নাটক রিভিউ || দূরদেশ...

nirob70 -

ছবি স্ক্রিনশর্ট: ইউটিউব


হ্যালো বন্ধুরা , কেমন আছেন সবাই ? আশা করি সবাই ভালো আছেন ৷ আমিও বেশ ভালো আছি ৷ তো আজ আবারও আপনাদের মাঝে চলে আসলাম , আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করবো ৷ আশা করি আপনাদের সবার ভালো লাগবে ৷

আজকে আমি খাইরুল বাসার এবং তানজিম সায়ারা তটিনীর দূরদেশ নাটকটি রিভিউ করবো ৷ এই নাটকটি আমি গতকাল রাতে দেখেছিলাম ৷ গতকাল রাতে তেমন একটা ভালো লাগছে না, তাই ইউটিউবে গিয়ে কয়েকটা গান শোনার পর এই নাটকটি দেখে বেশ লম্ব একটা ঘুম দিয়েছি ৷ আজ বেলা করে ঘুম থেকে উঠে ভাবলাম এই নাটকের গল্পটা আপনাদের মাঝে তুলে ধরি ৷ এই নাটকের গল্প কাহিনী বেশ ভালোই লেগেছে আমার ৷ তাই চলে আসলাম এই নাটকটির গল্প কাহিনী আপনাদের সাথে ভাগ করে নিতে ৷ আশা রাখি আপনাদেরও সবার ভালো লাগবে , তো চলুন এবার শুরু করা যাক ..!


নাটকের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য..

নাটকদূরদেশ
পরিচালকরুবেল হাসান
শিল্পীখাইরুল বাসার , তানজিম সায়ারা তটিনী এবং আরও অনেকেই
গল্প ও চিত্রনাট্যমেজবাহ উদ্দিন সুমন
প্রযোজকফখরুল রেয়া ও ডাঃ রেবেকা মনি পারভেজ
ভাষাবাংলা
দৈর্ঘ্য৪৫ মিনিট
প্রকাশইউটিউব , ০৭ নভেম্বর ২০২৪ ইং


কাহিনী সংক্ষেপে



এই নাটকের শুরুতে সজলের বাবা মাকে দেখা যায় ৷ তারা ঘুমিয়ে আছে ৷ ঘুমের ঘোরে সজলের মা সজলের ডাক শুনতে পায় ৷ আর তখনই হঠাৎ করে তার মায়ের ঘুমটা ভেঙ্গে যায় ৷ ছেলের কথা ভেবে অস্থির হয়ে পড়ে সজলের মা ৷ সজলের বাবা পাশেই শুয়ে ছিলো , স্ত্রীর এমন আচরণে তারও ঘুম ভেঙ্গে যায় ৷ ঘুম থেকে উঠে সজলের বাবা বুঝতে পারে তার স্ত্রীর এখন ছেলের কথা ভাবছে ৷ ছেলে দেশের বাইরে থাকে , তার এখানে এখন আসার কথা নয় ৷ স্ত্রীকে বুঝিয়ে ঘুমিয়ে যেতে বলে , আর এমন সময়ই ছেলের ফোন আসে বাবার ফোনে ৷ ছেলে ফোন করেছে শুনে মা ভীষণ খুশি হয় ৷ এরপর সজলের বাবা ফোনটা রিসিভ করে সজলের মায়ের কাছে দেয় ৷ তারপর...

তারপর নাটকের গল্পটা আগের দৃশ্যে ফিরে নেওয়া হয় ৷

সজল এই গল্পের নায়ক ৷ তার পরিবারের বাবা মা ছাড়াও ছোট এক ভাই বোন আছে ৷ সে দেশের বাইরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার জন্য সব কাজ সম্পূর্ণও করেছে ৷ কিছুদিনের মধ্যেই সে দেশের বাইরে চলে যাবে ৷ সেখানে পড়াশোনার পাশাপাশি জব করবে সজল ৷



পরিবারের পরও তার একটা প্রিয় মানুষ আছে ৷ তার নাম মিতু , এই গল্পের নায়িকা ৷ মিতু এবং সজল তারা দুজন দুজনকে অসম্ভব ভালোবাসে ৷ সজন দেশের বাইরে চলে যাবে , এজন্য মিতুর সাথে দেখা করতে আসে ৷ মিতু সজলকে ছাড়াতে রাজি নয় ৷ কিন্তু সজল মিতুকে বুঝিয়ে তার থেকে বিদায় নেয় ৷ সজলের এবার দেশের বাইরে যাওয়া সময় হয়েছে ৷ তাই পরিবারের সবার থেকে বিদায় নেয় সজন ৷ বাবা মায়ের দোয়া আর ভালোবাসা নিয়ে বের হয় সজল ৷ আসার পথে কিছু সময়ের জন্য দেখা হয় মিতুর সাথেও ৷

ঠিকঠাক ভাবেই অস্ট্রেলিয়ায় আসে সজন ৷ এখানে তার ভার্সিটির এক বড় ভাইয়ের কাছে উঠে ৷ এখানে এসে আরো কয়েক জনের সাথে পরিচয় হয় সজলের ৷ শুরুর সময়টা বেশ ভালোই যাচ্ছে সজলের ৷



দেশের বাইরে এসে সজল তার পরিবার এবং প্রিয় মানুষটির সাথে বেশ কিছুক্ষণ ফোনে গল্প করে ৷ তাদের দেখানোর চেষ্টা করে তার আশেপাশে জায়গা আর পরিবেশ টুকু ৷ এরপর পরিবার এবং প্রিয় মানুষটি তাকে সাবধানে থাকতে বলে ৷ তাদের সাথে কথা বলে সজল সেদিন ঘুমিয়ে পড়ে ৷



পরের কয়েকদিন সজন তার ভার্সিটির বড় ভাইয়ের সাথে অস্ট্রেলিয়ার কিছু জায়গা ঘুরে দেখার চেষ্টা করে ৷ বড় ভাই তাকে বেশ কিছু জায়গা ঘুরেও দেখায় ৷ আপাতত বেশ ভালোই যাচ্ছে সজলের ৷ এরমধ্যে এদিকে সজলের বাবা কি করবে বুঝে উঠতে পারে না ৷ অনেক ধার দেনা করে ছেলেকে দেশের বাইরে পাঠিয়েছে ৷ ছেলে দেশের বাইরে গিয়ে কি করছে বুঝতে পারে না ৷ এদিকে পরিবারের খরচ মানুষের দেনা মিটাতে পারছে না সজলের বাবা ৷



পরিবারের কাছে থেকে সজলের চাপ আসতে শুরু করে ৷ তাকে ফোন করে টাকা পাঠানোর জন্য বলে তার বাবা ৷ অনেক টাকা দেনা করেছে তার জন্য তার বাবা ৷ এসব দেনা মিটানো এবং ছোট ভাই বোনের খরচ চালানোর জন্য প্রচুর টাকা প্রয়োজন ৷ এদিকে সজল তখনও কোনো জব পায়নি ৷ শেষমেশ কয়েকজনের সাথে যোগাযোগ করে সজল একটা রেস্টুরেন্টের কাজ এবং ফুট ডেলিভারির কাজ নেয় ৷ এসব কাজ করেও সব হিসাব মিটছে না ৷ এজন্য সজল আরো কিছু কাজ করতে শুরু করে ৷ দিনরাত এক করে কাজ করে যাচ্ছে সজল ৷



একটার পর একটা কাজে প্রচুর ব্যস্ত থাকায় সজন নিজেকে সময় দিতে পারে না ৷ এভাবেই একদিন অসুস্থ হয়ে পরে সজল ৷ এদিকে পরিবার মানুষ জন ভালো নেই ৷ পাওনা টাকা ফিরত দিতে না পেরে মানুষের কথা শুনছে তার বাবা ৷ পরিবারে টাকা পাঠানোটা খুব জরুরি ৷ নিজেও অসুস্থ কি করবে বুঝে উঠতে পারে না সজল ৷ এরপর এক বড় ভাইয়ের কাছে ডলার ধার নিয়ে পরিবারের কাছে পাঠায় ৷ সামান্য সুস্থ হতে না হতেই আবার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে সজল ৷ এভাবেই যাচ্ছে তার দিনকাল ৷



পরিবার , ব্যস্ততা , প্রিয় মানুষ , নিজের ভবিষ্যৎ সব কিছুই তাকে শেষ করে দিচ্ছে ৷ মানসিক ভাবে সজল ভীষণ দুর্বল ৷ কি করবে বুঝে উঠতে পারেনা এসময় ৷ এমনই ভাবে ফুড ডেলিভারির কাজে যায় সজল ৷ আর হঠাৎ করেই তার এক্সিডেন্ট হয়ে যায় ৷ তাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় ৷ কিন্ত এবার আর তাকে ফেরানো যায় নি ৷ ভার্সিটির বড় ভাইয়েরা তার পরিবারের কাছে ফোন দেয় ৷ আর এই ফোনটিই রিসিভ করে সজলের বাবা সে রাতে তার স্ত্রীর কাছে দেয় ৷ সজলের মা এমন খবর পেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পরে ৷ তিনি ভাবতে পারেনি এমন খবর শুনবে ৷ এরপর সজলের মৃত লাশ দেশে নিয়ে আসা হয় ৷ পরিবার প্রিয় মানুষ সবাই সজলকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পরেন ৷ আর এখানেই এই গল্পটা শেষ হয় ৷



রেটিং:-০৯


আমার মতামত:-

দূরদেশ এই নাটকটি আমার কাছে দারুণ লেগেছে ৷ নাটকের গল্প সবার অভিনয় সব মিলিয়ে দারুণ ছিলো ৷ এমনিতেও খাইরুল বাসার এবং তানজিম সায়ারা তটিনা এ দুজনের ই নাটক আমার কাছে অসম্ভব ভালো লাগে ৷ তবে এই নাটকটি একটু অন্যরকম ছিলো ৷ হয়তো বাস্তবতাকেই তুলে ধরা হয়েছে এই গল্পে ৷ একটা ছেলের জীবন ততটাও সহজ নয় ৷ অনেকেই এভাবে দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে পরিবার প্রিয় মানুষ সব কিছু রেখে ৷ সেখানে গিয়ে এমন শারীরিক মানসিক চাপ গুলো সহ্য করে বেঁচে থাকা সত্যিই খুবই কঠিন ৷ কেউ বেঁচে মরে থাকছে সেখানে , কেউবা মৃত লাশ হয়ে ফিরছে এভাবে ৷ যাই হোক , সব মিলিয়ে আমার কাছে অসম্ভব ভালো লেগেছে নাটকটি ৷ আশা করি আপনাদেরও সবার ভালো লাগবে ৷ চাইলে নাটকটি দেখে আসতে পারেন ৷ নিচে নাটকের লিংক দেওয়া আছে ৷ ধন্যবাদ..



নাটকের লিংক

Loading iframe



🙏 ধন্যবাদ সবাইকে 🙏





আমার নাম নিরব ৷ জাতীয়তা বাংলাদেশী ৷ মাতৃভাষা বাংলা ৷ বাংলায় কথা বলতে এবং লিখতে আমি অসম্ভব ভালোবাসি ৷ পেশাগত দিক দিয়ে আমি একজন ছাত্র , পড়াশোনা করছি অনার্স প্রথম বর্ষে ৷ পাশাপাশি স্টিমিটে ব্লগিং করছি ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে ৷ আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি ৷ এছাড়াও আর্ট , ফটোগ্রাফি এবং লেখালেখি করতে আমার ভীষণ ভালো লাগে ৷ সব সময় শেখার চেষ্টা করি , নতুন কিছু শিখতে এবং জানতে আমার খুবই ভালো লাগে ৷ আমি বন্ধুদের সাথে সময় কাটতে অনেক বেশি পছন্দ করি ৷ এছাড়াও পরিবারের সাথে থাকতে এবং সময় কাটাতে আমার প্রচুর ভালো লাগে ৷ আমি একজন হিন্দু ধর্মাবলম্বী ৷ আমি আমার ধর্মকে অনেক বেশি ভালোবাসি এবং সম্মান করি ৷ আমি স্টিমিটে জয়েন করি ২০২০ সালের আগস্টের শুরুর দিকে ৷ ধ ন্য বা দ ...