অনলাইনে দক্ষতার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ।

piya3 -
source

দিনশেষে সবই জিরো, আজ একটা বিষয় দেখে মনে মনে এতোটা হেসেছি যেটা বলা সম্ভবই না। কারণ আমরা কতোটা বোকা সেটা ভাবতেই খারাপ লাগে। তবে এখানে বোকা বলাটা ভুল বরং লোভ এবং অল্প পরিশ্রম করে রাতারাতি বড়লোক হওয়ার স্বপ্ন।

পাশাপাশি, আমরা কষ্ট করতে একদমই নারাজ। আমিও এই দলভুক্তই কিন্তু এটা একদমই সম্ভব না। তবে এটাও সত্য যে অনলাইন সেক্টরটা এমন যে যদি দক্ষতা বা প্রযুক্তি সম্পর্কে অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে কঠোর পরিশ্রম দিয়ে শুরু করে একটা সময় ভালো অবস্থানে যাওয়া যায়।

কিন্তু আমাদের দেশের কিশোর শ্রেনীরা এখনো অন্ধকারে পড়ে আছে। তাঁরা শুধু মাত্র অনলাইন সেক্টরকে সময় অতিবাহিত এবং মাসের ইন্টারনেট খরচের অর্থ উপার্জনেই ব্যস্ত। হয়তো শুনতে খারাপ লাগছে কিন্তু এটাই বাস্তব। আমাদের এই চিন্তাধারা ও কাজের ধরন পরিবর্তন করতে হবে। সবাই সহজ মনে করে যেটা করছে সেটার উল্টো পথে হাঁটতে হবে, তবেই কিছু সম্ভব।

source

এটার মূল কারণ হিসেবে আমি দায়ী করবো আমাদের দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা। যেখানে প্রতিটি পরিবারেই আছে আর্থিক সংকট। এটার জন্যই শৈশব থেকে শিশু কিশোরদের মধ্যে উপার্জন করতে হবে এইরকম একটা চিন্তা কাজ করে। লেখাপড়ার উদ্দেশ্যটাও দিন শেষে উপার্জন। লেখাপড়া শেষ করেই একটা চাকরি করতে হবে এবং অর্থ উপার্জন করে পরিবার নিয়ে বাকি জীবন কাটাতে হবে।

এটাতো মনে হয় না শিক্ষার উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। কিন্তু পরিবেশ পরিস্থিতি আমাদের এই চিন্তাধারার জন্য দায়ী। আমরা বিকল্প কিছু করার চিন্তাই করতে পারি না। পরিবার এবং সমাজের বিভিন্ন চিত্র যেন আমাদেরকে এখানেই সীমাবদ্ধ করে রেখেছে।

আমাদের মধ্যে কিছু উচ্চাকাঙ্ক্ষা আছে এমন যেটা কখনোই সম্ভব না। কারণ স্বপ্নকে বাস্তবায়নের জন্য সঠিক পথে আমরা পরিশ্রম না করে স্বপ্ন দেখতেই অভ্যস্ত। নচেৎ পৃথিবীতে বিখ্যাত ব্যক্তিদের সংখ্যা আরো অনেক বেশিই থাকতো। আমরা ঐ মানুষদের সফলতার চিত্র নিয়েই অতিব্যস্ত। কিন্তু পেছনের সেই সংগ্রামের মূহুর্ত গুলো খুঁজতে যেন খুব সমস্যা।

পাশাপাশি আমাদের কর্মমূখী হতে হবে। বিশেষ করে আমি গ্রামে দেখেছি অনেক মানুষ যারা অপ্রয়োজনে ও বাজারে বসে থাকে এবং অপ্রাসঙ্গিক কথা নিয়েই যেন মাথা ব্যাথা বেশি। অন্যদিকে যারা কর্মব্যস্ত তাঁদের বাজারে উপস্থিতি ও কম আবার এই সমালোচনামূলক কথা নেই বললেই চলে।

source

ঐ যে কথায় আছে, "অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা।" এনাদের ক্ষেত্রে ওটাই প্রযোজ্য। আমাদের চিন্তাধারার পরিবর্তন দরকার। এটার আরো একটা কারণ বেকারত্ব, আমাদের দেশে বেকারত্বের সংখ্যা অনেক বেশি। এমনকি আমাদের লেখাপড়ার ক্ষেত্রে হাতে-কলমে শিক্ষাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এটার জন্য প্রযুক্তি এবং কারিগরি শিক্ষার আলাদা সেক্টর থাকা প্রয়োজন। লেখাপড়া না জানা মানুষদেরকে বলা হয় চোখ থাকতে অন্ধ। তাহলে যাদের চোখ আছে আমরা নিজেদের বেকার বলি এটাও বলা সঠিক না। কারণ শিক্ষাটা এমনভাবে গ্রহণ করা উচিত যেন নিজেই কিছু করতে পারি।

এই সম্পূর্ণ লেখার উদ্দেশ্য একটা যে উন্নত বিশ্বের উর্ধ্বগতি দেখে বাহবা দিতে হবে কিন্তু নিজেদেরকেও কিছু করতে হবে। এটার জন্য অনলাইন সেক্টরের বিকল্প নেই। একমাত্র অনলাইন সেক্টরের দক্ষতাই আমাদের জীবনধারাকে পরিবর্তন করতে পারে। অনলাইনে কোনো সীমাবদ্ধতা নেই। যে যার ইচ্ছে মতো প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা অর্জন করে সাবলম্বী হতে পারে।

আমাদের দেশে এখনো অনলাইন সম্পর্কে মানুষের ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। অনলাইন মানে জূয়া যেটাকে Money লন্ডারিং বলা হয়। এটা সঠিক যে এই অবৈধ কাজ আমাদের দেশে নিষিদ্ধ কিন্তু অনেকেই করে। তবে এখানে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না। অনলাইন সেক্টর সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে।

এখন অনলাইনে খুঁজলেই পছন্দ মতো পেশা খুঁজে পাওয়া সম্ভব। যেটার জন্য ঘুষ বা মামা দরকার হয় না। আমি মনে করি অনলাইন এমন একটা মাধ্যমে যেখানে মানুষ তাঁর দক্ষতার মূল্যায়ন পেতে সক্ষম। শুধুমাত্র ইন্টারনেট ও ভালো একটা ডিভাইস হলেই সম্ভব।

আমার আজকের লেখাটি এখানেই সমাপ্ত করছি। সকলে ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন।