সমস্ত ভারতবাসী এবং বাংলাদেশের বাঙালি সহযাত্রীদের আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
আশা করি আপনারা ঈশ্বরের কৃপায় সুস্থ আছেন, সব দিক থেকে ভালোও আছেন। আপনাদের সবার ভালো থাকা কামনা করে শুরু করছি আজকের ব্লগ।
এক একটা দিন খুব অলস ভাবে কেটে যায়। আজও সে রকমই একটা দিন। বাড়ি ভর্তি কাজ অথচ সকাল থেকে কোন কাজ করতেই মন হলো না। চুপ করে এক জায়গায় বসে কাটিয়ে দিলাম সারাদিন। সকালেই ভেবেছিলাম একটা কিছু এঁকে আর্ট পোস্ট করি। কিন্তু সেই আঁকা আঁকতে বিকেল গড়িয়ে গেল। বুধবার দিনটা চেষ্টা করি তাড়াতাড়ি করে পোস্ট করে দেওয়ার। কিন্তু কখনো কখনো কাজের চাপে হয় না কখনো আবার ভুলে যাই।
আসলে আমি মানুষটাই এরকম, সংসারের নিয়মে জীবনের নিয়মে সহজ সরল ভাবে চলব এমনটা মনে হয় আমার জন্য তোলা নেই৷ দেখুন না বসে বসে সময় কাটালাম আর স্নানে গেলাম বিকেল চারটের সময়। কোন মানে হয় এই অনিয়মের? কিন্তু তাও একেক দিন হয়ে যায়।
তাও বসে বসে একটা ছবি এঁকেছি। আমি আকরাম কে জানে, যেমন মনে হলো তেমনটি একে ফেললাম। ছবি যখন একেই ফেললাম তাই ভাবলাম আপনাদের জন্য পোস্টও করে ফেলি।
তাহলে আর দেরি না করে চলুন দেখে নেই কি কি লেগেছে।
আসুন ধাপে ধাপে দেখে নিই কিভাবে এঁকেছি।
প্রথমে স্কেচবুকের উপর পেন্সিল দিয়ে একটি মেয়ের অবয়ব আঁকতে চেষ্টা করলাম।
চুল সমেত মেয়েটির মুখমণ্ডল এঁকে নিলাম।
মেয়েটির মুখের পর গলা থেকে নিচ পর্যন্ত একটা পোশাক আঁকলাম।
চুলটা কেউ পরিমাণ মতো অ্যাডজাস্ট করে নিলাম।
মেয়েটিকে কেন্দ্র করে চারপাশে একটি আর্চ এঁকে নিলাম।
আর্চের ভেতর চৌকো চৌকো বক্স বানালাম পেন্সিল দিয়ে।
এবার বেশ কয়েকটা পদ্মফুল এদিক ওদিক করে এঁকে নিলাম।
চৌকো বক্সের যে দাগগুলো পদ্ম ফুলের মধ্যে এসেছিল সেগুলো কি মুছে নিলাম।
এবার রং করতে শুরু করেছি।
ওপর থেকে পদ্মফুলগুলো একে একে হালকা গোলাপি এবং ডিপ গোলাপি রং এর ব্রাস পেন দিয়ে এঁকে নিলাম।
একটা একটা করতে করতে এক সময় সবগুলোই করা হয়ে গেল।
প্রতিটা ফুলের নিচে ডিপ সবুজ রং দিলাম।
এবং কাণ্ডগুলো হালকা সবুজ রং দিয়ে দিলাম। এভাবেই ফুলগুলো রং করা হয়ে গেল।
এইভাবে আমি স্টেডলার রং পেন্সিল দিয়ে পুরো চুলটা সেড করে নিয়েছি।
মুখের এবং গলায় রং দিয়েছি স্কিন কালার দিয়ে।
কালো এবং লাল রং দিয়ে চোখের এবং ঠোঁটের রংটা করে নিয়েছি।
এই ধাপটা একটু এলোমেলো ভাবে হয়েছে, খানিকটা চুল সেডিং করার পর মুখের কাজটা করে আবার চুলটা সেডিং করেছি। আসলে আমার ভাইঝি ভিডিও কল করে আমার সাথে গল্প করছিল, তাকে বললাম আমি ছবি আঁকছি, সে দেখতে চাইলো। শুধু দেখা তো নয় পাঁচ বছরের ওই খুদে মানুষটির ইনস্ট্রাকশনে আমাকে করতে হয়েছে। সবার আগে ও আমাকে মুখ আর চোখ করেই ছাড়বে। আর চুলটা ব্রাউন রং করেছি দেখে বারবার বলছে "তুই কালো করিস নি কেন। ওই মেয়েটা কি তেল মাখে না মাথায় যে ওর চুল কালো নয়!" হা হা হা। সদ্যই কয়েক মাস এমন সড়গড় কথা বলছে৷ অনেক দেরীতে বললেও আজকাল এমন কথা বলে আমাকেই চুপ করিয়ে দেয়।
এবার কালোজেল পেন দিয়ে প্রথমে আর্চটা কালো করে নিলাম।
একটু ডিপ করব ভেবে কালো ব্রাশ পেন দিয়ে আউটারলাইনে নিলাম।
ভেতরের বক্সগুলো জেল পেন দিয়ে টানলাম।
ফাঁকা অংশটা কিভাবে ভরবো চিন্তা করে করে আড়াআড়ি লাইন টানলাম।
প্রথমে ভেবেছিলাম দাবার বোর্ডের ছকের মত বানাবো। কিন্তু দেখলাম লাইন টানতেই বেশি ভালো লাগছে। তাই আর এগোলাম না।
এরপর কালো জেল পেন দিয়ে ফুল কান্ড এবং মেয়েটির আউটার লাইন টেনে নিলাম। এতে করে ছবিটি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠলো।
সাথে ঠোঁট ও চোখও এঁকে নিলাম আরেক বার।
একদম শেষে গিয়ে নিজের সই করে নিলাম। ব্যাস রেডি হল আমার আজকের আর্ট।
বন্ধুরা, আপনাদের কেমন লাগল আমার আজকের নিবেদন? আমার প্রচেষ্টা কি আপনাদের মনে জায়গা করতে পারল? কি জানি, কমেন্ট করে জানালে অবশ্যই জানব৷
আজকের ব্লগ এখানেই শেষ করছি। আপনারা সবাই খুব ভালো থাকবেন।
টা টা
পোস্টের ধরণ | আর্ট পোস্ট |
---|---|
ছবিওয়ালা | নীলম সামন্ত |
মাধ্যম | আইফোন ১৪ |
লোকেশন | পুণে,মহারাষ্ট্র |
আমি নীলম সামন্ত। বেশ কিছু বছর কবিতা যাপনের পর মুক্তগদ্য, মুক্তপদ্য, পত্রসাহিত্য ইত্যাদিতে মনোনিবেশ করেছি৷ বর্তমানে 'কবিতার আলো' নামক ট্যাবলয়েডের ব্লগজিন ও প্রিন্টেড উভয় জায়গাতেই সহসম্পাদনার কাজে নিজের শাখা-প্রশাখা মেলে ধরেছি। কিছু গবেষণাধর্মী প্রবন্ধেরও কাজ করছি। পশ্চিমবঙ্গের নানান লিটিল ম্যাগাজিনে লিখে কবিতা জীবন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি৷ ভারতবর্ষের পুনে-তে থাকি৷ যেখানে বাংলার কোন ছোঁয়াই নেই৷ তাও মনে প্রাণে বাংলাকে ধরে আনন্দেই বাঁচি৷ আমার প্রকাশিত একক কাব্যগ্রন্থ হল মোমবাতির কার্ণিশ ও ইক্যুয়াল টু অ্যাপল আর প্রকাশিতব্য গদ্য সিরিজ জোনাক সভ্যতা।
আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সব্বাইকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন৷ ভালো থাকুন বন্ধুরা। সৃষ্টিতে থাকুন।