My Halloween 24 : Makeup of A Scary Character

pinki.chak -

নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি আপনারা সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আমি এই প্ল্যাটফর্মে একটি কনটেস্টের সম্পর্কে জানতে পারি ।যেটি ২৫ তারিখ থেকে ২৯ তারিখ পর্যন্ত আয়োজন করা হয়েছে। আমি প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই যিনি এই কনটেস্টের আয়োজন করেছেন। এই কনটেস্টের টপিক হলো 'হ্যালোইন'।

আসলে আমরা যেহেতু প্রাচ্যের মানুষ তাই এই বিষয় সম্পর্কে আমরা বিশেষ জ্ঞাত নয়। আমাদের এখানে যেহেতু এই ধরনের কোন ফেস্টিভেল আয়োজন করা হয় না তাই এটা আমার কাছে একেবারেই নতুন একটি বিষয়। যদিও আমাদের এখানে দীপাবলীর আগে ভূত চতুর্দশী পালন করা হয়, যেদিন আমরা সকলেই প্রত্যেকের বাড়িতে ১৪ প্রদীপ জ্বালি এবং মোমবাতি দিয়ে সারা বাড়িটিকে আলোকিত করে রাখি। আমরা বিশ্বাস করি সেই দিন আমাদের পূর্বপুরুষদের আত্মা মর্ত্যে ফিরে আসে। এবং বাড়ির গুরুজনেরা বলেন সেই দিন নাকি সব জায়গায় পৈশাচিক আত্মারা ঘুরে বেড়ায়। আমার মনে হয় পাশ্চাত্য দেশে পালিত হওয়া এই হ্যালোইন উৎসবটিও ভূত চতুর্দশীর মতোই একটি উৎসব ।যেদিন পৈশাচিক আত্মারা মর্ত্যে ফিরে আসেন এবং পাশ্চাত্যের মানুষেরা এই দিনটিকে পালন করেন বিভিন্ন রকমের পৈশাচিক সাজসজ্জার মাধ্যমে, যাতে এই সমস্ত দুষ্ট ভূতেরা মানুষদের কোনরকম ক্ষতি করতে না পারে।

যাইহোক, আমি ব্যক্তিগতভাবে ভূত আর এইসব ভূতুড়ে বিষয়ে বিশ্বাস করি। পৃথিবীতে যদি এমন কোন জিনিস থেকে থাকে যাতে আমি সবচেয়ে বেশি ভয় পায় সেটি হল এক ভূত আর দুই সাপ। আমি ভূতে ঠিক এতটাই ভয় পাই যে আমি কখনো ভূতের সিনেমা দেখি না। আমার মনে হয় যে সিনেমা দেখে আমি মন থেকে তৃপ্তি পাবো না বা ভয়ে ভয়ে থাকবো সেরকম সিনেমা দেখে মনকে উদ্বেলিত করার কোনো মানে হয় না।। তাই বন্ধুরা বারবার বলার পরেও আমি কিন্তু কখনোই ভূতের সিনেমা দেখতে অন্তত সিনেমা হলে যায় না বা বাড়িতেও কখনো ভূতের সিনেমা দেখি না।

এই ভূতুড়ে গল্প বলতে গিয়ে আমার একটা কথা মনে পড়লো। চলুন আপনাদের সঙ্গে সেই ঘটনাটা শেয়ার করি।

আমি যেহেতু পেশাগত ভাবে একজন গৃহশিক্ষিকা তাই কয়েক বছর আগে আমি একটি বাড়িতে পড়ানো শুরু করি। গল্পে ঢোকার পূর্বে আমি সেই বাড়িটার একটা ছোট্টো বিবরণ দিচ্ছি।

একখানা পুরনো সেকেলে বাড়ি যার নিচের তলাটা ঘিঞ্জি এবং রাত্রিবেলায় একেবারেই ঘুটঘুটে অন্ধকার । বাড়িটার মুখটা পিছন দিকে মানে বাড়ির ভিতর দিকে। বাইরের ‌ দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করে আরো একটা দরজা খুলে সিঁড়ির নিচের দরজা। সেই দরজা দিয়ে প্রবেশ করে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে আবার সিঁড়ির ঘরের দরজা খুলে একটা ছোট্ট ছাদ পেড়িয়ে তবে তাদের ঘরে আমাকে যেতে হতো। আমার পড়ানো থাকতো সন্ধ্যা ছটা থেকে আটটা পর্যন্ত। যখন ওদের বাড়ি ঢুকতাম তখন তো তেমন কিছু বিশেষ মনে হতো না কারণ লোকজন থাকত রাস্তায় এমন কি আলো থাকতো। কিন্তু সমস্যা হতো যখন রাত্রিবেলায় পড়িয়ে নীচের তলা দিয়ে বের হতাম। বেরোনোর সময় আমাকে একাই নামতে হতো। আর ঘর থেকে রাস্তার দরজা পর্যন্ত আসতে আমার বড্ড ভয় লাগত। নীচে কোন লাইট থাকতো না।

মাঝে মাঝে বাচ্চাটির মাকে বলতাম আমাকে নীচ পর্যন্ত এগিয়ে দিতে তবে প্রত্যেকদিন কি কাউকে বলতে ভালো লাগে! তাই ভয়ে ভয়ে একাই নীচে নামতাম। এইভাবেই বেশ কয়েক মাস পড়ালাম। এরপর এলো বর্ষাকাল। একদিন পড়াচ্ছি হঠাৎ করে কালবৈশাখী ঝড় শুরু হল। কারেন্ট চলে গেল। চারিদিকে জানালার দরাম দরাম আওয়াজ শুরু হলো।আর চারিদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার, কারোর মুখ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। এমত অবস্থায় সেই বাড়ির বৌদি র চার্জার লাইট নিয়ে এলো। তারপর আমরা বসে গল্প করতে লাগলাম। গল্প করতে করতে বৌদি হঠাৎ করেই তাদের বাড়ির সম্পর্কে এমন কিছু কথা বলল যে আমি ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পাথরের মত বসে রইলাম।

পাঁচ- ছয় বছর আগে নাকি তাদের বাড়ির নিচের তলায় তার ননদ নন্দাই এবং তাদের দুই মেয়ে থাকতো। একদিন তার ননদ এবং ননদায় বাড়ি ছিল না। ছোট মেয়েটি গিয়েছিল টিউশন পড়তে। বড় মেয়েটি একাই ঘরে ছিল ‌। আর ওপর তলায় বৌদি এবং বৌদির মেয়ের ছিল। বৌদি তখন অন্তঃসত্ত্বা। তার মেয়ে নাকি নিচে তার পিসির ঘর থেকে ঘুরে এসে তার মাকে বলতে লাগলো "মা...মা... চলো.... নিচে চলো.... দেখবে দিদিভাই কি সুন্দর দোলনায় দুলছে।আমিও দোলনায় দুলবো....চলো না...চলো না..."
বৌদির মেয়ে বৌদিকে টেনে নিতে নিয়ে যেতে বৌদি যা দেখেছিল তা বলতে গিয়ে বৌদির গায়েও শিহরণ কেটে গেল।..... তার ননদের বড় মেয়ে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছে....।" সেই অতৃপ্ত আত্মা তাদের বাড়িতে নাকি এখনও নানা রকমের কান্ড কারখানা ঘটায়।

এরপর সেইদিন বৃষ্টি থামলে আমি কিভাবে নিচে নেমেছি ,কিভাবে সাইকেল নিয়ে বাইরে বেরিয়েছি, কিভাবে বাড়ি এসেছি আমার কিছুই মনে নেই। তবে তার পর থেকে আমার আর সেই বাড়িতে পড়াতে যাওয়া হয়নি।

যাইহোক, আজকের কনটেস্টে আমি ভূতুড়ে এক সাজ নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আপনারা অবশ্যই জানাবেন আপনাদের কেমন লাগলো।

এই কনটেস্টে অংশগ্রহণ করার জন্য আমি কিছু বন্ধুদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি @mrsokal @krishna001 @mou.sumi