জেনারেল রাইটিং :- শৈশব স্মৃতি বৃষ্টি নামানো
15 comments
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর সকল ভাই ও বোনেরা কেমন আছেন? নিশ্চয় মহান সৃষ্টিকর্তার রহমতে সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করছি।
শৈশব স্মৃতি বৃষ্টি নামানো
বরাবরের মতো আজও আমি আপনাদের মাঝে এসেছি নতুন একটা পোস্ট নিয়ে। আসলে আজ এসেছি একটি শৈশব স্মৃতি নিয়ে। আমাদের শৈশব সত্যি অনেক মধুর ছিল। তবে এখনকার বাচ্চাদের শৈশব থাকে শুধু ডিভাইস নিয়ে। আসলে আমাদের সময় এমন অনেক গরম পড়তো। তখনো বৃষ্টি হতো না বলেই চলে। তখনকার দিনে আমরা সম বয়সী ভাইবোন বন্ধুবান্ধব মিলে গ্রামে বৃষ্টি নামাতাম। আসলে আজ কয়েকটি বাচ্চারা আমাদের এদিকে বৃষ্টি নামাতে এসেছে তাদের দেখে সত্যি শৈশবের সব কথা মনে পড়ে গেল। তাই ভাবলাম আপনাদের সাথে শৈশবের বৃষ্টি নামানো নিয়ে লেখি।যেই ভাবা সেই কাজ। সত্যি আমার মনে হয় আমাদের শৈশব অনেক মধুর ছিল তবে এখনকার বাচ্চাদের মতো ঘরে বন্ধী থাকতে হতো না। যাইহোক তাহলে চলুন শুরু করি আজকের পোস্ট।
আজ কয়েক দিন ধরে অনেক গরম পড়ছে। সত্যি এতো গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ। এই গরমে সবাই একটু সাবধানে থাকার চেষ্টা করবেন। যাইহোক আমি যখন ক্লাস সিক্স এ পড়ি তখনকার ঘটনা। আমরা একই বয়সী প্রায় সাত আট জন ছিলাম। এভাবে এক টানা অনেক দিন বৃষ্টি নামছিল না। তারপর আমার এক চাচাতো ভাই ও বোন বললো চলো আমরা সবাই মিলে বৃষ্টি নামায়। আসলে বৃষ্টি কিভাবে নামে আমি জানতাম না। তারপর আমার চাচাতো বোন বললো তুই আমাদের সাথে যাবি আমরা যা বলবো তুই সাথে সাথে তাই করবি। তখন আমি বাড়িতে এসে আমার বড় বোনকে বললাম তখন আমার বড় বোন বললো যা ওদের সাথে। তারপর আমরা সাত আট মিলে গ্রামে বের হলাম।যেহেতু আমি কিছুই পারি না তাই আমাকে চাউল তোলার ব্যাগ ধরতে বললো।আমরা গ্রামের এক পাশ থেকে নেচে নেচে আর গান করে চাল উঠাতে লাগলাম।
আসলে যার বাড়িতে আমরা যেতাম তারাই মাঝ খানে একটু পানি দিয়ে দিত। তারপর আমরা সবাই মিলে হাত ধরে ঘুরতাম আর বলতাম আল্লাহ মেঘ দে পানি দে ছায়া দেরে।এভাবে আমরা সবাই মিলে ছয় দিন আশে পাশের গ্রামে গিয়ে গান আর নাচ করে এসেছি। তারপর সব বাড়ি থেকে আমাদের কিছু চাল, ডাল, মরিচ, পিঁয়াজ ইত্যাদি দিয়েছে। আমরা একটা কলার পাতা দিয়ে ঘর বানিয়ে ছিলাম। সেখানে এনে সব কিছু রাখতাম। ছয় দিন পরে দেখি আমাদের প্রায় বিশ কেজি চাউল হয়েছে।আরো অনেক কিছু হয়েছে তবে বৃষ্টি না নামা পর্যন্ত আমাদের রান্না করা যাবে না। যেহেতু সাত দিনে আমরা রান্না করবো কিন্তু বৃষ্টি না নামলে নাকি রান্না করতে নেই। আমরা কলার পাতার ছোট ঘরে সবাই বসে দোয়া করতে থাকলাম আল্লাহর কাছে বৃষ্টির জন্য। ছয় দিনে রাতে আমরা আল্লাহর কাছে অনেক প্রাথনা করলাম। তারপর ভোর রাতের দিকে শুরু হলো তুমুল ঝড় বৃষ্টি। এতো পরিমাণ ঝড় বৃষ্টি হয়েছে যে আমাদের কলার পাতার ঘরে উঠে চলে গেছে। যাইহোক অবশেষে রহমতের বৃষ্টি হয়েছে। এখন আমরা নির্দ্বিধায় খিচুড়ি রান্না করে খেতে পারবে।
তারপরের দিন সকাল থেকে শুরু হলো আমাদের রান্নার আয়োজন। তবে আমরা দশ কেজি চাল বিক্রি করে কয়েক কেজি ব্রয়লার মুরগি এনেছিলাম। তারপর আমার এক চাচি আমাদের খিচুড়ি রান্না করে দিয়েছে। আমরা গ্রামের সবাইকে দাওয়াত করেছিলাম। যদিও কিছু কিছু লোক এসেছিল তারপর আমরা সবাই মিলে বেশ মজা করে খেয়েছি। সত্যি সেই শৈশবে যদি আবার ফিরে যাওয়া যেত। আসলে এখন আর আগের মতো বাচ্চাদের শৈশবের আনন্দ দেখা যায় না। যাইহোক এমন শৈশবের কথা কখনো ভুলার হয়। আর শৈশবের অনুভূতি গুলো কখনো শেষ হবার নয়। আশাকরি আমার শৈশবে লেখা গুলো আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
প্রয়োজনীয় | তথ্য |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @parul19 |
ডিভাইস | redmi note 12 |
লোকেসন | ফরিদ পুর |
আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আবার দেখা হবে অন্য কোন ব্লগে অন্য কোন লেখা নিয়ে। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।
আমি পারুল। আমার ইউজার নেম@parul19। আমার মাতৃভাষা বাংলা। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি।আমি ফরিদ পুর জেলায় বসবাস করি।আমার দুটি মেয়ে আছে। আমি বাংলাই লিখতে ও পড়তে ভালোবাসি। আমি নতুন নতুন রেসিপি তৈরি করতে ও ঘুরতে পছন্দ করি।এই অপরুপ বাংলার বুকে জন্ম নিয়ে নিজেকে ধন্যবাদ মনে করি।
Comments