলগুলো আমরা খেয়ে থাকি এগুলো শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে অবশ্যই চিকিৎসা বিজ্ঞান সম্পর্কিত প্রাথমিক ধারণা রেখে খাওয়া উচিৎ। তাহলেই আমরা মৌসুমী ফল থেকে কাঙ্খিত উপকারিতা পেতে পারি।

Comments

Sort byBest