কালী পূজা। পর্ব:- ১১

nipadas -

কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।




আমি দেখেছি পুজোর সময় আমাদের সারারাত জেগে থাকতে কোন কষ্ট হয় না, আর ঘুমও পায়না। শরীরে আলাদাই এনার্জি থাকে সারারাত জেগে প্রতিমা এবং প্যান্ডেল দর্শন করার। কিন্তু সাধারণ কোন দিনে আমাদের যদি রাত জেগে থাকতে হয় তাহলে আমাদের কেমন মনে হয় যে খুব ঘুম পাচ্ছে ক্লান্তিও লাগছে আবার খুব অস্বস্তি ও বোধ হয়। আসলে যে কোন পুজোর সময় আমাদের যে আনন্দ হয় বা একটা আবেগ কাজ করে সেই জন্যই আমরা রাত জেগে থাকতে পারি। আর আমাদের এই পুজোর সময় রাতটা যেন দিনে পরিণত হয় আর দিন রাতে পরিণত হয়। কারণ সারা রাত জেগে প্যান্ডেল এবং প্রতিমা দর্শন করার পর দিনের বেলায় আমাদের ক্লান্তি আসে এবং প্রচুর ঘুম পায়। তাই দিনের বেলা আমরা ঘুমিয়ে কাটাই এবং রাত দ্বিগুণ উদ্যমের সঙ্গে প্যান্ডেল দর্শন করে পার হয়ে যায়। তেমনি আমাদের এখনো এনার্জি হাই লেভেলে রয়েছে। তাই আমরা হেঁটে হেঁটে যাচ্ছি পরবর্তী প্যান্ডেলের দিকে। হাঁটতে হাঁটতে চলেও এলাম একটি প্যান্ডেলের সামনে এটি একটু ছোট করে করা হয়েছে।



তবে বারাসাতের ছোট প্যান্ডেল গুলো অনেক সুন্দর দেখতে হয়। এই প্যান্ডেলটি দেখে আমার মনে হচ্ছে এটা সত্যিই কোন মন্দির। সাদা এবং সোনালী রঙের প্যান্ডেলটিতে চোখে লাগার মত কারুকার্য করেছেন শিল্পীরা। সিঁড়ি বেয়ে উঠে সামনের বারান্দাতে তিনটি ঝুমুর লাগানো রয়েছে যেটা দেখতে খুব সুন্দর লাগছিল। কিন্তু ঢোকার মুখে গেটের ওপর এবং দুপাশ দেখে আমি তো পুরো অবাক হয়ে গেলাম। কারণ এই কারুকার্য পুরোই মনে হচ্ছে টিন দিয়ে করা হয়েছে। ছোট বড় অনেক ফুলের কারুকার্য করা হয়েছে এই টিন দিয়ে। প্যান্ডেলের ভেতরে ঢুকে প্যান্ডেলটি আরো বেশি সুন্দর এবং আকর্ষণীয় লাগছিল। বিভিন্ন ধরনের রঙের আলো এখানে ব্যবহার করা হয়েছে। চারিদিকে শিব ঠাকুরের মূর্তি দেখা যাচ্ছে। এখানে কোন মূর্তিতে দেখা যাচ্ছে যে শিব ঠাকুর নৃত্য করছে। আবার শিব ঠাকুর যুদ্ধ করছে, কোথাও আবার ত্রিশূল হাতে দাঁড়িয়ে আছেন এমন সুন্দর সুন্দর শিব ঠাকুরের মূর্তি চারপাশে দেখা যাচ্ছে।



এবং শিব ঠাকুরের মূর্তির চারপাশে ঠাকুরের বিভিন্ন চিহ্ন রয়েছে যেমন স্বস্তিক চিহ্ন, ত্রিশূল, ওঁ এছাড়াও বিভিন্ন ফুল এবং পাতা ইত্যাদি। এইসব কারুকার্যের উপরে আবার দেখা যাচ্ছে একটু ছোট বাঙ্কারের মত। এই বাঙ্কারের শেষ সীমানায় আবার লাল কাপড় কুচি করে ঝোলানো আছে এই বাঙ্কারএ হেলান দিয়ে ওপরে উঠে গেছে কিছু মই দেখতে বেশ ভালই লাগছে। এই কারুকার্যগুলো খুবই নতুনত্ব করেছে এর আগে আমি কোথাও এমন দেখিনি। উপরে আবার সূর্য দেবতা দেখা যাচ্ছে তার পাশে আবার ফুল। খুবই কালারফুল করেছে এ প্যান্ডেলের ভেতরের অংশটি। বাইরে থেকে দেখলে বোঝাই যাচ্ছিল না যে ভেতরে এত সুন্দর কারুকার্য করা হয়েছে। ছাদের দিকে তাকিয়ে দেখতে পেলাম এখানে আরো নতুনত্ব করে ছাদটিকে সাজানো হয়েছে। বড় বেতের ঝুড়ির মধ্যে ছোট ঝুড়ি, উল্টো করে রেখে সে বড় ঝুড়ির মুখের কাছে আবার লাল কাপড় কুচি করে দেওয়া হয়েছে। এবং এই বড় ঝুড়ি এবং ছোট ঝুড়ির মাঝখানের যে অংশটা তাতে একটি লাইট লাগানো হয়েছে।



আর মাঝখানে যে ঝুড়িটা রাখা সেটা সম্পূর্ণ উল্টো করেই রাখা আছে এবং তার চারপাশে আরও ছোট ছোট কিছু ঝুড়ি উল্টো করে রেখে তাতে লাইটিং করা হয়েছে। এবং এখানেও সুন্দর করে লাল কাপড় দিয়ে কুচি করে কারুকার্য করা হয়েছে। সাধারণের মধ্যে অসাধারণ লেগেছে আমার এই ছাদের কারুকার্য। একটু সামনে এগিয়ে কালী মায়ের প্রতিমা দর্শন করলাম। এখানে খুব বেশি আধুনিক করা হয়নি কালী মায়ের প্রতিমা। কিন্তু মায়ের প্রতিমা দেখতে খুবই সুন্দর লাগছিল। আমরা মায়ের প্রতিমা দর্শন করে মাকে প্রণাম জানিয়ে বেরিয়ে এলাম। রাস্তার দিকে এগোতেই দেখতে পেলাম কয়েকটি পিঠের দোকান বসেছে। আর আমি ঠাকুর দেখতে বেরোলে এই সময় পিঠে দোকানের দেখা পাই। তাই পিঠে খাওয়ার এই সুযোগ কোনোভাবেই মিস করতে চাই না। সুতরাং চলে গেলাম পিঠের দোকানে পিঠে খেতে। আমি ভাপা পিঠে খেতেই বেশি পছন্দ করি তাই ভাপা পিঠে নিয়ে নিলাম। মোটামুটি খেতে ভালই ছিল কিন্তু একটু ঠান্ডা হয়ে গেছিল তাই তাড়াতাড়ি খেয়ে নিয়ে এগিয়ে গেলাম অন্য একটি প্যান্ডেল দেখার উদ্দেশ্যে।


ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm



আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।